আমতা: আনিস-কাণ্ডে (Anis Khan Death) এবার পথে নামছে তৃণমূল। সোমবার শাসকদল (TMC) মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছে। আনিস মৃত্যুরহস্যের কিনারা করতে সিট (SIT) গঠন করায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর জন্যই পথে নামার কর্মসূচি নিয়েছে শাসকদল।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে আমতায় দক্ষিণ সারদা খান পাড়ায় রহস্যমৃত্যু হয় ছাত্রনেতা আনিস খানের। পরিবারের অভিযোগ, পুলিস ও সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাক পরা চারজন ওই রাতে আনিসের বাড়িতে আসে। বন্দুক হাতে একজন আনিসের বাবা সালেম খানকে একটি ঘরে আটকে রাখে। বাকি তিনজন ছাদে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আনিসের মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনা ঘিরে পরের দিন থেকেই প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী তদন্তের জন্য সিট গঠন করেছেন। আমতা থানার দুই পুলিসকর্মী গ্রেফতারও হয়েছেন। তাতেও প্রতিবাদ থামেনি। বিরোধীরা আনিসের মৃত্যু রহস্যের সঠিক তদন্তের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রোজই কোথাও না কোথাও পুলিসের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি মারামারি হচ্ছে। বামপন্থী ছাত্র যুব সংগঠনগুলি আন্দোলনের পুরোভাগে রয়েছে।
আরও পড়ুন: WB Municipal Election 2022: পাহাড়ে ভোট শান্তিতেই, অনুকূল আবহাওয়ায় উৎসবের মেজাজ
কলকাতা হাইকোর্ট আনিসের পরিবারকে তদন্তে সিটের সঙ্গে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছে। পুলিসের দাবি, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পরিবার সিটকে সহযোগিতা করছে না। শনিবার ভোরে সিটের সদস্যরা একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে সঙ্গে নিয়ে কবরখানা থেকে আনিসের দেহ তুলতে যান দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য। কিন্তু গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিস পালিয়ে আসে। আনিসের বাবা সালেম খানের অভিযোগ, পুলিস রাতের অন্ধকারে মৃতদেহ চুরি করতে এসেছে। ওইদিনই পাঁচলার পানিয়াড়ায় হাওড়ার গ্রামীণ পুলিস সুপারের অফিসের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই ও ডিওয়াইএফ। পুলিসের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ চলে বাম ছাত্র-যুবদের। দু’পক্ষেরই বেশ কয়েকজন জখম হন।
কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিরোধীদের এইসব অবরোধ বিক্ষোভকে তিনি ভালো চোখে দেখছেন না। রাজনৈতিক মহলের মতে, আনিস-কাণ্ডকে সামনে রেখে বাম, কংগ্রেস প্রতিবাদী আন্দোলনকে অনেকটা কবজা করে ফেলেছে। শাসকদল এই আন্দোলনকে ধ্বংসাত্মক বলে কটাক্ষ করেছে। তৃণমূলের অন্দরের খবর, এই অবস্থায় দলনেত্রীর নির্দেশেই বিরোধীদের আন্দোলনের জবাব দিতে পাল্টা পথে নামছে শাসকদল। ওই মিছিল থেকে অভিযোগ তোলা হবে, বিরোধীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক আন্দোলনে নেমেছে। তার প্রতিবাদে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হবে সোমবারের জমায়েত থেকে।