কালচিনি: অনাহারে মৃত্যু মধু চা বাগানের (Tea Garden) শ্রমিকের (Tea Garden Worker)। ধানী ওঁরাওয়ের অনাহারে মৃত্যু (Death Tea workers Malnutrition) হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিল সারা বাংলা ক্ষেতমজদুর সমিতি (Paschimbanga Khetmajoor Samity)। অভিযোগে সঠিক তদন্তের দাবিতে আইনের দ্বারস্থ হলেন পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি । এ নিয়ে শিলিগুড়িতে তারা সাংবাদিক সম্মেলনও করেন। অন্যদিকে, এই অভিযোগ মানতে নারাজ প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত।
আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের মধু চাবাগানের ধানি ওঁরাওয়ের মৃত্যুর কারণ হিসাবে অপুষ্টিকে তুলে ধরা হয়। ধানির স্ত্রী আশারানি লতাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি। দীর্ঘদিন চা বাগান বন্ধ থাকায় ফলে রোজগার কিছুই ছিল না তাদের। সম্প্রতি ধানী ওঁরাও এর মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক ।শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতির তরফে অভিযোগ করা হয়, ‘গত ২ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘদিন না খেতে পেয়ে মৃত্যু হয়েছে বাগানের শ্রমিক ধানী ওঁরাওয়ের (৫৮)।এছাড়া বর্তমানে তার স্ত্রীও অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমরা এর সঠিক তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি চাই। তবে মধু বাগানের জোড়া লাইন এলাকায় বাঁশের খুঁটি, ত্রিপাল দিয়ে ঘেরা, মাটির মেঝের ঘরে থাকতেন ধানী ও তার স্ত্রী আশারানী ওঁরাও। বাগানের শ্রমিক হওয়া সত্ত্বেও অসুস্থতার জন্য কাজ করতে পারতেন না তিনি।
তবে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক আর বিমলা এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। মধু বাগানের বাসিন্দা তথা সাতালি গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধান ইসদর খারিয়া বলেন, অনাহারে মৃত্যু হয়েছে এটা সঠিক নয়,প্রতিনিয়ত না হলেও আশপাশের মানুষের পাশাপাশি আমরাও খাবার দিতাম। এছাড়া আবাস যোজনার অর্থ মিলছে না বিগত কয়েক বছর ধরে, তাই ধানী ওঁরাওয়ের বাড়ি মেরামত বা নতুন বাড়ি তৈরি করা যায়নি। মঙ্গলবার তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে যায়, এরপর এলাকার বাসিন্দারা এবং আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
এলাকার বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য চামেলি ওঁরাও বলেন, রেশন কার্ডের সাথে আধার লিঙ্ক ছিল না ফলে প্রায় ১ বছর ধরে তিনি রেশন পাচ্ছেন না। আমরা উদ্যোগ নিয়ে সম্প্রতি দু সপ্তাহ আগেই তার আধারকার্ড তৈরি করেছিলাম। তবে অসুস্থতার জন্য তার হাতের ছাপ আসছিল না। এছাড়া চোখের মণি স্কেন করার চেষ্টা করেছি, সেটাও সফল হয়নি। তাই সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী তিনি রেশন পেতেন না।তবে মানবতার খাতিরে সকলেই সাহায্য করতেন।’
এ বিষয়ে মৃত শ্রমিকের স্ত্রী আশা রানী ওঁরাও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই মৃগী রোগ ছিল স্বামীর, সেজন্য বাগানে কাজ থাকা সত্ত্বেও কাজ করতে পারতেন না। আমার আধার কার্ড না থাকায় সরকারি পরিষেবা পেতাম না। গত এক সপ্তাহ থেকে অসুস্থ থাকার পর ২ ফেব্রুয়ারি বাড়িতেই মারা যায় স্বামী। চেয়ে চেয়ে খাবার নিতাম আশপাশের থেকে। আমিও অসুস্থ, এলাকার লোক ভর্তি করেছে হাসপাতালে।