কলকাতা: রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডল হচ্ছে মাঝের মাকড়শা। তাকে ধরেই উপরে উঠতে হবে। তাহলেই এই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের পিছনে থাকা বড় মাথাদের ধরা যাবে। বক্তা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। প্রেক্ষাপট প্রাথমিকে টেট দুর্নীতি।
উপেন বিশ্বাসের কথার পরই বিচারপতি বলেন, তিনি উপেনবাবুর কথায় অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। তাঁর প্রস্তাব মতোই সিবিআই তদন্ত করবে। উপেন বিচারপতিকে আশাহত না হওয়ার পরামর্শ দেন। বিচারপতি বলেন, আজ আমি সুড়ঙ্গের ভিতর আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা থানার মামা ভাগ্নে গ্রামের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল। প্রায় বছর খানেক আগে প্রাক্তন সিবিআই কর্তা ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস একটি ভিডিয়ো বার্তায় দাবি করেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বাগদার রঞ্জন টাকার বিনিময়ে চাকরি দেন, চাকরি না দিতে পারলে সুদ সহ টাকা ফেরত দেন। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে।
সৌমেন নন্দী নামে এক চাকরিপ্রার্থী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলার সৌমেন নন্দির আইনজীবী ফিরদৌস সামিম দাবি করেন ৮৭ জনকে বেআইনিভাবে প্রাথমিক শিক্ষকে নিয়োগ করা হয়েছে। আগামী ১৫ জুনের মধ্যে সিবিআইকে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে বলে কলকাতা হাই কোর্ট।
আরও পড়ুন: TET CBI: হাই কোর্টের নজরদারিতে প্রাথমিকের সিবিআই তদন্ত, শুক্রবারের মধ্যে সিট গঠনের নির্দেশ
এই রঞ্জনই হলেন বাগদার স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং শিক্ষক চন্দন মণ্ডল। উপেনের অভিযোগ, চন্দন বহু যুবক-যুবতীকে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি দিয়েছেন। এক প্রাক্তন সেনাকর্মী বিধায়ক থাকাকালীন উপেন বিশ্বাসকে তাঁর ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেন। তারপর এই প্রাক্তন সিবিআই কর্তা নিজস্ব সোর্স মারফত খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, ওই সেনাকর্মীর বক্তব্য সঠিক। ভিডিয়োতে অবশ্য উপেন বিশ্বাস চন্দনের ইচ্ছা করে উল্লেখ করেননি।
বুধবার আদালতে হাজির হয়েছিলেন উপেন বিশ্বাস। এর আগেই হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় টেট নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। সেদিনই তিনি উপেন বিশ্বাসের সাহায্য চেয়েছিলেন। উপেন তাঁকে সাহায্যের আশ্বাসও দেন। এদিন আদালতে উপেন বলেন, হাইকোর্টের নজরদারিতেই সিট গঠন করে সিবিআই তদন্ত হওয়া দরকার। সিবিআই তদন্তকারীদের নামও আদালতের কাছে জানাতে হবে। সিবিআইয়ের লোকবল নিয়েও আমি সন্তুষ্ট নই। এই অল্প লোক নিয়ে সিবিআইয়ের পক্ষে এত তদন্ত করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আদালত আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।