কলকাতা: হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে হনুমান জয়ন্তী (Hanuman Jayanti) উপলক্ষে তিন কোম্পানি প্যারামিলিটারে ফোর্স (Paramilitary Force) মোতায়েন করছে রাজ্য। নবান্ন (Nabanna) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলা হয়েছে, হাইকোর্ট (High Court) যা বলে দিয়েছে, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। উত্তর চব্বিশ পরগনার ব্যারাকপুর (Barrackpore), হুগলির চন্দননগর (Chandannagar) এবং কলকাতা (Kolkata), এই তিন জায়গায় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের (Deploy) সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) হনুমান জয়ন্তী রয়েছে। দেশের অন্যান্য প্রান্তের মতো এরাজ্যেও তা পালন করা হবে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) নির্দেশ দিয়েছে, হনুমান জয়ন্তীর দিন রাজ্যের কোথাও যেন কোনও রকম অশান্তির ঘটনা না ঘটে, তা রাজ্যকেই নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজন কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) কাছে এজন্য প্যারামিলিটারি ফোর্সও চাইতে পারে রাজ্য। আদালতে নির্দেশ মেনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee, Chief Minister of West Bengal) নেতৃত্বাধীন রাজ্যের তৃণমূল সরকার (TMC Government) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সূত্রের খবর, তিনটি স্থানেই এক কোম্পানি করে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
আরও পড়ুন: Kunal Ghosh | Shatarup Ghosh | শতরূপের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা কুণালের
নবান্ন সূত্রে খবর, হনুমান জয়ন্তীর দিন রাজ্যে যাতে কোনও রকম অশান্তির ঘটনা ঘটে, সেজন্য মুখ্যসচিব (Chief Secretary) নবান্নে পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশানদের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন এদিন। ওই বৈঠকে মুখ্যসচিব পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, প্রশাসনিক আধিকারিকদের হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে চলতে হবে। হনুমান জয়ন্তীতে কোথাও যদি কোনও মিছিল হয়, তাহলে তা অবশ্যই ভিডিয়োগ্রাফি (Videography) করতে হবে। মেনে চলতে হবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের ৫ ও ৬ নম্বর প্যারাগ্রাফ। পাশাপাশি, মিছিলে আসা প্রত্যেক ব্যক্তির আইডি কার্ড (ID Card) চেক করতে হবে। মিছিলে ১০০ জনের বেশি ব্যক্তিকে থাকার অনুমতি দেওয়া যাবে না এবং স্পর্শকাতর এলাতাকে ১৪৪ ধারা লাগু করতে হবে।
কিছুদিন আগেই রাম নবমীর দিনে রাজ্যে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বের রাজ্য তৎপরতার সঙ্গেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। হাইকোর্ট আজ নির্দেশ দিয়েছে, হনুমান জয়ন্তীর দিন বৃহস্পতিবার কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও নেতা বা নেত্রী কোথাও কোনও রকমভাবে ভাষণ দিতে পারবেন না বা বক্তব্য রাখতে পারবেন না। কেন্দ্রের কাছে রাজ্য আধাসামরিক বাহিনী চেয়ে পাঠাবে। আর কেন্দ্র তাতে সাহায্য করবে। এরপর, রাজ্যসরকার (State Government) যেখানে যেখানে দরকার, সেখানে সেখানে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করবে। আদলতের নির্দেশ ছিল, আজ বিকেল থেকেই বাহিনীকে রুটমার্চ (Rout march) করাতে হবে। রাজ্যের মানুষের মনে ভীতি থাকলে, তার উদ্যোগ রাজ্যসরকারকেই নিতে হবে। আদালতেই নির্দেশ মেনেই রাজ্যসরকার তিন জায়গায় প্যারামিলিটারি ফোর্স মোতায়েন করছে।
সূত্রের খবর, হাওড়ার শিবপুর ও হুগলির রিষড়াতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হয়েছে। এদিন সল্টলেকে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar, President of Bharatiya Janata Party, West Bengal)। তিনি এপ্রসঙ্গে বলেছেন, “রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করতে চাইছিল না। আমরা প্রথম থেকেই দাবি জানিয়ে এসেছিলাম এবং মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি অনুরোধ করেছিলাম, রাজ্যসরকার যদি রাজি না হয়, তাহলে এরকম কোনও কেন্দ্রীয় আইন বা ব্যবধান আছে কিনা, যার মাধ্যমে রাজ্য সরকারের অনিচ্ছা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার কিছুদিনের জন্য চাইলে কেন্দ্রীয় বাহিনী যাতে নিয়োগ করতে পারে। আজকে সৌভাগ্যবশত কোর্টের রায় সেটাই এসেছে।” তিনি আরও বলেছেন, “মহামান্য আদালতের এই রায়কে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। হাওড়ার মানুষ চেয়েছিলেন, হাওড়ার মানুষের দাবি পূরণ হয়েছে, রিষড়ার মানুষের দাবি পূরণ হয়েছে।”