লাভপুর: সহপাঠীরা কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ আবার পুলিশ অফিসার। কিন্তু লাভপুরের তৃতীয় শ্রেণির ছোট্ট রিক বোকা হতে চায়। কারণ, সে কাউকে ঠকাতে চায় না। তাই বড় হয়ে বোকা হতে চায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় রিকের এই ভিডিও সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যদিও ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি কলকাতা টিভি ডিজিটাল।
কথা সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভিটেমাটি বীরভূমের লাভপুরের শীতল গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র রিক বাগদি। শীতল গ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেট মাধ্যমে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রিকের সহপাঠীরা প্রশ্নের উত্তরে বলছে, আমি ডাক্তার হতে চাই, কেউ আবার বলছে ইঞ্জিনিয়ার, আবার কেউ বলছে পুলিশ অফিসার হতে চাই। কিন্তু ছোট্ট রিককে প্রশ্ন করা হলে সে বলে, আমি বোকা হতে চাই। এই প্রশ্নের উত্তর শুনতে হতভম্ব শিক্ষক। বোকা হতে চাও কেন? কারণ সে সমাজের কাউকে ঠকাতে চায় না। তাই রিক বোকা হতে চায়।
আরও পড়ুন: মহুয়াকে পাশে নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মমতার
রবিবার সকাল হতেই লাভপুরের শীতল গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল কলকাতা টিভি। ছোট্ট রিককে প্রশ্ন করা হয় তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও? সে আবার কলকাতা টিভির ক্যামেরার সামনে বলে, আমি বড় হয়ে বোকা হতে চাই। কারণ আমার বাবা আমাকে শিখিয়েছেন, জীবনে কোনওদিন কাউকে যেন না ঠকাতে। বাবা বহুবার ঠকেছে। কিন্তু কাউকে ঠকায়নি। তাই সে বড় হয়ে বাবার মত বোকা হতে চায়।
রিকের মাস্টারমশাই এই কথা শুনে খুব অবাক হয়েছেন। পড়াশুনা করার পর সকলেই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। অথচ রিক বোকা হতে চায়। তখন উপলব্ধি করতে পারলাম প্রতিটা সন্তানেরই বাবা হচ্ছে আইকন, হিরো। বাবা কাউকে কোনওদিন ঠকায়নি। নিজে বহুবার ঠকেছেন। তাই রিক বাবার মত হতে চায়। সমাজে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বড় অফিসার হওয়ার আগে প্রকৃত মানুষ হওয়া প্রয়োজন।
রিকের মা সুমিন্দা বাগদি। তাঁর স্বামীর মতোই রিক আদর্শ সৎ মানুষ হয়ে উঠুক বড় হয়ে এমনটাই তিনি চান।
শীতল গ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক রিকের এই ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছে। অভিভাবকরা জানাচ্ছেন, সত্যিই তো। সমাজে প্রকৃত মানুষ হওয়া সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। কর্ম যার যা লেখা আছে সেটা তো হবেই।