কলকাতা: অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে নিজেকে কিছুটা দূরে রেখেছেন বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য মুকুল রায় (Mukul Roy)। তাঁর দাবি, তিনি এখন আগের থেকে সুস্থ। তাই আবার সক্রিয় রাজনীতির বৃত্তে ফিরতে চাইছেন তিনি। এরই মধ্যে হঠাৎ করে পরিবারের কাউকে না জানিয়েই তাঁর দিল্লি চলে যাওয়া নিয়ে জল্পনা বাড়ছিল। দিল্লির বিমানবন্দরের এক ভিডিয়ো সামনে এসেছে, তাতে মুকুলকে বলতে শোনা যাচ্ছে, তিনি নাকি দিল্লির (Delhi) বিধায়ক-সাংসদ। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা শোনা গিয়েছে মুকুল রায়ের (Mukul Roy) মুখে। এর পর মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু বাবার শারীরিক পরস্থিতির কথা সবার সামনে তুলে ধরেন।
সম্প্রতি, বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে বেশ কিছুদিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে ভর্তি ছিলেন মুকুল রায়। মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। এবার প্রকাশ্যে এল মুকুলের মেডিক্যাল রির্পোট (Medical report)। তাতে বলা হয়েছে, অস্ত্রোপচারের পর স্মৃতিভ্রংশ ঘটেছে তাঁর। কথার মধ্যে অসংলগ্নতা দেখা দিয়েছে। মুকুলের রির্পোট বলছে, নরমাল প্রেসার হাইড্রোসেফালাসে (Normal Pressure Hydrocephalus)-আক্রান্ত মুকুল রায়। এই রোগের ফলে স্মৃতিভংশ ঘটে, কথার মধ্যে অসংলগ্নতা দেখা দেখ। অনেক সময় মানুষ মাথা ঘুরে পড়ে যায়। প্রস্বাবে স্বাভাবিক অনুভূতিও লোপ পায়।
আরও পড়ুন:Kaliaganj Agitation | কালিয়াগঞ্জ উত্তাল বিক্ষোভে, ভাঙচুর, আগুন
শুভ্রাংশু জানিয়েছেন, তাঁর বাবার শারীরিক অসুস্থতার কারণেই এমন অসংলগ্ন কথাবার্তা। ইনসুলিনও নিতে হয়, এছাড়াও ১৮টি ওযুধ খেতে হয় সারা দিনে। শুভ্রাংশু এও দাবি করেন, তাঁর বাবাকে দেখে শারীরিক ভাবে সুস্থ মনে হলেও আদতে মানসিক ভাবে সুস্থ নন। যদিও ছেলের দাবি পুরোপুরি খারিজ করে মুকুল রায় জানিয়েছেন, তিনি পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন। তিনি জানান বিজেপিতেই আছেন, তৃণমূলে যোগ দেননি তাই পদত্যাগের কোনও প্রশ্নই নেই।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জিতে আসেন মুকুল। ২০১৭ সালে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র হাত ধরে মুকুলের বিজেপিতে অভিষেক ঘটে। বিধানসঙা ভোটের কিছুদিন পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে মুকুল তৃণমূলে যোগ দেন। তারপরেও মুকুলকে রাজ্য বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিজেপির পরিষদীয় দল বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেয়। জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালত বিধানসভাকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলে। দুপক্ষের দীর্ঘ সওয়াল শেষে স্পিকার রায় দেন, মুকুল বিজেপিতেই রয়েছেন।