বাঁকুড়া: কাশ্মীরে তুষারঝড়ে শহীদ (Martyr) সেনা জওয়ান (Jawan) সৌভিক হাজরার (Souvik Hazra) মৃতদেহ রবিবার রাতে আনা হয় বাঁকুড়ার (Bankura) ওন্দা থানার খামারবেড়িয়া গ্রামে। রাত্রি প্রায় ১০টা নাগাদ তাঁর কফিনবন্দি মৃতদেহ সেনার কাঁধে চড়ে পৌঁছয় তাঁর বাড়িতে। রাতেই সেনা জওয়ানদের গান স্যালুট (Gan Salute) এবং এলাকার হাজার হাজার মানুষের চোখের জলে শেষ বিদায় জানানো হয় শহীদকে।
মাত্র পাঁচ মাস বয়সে মা দীপালি হাজরাকে হারানোর পর থেকে ছোট্ট সৌভিকের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে ওঠে বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের খামারবেড়িয়া গ্রামের মামাবাড়ি। মা-হারা সৌভিক বেড়ে ওঠেন দিদিমা বাসন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোলেপিঠে। ক্রমে ক্রমে দিদিমাই হয়ে ওঠেন সৌভিকের মা। ছোট থেকে মামাবাড়ির আদর ও ভালোবাসায় ছিলেন তিনি। কলেজে পড়তে পড়তে সেনা বাহিনীতে (Indian Army) যোগ দেন সৌভিক। দেশের জন্য লড়াই করা ছিল সৌভিকের স্বপ্ন। ২০১৯ সালে সেই স্বপ্ন সফল করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: Qatar World Cup: দ্বিতীয় দিনে মাঠে নামছে ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, কখন কোন ম্যাচ জেনে নিন
নাসিকে (Nasik) প্রশিক্ষণ সেরে প্রথমে রাজস্থান (Rajasthan) তারপর অসম (Assam) ও বর্তমানে শ্রীনগরে (Srinagar) কর্মরত ছিলেন। পুজোর সময় একমাসের ছুটি কাটিয়ে ভাইফোঁটা নিয়ে নিজের কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান সৌভিক। বৃহস্পতিবার ভিডিও কলে পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন। তারপর শুক্রবার মাচাল সেক্টরে টহল দেওয়ার সময় ভয়ঙ্কর তুষারঝড়ের মুখোমুখি হয়ে গুরুতর জখম হন সৌভিক। তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় কুপওয়ারা সেনা হাসপাতালে। শনিবার পরিবারের লোকেরা খবর পান ওই হাসপাতালেই চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে সৌভিকের। খবর এসে পড়তেই সৌভিকের পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। শোকেরছায়া নামে গোটা খামারবেড়িয়া গ্রামে।
রবিবার সকালে শ্রীনগর থেকে কফিনবন্দি সৌভিকের এসে পৌঁছয় দিল্লিতে, সেখান থেকে বিশেষ বিমানে পানাগড়। তারপর রাত্রিবেলায় দেহ এসে পৌঁছয় তাঁর গ্রামে। দেশমাতৃকার বীর শহীদকে শেষবার চোখের দেখা দেখার জন্য রবিবার সকাল থেকেই খামারবেড়িয়া গ্রামে কার্যত উপচে পড়েছিল গোটা এলাকার মানুষ। রাতে যখন সেনা জওয়ানদের কাঁধে চড়ে সৌভিকের দেহ পৌঁছয় গ্রামে তখন গ্রামজুড়ে শুধু কালো মাথার সারি। রাতেই শহীদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের শ্মশানে। সেখানে সেনা জওয়ানরা গান স্যালুট দেওয়ার পর পূর্ণ মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।