সুন্দরবন: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। এই তেরো পার্বণের অন্যতম হল মকর সংক্রান্তির দিন পৌষ পার্বণ। আর পৌষ পার্বণ মানেই পিঠে, পুলি উৎসব। পিঠের জন্য নতুন ধান থেকে চাল ভেঙে চালের গুঁড়ো বা গুঁড়ি তৈরি হয়। পিঠে তৈরির মূল উপকরণ হল এই চালের গুঁড়ো। তিনদিন ব্যাপী পৌষ পার্বণে (Makar Sankranti) বিভিন্ন রকম পিঠে তৈরির জন্য প্রায় ১ মাস আগে থেকেই চালের গুঁড়ো মজুদ করা শুরু হয়। আধুনিক এ সময় মেশিনে চালের গুঁড়ো করা খুব সহজে ও কম খরচে হয়।
কিন্তু পিঠের উৎসবে গ্রামবাংলায় একমাত্র ভরসা ঢেঁকি। পিঠে উৎসবকে (Pithe Puli Utsav) কেন্দ্র করে সুন্দরবনের (Sundarban) এক বাড়িতে এই ডিজিটাল যুগে মেশিন ও বিভিন্ন যন্ত্র কে পেছনে ফেলে ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করার হিড়িক লেগেছে। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে গ্ৰামের মানুষের ভরসা ঢেকিতে চাল কুটে পিঠে তৈরি করা। পুরানো ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ যেন রীতিমতো মায়েদের এক অভিনব প্রচেষ্টা। রাত-দিন এক করে ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করতে ব্যস্ত তারা।
আরও পড়ুন: পৌষের সন্ধ্যায় টুসু গান জানান দেয় আসছে মকর পরব
কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি। তবুও সুন্দরবনের এই বাড়িতে বছরের পর বছর পিঠে উৎসবের আগে মা, কাকিমাদের ছোঁয়ায় ঢেঁকি যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। পূর্বপুরুষদের রীতি এভাবেই ধরে রাখছেন তাঁরা। তাঁদের মত ঢেঁকিতে চাল কুটে পিঠের যে স্বাদ তা আর কোথাও পাওয়া যায় না।