Sunday, June 8, 2025
HomeখেলাQatar World Cup: কাতার জুড়ে অ্যাটলাস সিংহের গর্জন

Qatar World Cup: কাতার জুড়ে অ্যাটলাস সিংহের গর্জন

Follow Us :

কাতার (Qatar) জুড়ে এবার শুধু সিংহ গর্জন। এই সিংহ-এর নাম  ‘অ্যাটলাস সিংহ’। ঠিকই ধরেছেন, এটাই মরক্কোর জাতীয় ফুটবল দলের ডাকনাম। অন্যদিকে, গ্রিক পুরাণ অনুযায়ী টাইটান যুদ্ধের পর শাস্তিস্বরূপ যাঁকে স্বর্গের ভার নিজের কাঁধে নিতে হয়েছিল, তিনিই অ্যাটলাস। আর বর্তমানে মরক্কো (Morocco) দেশটাকে একেবারে লম্বালম্বি দুভাগে ভাগ করে দিয়েছে যে পর্বত, সেও ওই অ্যাটলাসই। এই অঞ্চলে সি়ংহ এককালে পাওয়া যেত বটে তবে তাদের ডাক থেমে গেছে বেশ কয়েক দশক আগে। একই ভাবে বিশ্বকাপের আঙিনায় এর আগেও অ্যাটলাস সিংহরা পা রাখলেও তাদের গর্জন সে-ভাবে  শোনা যায়নি । ১৯৮৬ -তে প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠাটাই ছিল এতদিনের সবথেকে বড়ো সাফল্য। 

কিন্তু কাতারের মাঠে, বিশ্বকাপের আঙিনায় এমন এক গর্জন দিলো অ্যাটলাস সিংহরা, আমাদের তড়িঘড়ি প্রয়োজন পড়ে গেল তাদের নিয়ে জানা, পড়া, লেখার…

অবশ্য চোখে চোখ রেখে কথা বলার অভ্যেসটা ধীরে ধীরে সহজাত প্রবৃত্তির মধ্যেই নিয়ে আসছিল মরক্কোর এই টিমটা। ভারতের মাঠে একটি টুর্নামেন্ট খেলে যাওয়া এবং স্পেনের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে জয় এনে নায়ক হয়ে যাওয়া গোলকিপার ইয়াসিন বোনোর কথাই ধরা যাক। কানাডায় জন্ম। দীর্ঘদিন খেলছেন স্পেনে। ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ বলতে পারেন অনর্গল কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনে মাতৃভাষা আরবি ছাড়া কথা বলবেন না তিনি। ঔদ্ধত্য? নাকি স্পর্ধা? স্পর্ধা ছাড়া ইতিহাস রচনা সম্ভব নয় যে। আর সেটাই করতে কাতার এসেছে মরক্কোর ফুটবলাররা। ইতিহাসের পাতা উল্টোদিকে ঘুরিয়ে ইউরোপ আমেরিকার বাঘা বাঘা জাতীয় দলের অফারকে নস্যাৎ করে নিজের পূর্বপুরুষের ঐতিহ্যের টানে মরক্কোয় খেলতে ফিরে যাওয়ার মধ্যেও যেন লুকিয়ে আছে সেই স্পর্ধাই।

 ফ্রান্স যখন গতবার বিশ্বকাপ জিতেছিল কেউ জানতে চেয়েছিল এমবাপে, পোগবা, দেমবেলেদের কোন দেশে অরিজিন। বোধহয় না। অথচ গতবারে বিশ বছর পর আবার বিশ্বকাপের মূলপর্বে ফিরে আসতেই মরোক্কোকে নিয়ে খোঁচা দিতে ভোলেনি ইউরোপিয়ান মিডিয়া। ‘ভাড়াটে সৈন্য’ বলে রসিকতা করেছে। বারবার মনে করিয়ে দিয়েছে অধিকাংশ মরক্কোর খেলোয়াড়দের জন্ম ইউরোপে। এবারেও তাই। ঘোষণাটা পরিষ্কার— তোমাদের থাকতে দিয়েছি এটা যেমন আমাদের মহানুভবতা, তেমনই তোমাদের ওপরে উঠতে গেলে আমাদের হাতটাই ধরতে হবে, না হলে পারবে না। হ্যাঁ, ঠিক এই কথাটাই সেবার বলেছিলেন মার্কো ভ্যান বাস্তেন। নেদারল্যান্ডে জন্মানো হাকিম জিয়েখ যখন মরক্কো জাতীয় দলে খেলার সিদ্ধান্ত নিলেন, গুলিত, রাইকার্ডের সঙ্গী বলেছিলেন— ‘পাগল নাকি! নেদারল্যান্ডে খেলার সুযোগ ছেড়ে মরক্কো যাবে!’ জবাবটা তাই দিতেই হতো হাকিম, রোমাঁ সাইস, হাকিমিদের।
এবং পালেস্তাইন। কেন মরক্কানদের হাতে প্যালেস্টাইনের জাতীয় পতাকা! কী সম্পর্ক দু’দেশের? কেন ‘আরব বিশ্ব’ এক সুতোয় বেঁধে দেয় আফ্রিকা এশিয়ার ১৮-২০ টা দেশকে? সে কথা জানতে তো ইতিহাস ঘাটতে হবে অনেক পেছনের। অ্যাটলাস পর্বতের ওধারে লাল সিংহের গর্জন কীভাবে ‘অন্ধকার মহাদেশ’ ( ইউরোপের দেওয়া নাম) পেরিয়ে এশিয়ার ভূখন্ডকে উদ্বেল করে দিতে পারে, সেই সঙ্গে জুড়ে নিতে পারে সারা বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রের দ্বারা অত্যাচারিত নিপীড়িত মানুষকে, সেটা লিখতে খরচ করতে হতে পারে পাতার পর পাতা। মরক্কো জবাবটা দিয়েছে অনেককে অনেকরকম ভাবে, আর সেটাও যাকে বলে একেবারে মোক্ষম জবাব। আর আফ্রিকা আর আরব বিশ্বের ফুটবল মানচিত্রে অভ্যুদয়, এটা মরক্কোর মতো দেশ থেকে হল, সৌদি আরবের মতো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের হাত ধরে নয়— এটাও অত্যন্ত তৃপ্তিদায়ক। সে যতই মরক্কোর নিজস্ব রাজনীতি সকলের জন্য সুখকর না হতে পারে।  

 মাস কয়েক আগে তেল আভিভে খেলতে গিয়েছিল পিএসজি ক্লাব। কিন্তু এমবাপে মেসিদের সাথী নির্ভরযোগ্য ব্যাক আশরাফ হাকিমি নেমেছিলেন শেষবেলায়। মাঠের বাইরে থেকে ভেসে আসা ভয়ঙ্কর বিদ্রুপের শিকার হওয়ার ভয় তাঁকে না নামানোর কারণ কিনা সেটা অবশ্য স্বীকার করেননি কোচ। কিন্তু বিশ্বকাপের মঞ্চে ফিলিস্তিনি পতাকার আগমন কি স্বস্তি দেবে ন্যাটো-ইসরায়েলকে! ফিফা বলছে বটে ফুটবলে কয়েকটা দেশের আধিপত্য কমলেই তারা খুশি তবু বিশ্বকাপের আঙিনায় ‘মুর’দের এই দাদাগিরি তাও আবার পরপর বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগালের মতো দেশকে শুইয়ে দিয়ে— এ জিনিস ইউরোপের ভালো লাগবে না একেবারেই।

 তবু আশরাফ হাকিমি ট্যুইট করবেন ‘ফ্রি পালেস্ট্যাইন’ বলে, ঐতিহাসিক জয়ের পর এক হয়ে যাবে রাবাত থেকে দামাস্কাস হয়ে বাগদাদ। সোফিয়ান‌ বাউফল নাচবে তার জীবনের সেরা নাচটা মায়ের সাথে আর নেদারল্যান্ড জন্মানো আরেক ফুটবলার সোফিয়ান‌ আমরাবাতে বলবে— ‘এটা আমার বাবা-মায়ের দেশ, এটা আমার দাদু-ঠাকুরদারও দেশ। এটাই আমার বাড়ি। নেদারল্যান্ডও আমার বাড়ি কিন্তু মরক্কোর জন্য আবেগটাই অন্যরকম।’ আমাদের আবেগটাও তাই এবার অন্যরকমই। সেমিফাইনালে দাঁড়িয়ে বাকি তিনটে দেশ— আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া। ধারে ভারে কোনো অংশেই মরক্কো তাদের সমকক্ষ নয়। নেই মেসি এমবাপে মদ্রিচের মতো এই প্রজন্মের শ্রেষ্ঠ কোনো তারকাও। যা আছে সেটা একমাত্র লড়াই, দাঁতে দাঁত চেপে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তীব্র লড়াই, এক ইঞ্চি জমিও না ছাড়ার লড়াই। তাই ফ্রান্স জিতবে এটা ধরে নিয়েও চিরকালীন ডেভিড ভার্সেস গোলিয়াথের লড়াইয়ে কোথাও যেন আরেকবার অ্যাটলাস সিংহের গর্জনের আশায় বুক বাঁধছি আমরাও।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Nitish Kumar | BJP | বিজেপি-নীতীশ জোট আদৌ টিকবে? আসন রফাতেই শুরু প্রবল ঝা/মেলা, দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | শাহজাহানের ফাঁ/সি চাই, সন্দেশখালিতে বিরাট দাবি শুভেন্দুর
00:00
Video thumbnail
Mahua Moitra | বিয়ের পর কী করছেন মুহুয়া? দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Narendra Modi | Nitish Kumar | বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নীতীশই? মোদির গেম প্ল্যান কী?
00:00
Video thumbnail
Weather Update | বর্ষা কবে আসছে? বিরাট আপডেট আবহাওয়া দফতরের
00:00
Video thumbnail
Nitish Kumar | BJP | বিজেপি-নীতীশ জোট আদৌ টিকবে? আসন রফাতেই শুরু প্রবল ঝা/মেলা, দেখুন এই ভিডিও
06:12
Video thumbnail
Birbhum | TMC | বীরভূমে শুরু ২১শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি?
02:30:08
Video thumbnail
Mahua Moitra | বিয়ের পর কী করছেন মুহুয়া? দেখুন এই ভিডিও
01:42
Video thumbnail
Child Asthma | কী কী কারণে শিশুদের মধ্যে হাঁফানি দেখা যায়?
00:38
Video thumbnail
Child Asthma | কী কী নিয়ম পালনে হাঁফানি থেকে শিশুদের রক্ষা করা যাবে
01:34