Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar | বিজেপি জোট কি ৪০০ পার? একাই ৩৭০?
Fourth Pillar

Fourth Pillar | বিজেপি জোট কি ৪০০ পার? একাই ৩৭০?

বিজেপির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক তো রাহুল গান্ধীর আশেপাশে ঘুরতে থাকা বালখিল্যদের মতো নয়

Follow Us :

আচ্ছা আপনি রাস্তায় ঘাটে কাউকে বলতে শুনছেন এবার বিজেপি জোট চারশো পার? আবার কেউ এরকমও বলছে নাকি যে ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স ক্ষমতায় আসছে? কেউ কি এটা বলছে যে কংগ্রেস একাই ২০০-২৫০ আসন পাবে? না, এরকম কেউ বলছে না, কিন্তু এটা বলছে যে বিজেপিই আসবে, কিছুটা কমবে, কিন্তু আসবে। এটা শুনছেন নিশ্চয়ই যে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে না কিন্তু তাদের আসন বাড়বে। আরও ২৮ দিন পরে নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট পড়বে। বিজেপির পক্ষে প্রবল হাওয়া নেই, বিজেপির বিপক্ষে প্রবল হাওয়া নেই। কংগ্রেস বা ইন্ডিয়া আলায়েন্সের পক্ষেও কোনও হাওয়া নেই। ২৮ দিনের মধ্যে প্রবল হাওয়া উঠবে, এরকমটা কোনও সুস্থ মানুষ ভাবছেন না। কাজেই এবারের হিসেব নিকেশ করতে বসে পাল্লা যে বিজেপির দিকেই ঝুঁকে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাহলে এবার আলোচনাটা এই জায়গাতে এসে দাঁড়ায় যে বিজেপি জিতলে সেই জয়ের চেহারা কেমন হবে? কংগ্রেস বা ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স না জিতলেও কতটা পিছনে থাকবে। এই আলোচনার শুরুতেই আগে এটা বুঝে নেওয়া যাক যে কে কী চাইছে? বিজেপি নিশ্চিত ৩৭০ পার করে যাবে? তাহলে এখনও বিভিন্ন অ্যালায়েন্স করার চেষ্টা, দল ভাঙানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে কেন? তারা পঞ্জাবে আবার অকালি দলের সঙ্গে হাত মেলানোর প্রস্তুতি নিয়েছে, হরিয়ানাতে তারা অন্য সমীকরণ তৈরি করছে। তারা এমনকী নিজেদের জেতা আসন ছেড়ে দিচ্ছে দেবেগৌড়ার দলকে, তাদের দল থেকে বিধায়ক, এমনকী সাংসদ বেরিয়ে যাচ্ছে কেন?

বিজেপির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক তো রাহুল গান্ধীর আশেপাশে ঘুরতে থাকা বালখিল্যদের মতো নয়, তাঁরা ভালো করেই জানেন, ১০ বছরের অ্যান্টি ইনকমব্যান্সি, প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা কাজ করছে, একই মুখের লাগাতার প্রচার মানুষকে ক্লান্ত করেছে। তাঁরা জানেন যে এই মুহূর্তে ইলেকশন বন্ড, পিএম কেয়ার তাঁদের কিছুটা হলেও বেকায়দায় ফেলবে, তাঁরা জানেন যে এই মুহূর্তে জঙ্গি জাতীয়তাবাদকে উসকে দেওয়ার মতো তাদের কাছে তেমন কোনও অস্ত্র নেই। তাঁরা খুব ভালো করেই জানেন যে ৩০৩ ধরে রাখাটাই একটা বড় ব্যাপার। ২৭২-এর তলায় ২৬০-২৬৫ এমনকী ২৫০ পেলেও মোদি-শাহ হাসতে হাসতে সরকার বানিয়ে ফেলবেন কিন্তু তেমন হলে যে তাঁদের হাতে একচ্ছত্র ক্ষমতা থাকবে না, সেটাও তাঁরা জানেন। কাজেই তাঁদের লক্ষ্য আসলে কমবেশি আগের আসন ধরে রাখা, দু’ পাঁচটার বেশি যেন না কমে সেদিকেই নজর রেখেছেন তাঁরা। এবং তাঁরা এটাও জানেন যে তাঁদের শরিকদের আসন কমবে, কারণ শরিকই তো কমে গেছে। ধরুন বিহারে, কাকা পারশনাথ আর ভাইপো চিরাগ পাসওয়ানের লড়াইয়ে পারশনাথ মহাজোটের সমর্থন পেলে জিতেই যাবেন, তাঁরা জানেন যে এবারে আসানসোল জেতা যাবে না, তাঁরা জানেন যে তেলঙ্গানাতে গতবারের রেজাল্ট হওয়াটা অসম্ভব। কর্নাটকে তাঁদের অন্তত গোটা ১০-১১ আসন খোয়াতে হবে, দিল্লিতে যাবে গোটা তিন আসন। রাজস্থানে কম করেও একটা আসন কংগ্রেস জিতবে, মণিপুরে একটা আসন যাবে। তার মানে যদি সবচেয়ে ভালো ফলের কথা ভাবা হয়, তাহলে ওই ৩০৩ থেকে বিজেপির গোটা ১৫-২০ আসন কমবে। সেগুলো আসবে কোথা থেকে? সেটার দিকেই তাকিয়ে আছে বিজেপি। এবং তলায় তলায় যোগাযোগ রাখছে সম্ভাব্য পার্টনারদের সঙ্গে।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | ইলেক্টোরাল বন্ড ইস্যুতেই বিজেপি ২৫০ আসনের তলায় চলে যাবে?

তাদের দেখাতে হবে মোদি-ম্যাজিক, বিজেপির সংখ্যা যদি ২৭০ হয়ে যায়, মানে গরিষ্ঠতার চারটে কম, তাহলেও মুখ পুড়বে মোদি–শাহের। দলে বহু কথা শুরু হবে এবং তা মূলত অন্য দল ভাঙিয়ে আনা হরেক কিসিমের নেতাদের নিয়ে। মেদিনীপুরে হেরে গেলে দিলীপ ঘোষ কথা বলবেন না? একশোবার বলবেন। তখন আরএসএস থেকে নতুন নির্দেশ আসবে, এবং এটা আটকানোর জন্যই মোদি–শাহ গুজরাত লবি মরিয়া। দলের মধ্যে গুজরাত লবি, বাকি প্রত্যেকের উপরে এতটাই চেপে বসেছে যে একটু অন্যরকম রেজাল্ট হলে তারা ছিঁড়ে খাবে। এবং তারজন্য বিজেপিকে হারতে হবে না, হেরে ভূত হতেও হবে না, ২৭২/২৭৩-এর নীচে নামলেই এই খেলা শুরু হয়ে যাবে। আর ঠিক সেটাই আপাতত বিরোধীদের লক্ষ্য। কী আশ্চর্য? বিরোধীরা পাল্টা ন্যারেটিভ তৈরি করতে পারছে না, বিরোধীরা এখনও মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যই নয়, অথচ দেশে হাজারো সমস্যা আছে, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি আছে, রেকর্ড বেকারত্ব আছে, সংখ্যালঘুদের আতঙ্ক আছে, বিজেপির বিরুদ্ধে এখন এমনকী পরিষ্কার দূর্নীতির অভিযোগ আনা যায়। কিন্তু বিরোধীদের আগে থেকেই হেরে যাওয়া মানসিকতার ফলেই তারা বিজেপি অন্তত সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে কিছুটা তলায় থাকুক, এই আশা নিয়েই মাঠে নামছে। এই অবস্থা বদলে দিতে পারত তারা, অনায়াসে পারত। কোন কোন সময়ে মনে হয়েছিল বিরোধীরা পারলেও পারতে পারে? কর্নাটকে জয়, ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স তৈরি হল, এক সাড়াজাগানো ব্যাপার, মানুষ সবে বলতে শুরু করেছিল যে ইন্ডিয়া জোট কিন্তু বিজেপিকে নড়িয়ে দেবে। বলতে শুরু করেছিল রাহুল গান্ধীর পদযাত্রার পরে উনি অনেকটা নিজের ইমেজ বদলেছেন। ঠিক সেই সময়ে কংগ্রেস চলতে শুরু করল নিজের মতো করে, কোথায় পড়ে রইল ইন্ডিয়া জোট। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি মোদি-শাহ, বিজেপি। মহারাষ্ট্রে এনসিপি ভেঙেছেন, বিহারে নীতীশকে টেনে নিয়ে গেছেন, এসব সামলানোর বদলে রাহুল গান্ধী আবার যাত্রা দুই শুরু করে দিলেন। সেবারে যাত্রা যে পথ দিয়ে গিয়েছিল সেখানে শরিক নয়, কংগ্রেসের শক্তপোক্ত সংগঠন আছে, দক্ষিণে বিজেপি নেই। এবারে বিজেপি শাসিত রাজ্য, শরিক দল আছে এমন রাজ্য দিয়ে হাঁটতে হবে, অথচ তাঁদের কারও সঙ্গে সৌজন্যর বশেও আলোচনাই করলেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব একজনও। সেদিনই ঘণ্টা বেজে গেছে। উত্তরপ্রদেশে গিয়ে একটু সামাল দিল, যাত্রা শেষ হতে হতে এমনকী বিশ্বস্ত সাথি কমরেড সীতারাম ইয়েচুরিও উধাও হয়েছেন।

এটা রাজনীতি? বিশেষ করে মোদিজির বিরুদ্ধে? মন্দির দেখলেই ঢুকে যাচ্ছেন, এসসি-এসটিদের কথা বলছেন রাহুল গান্ধী, কিন্তু পাছে হিন্দু ভোট চলে যায় তার জন্যই তিনি মুসলমানদের কথা বলাই বন্ধ করেছেন। আর মোদিজিকে দেখুন তিনি উল্টে পসমন্দা মুসলিমদের কাছে টেনে সেই ভোটকে নিজেদের দিকে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। বামেদের আসন ছিল না, কিন্তু এক মর্যাদার আসন ছিল, তাঁরা চোর নন, তাঁরা বিশাল আর্থিক দূর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন, তাঁরাই একমাত্র যাঁরা ইলেকশন বন্ডের বিরোধিতা করেছেন প্রথম দিন থেকেই। কিন্তু দেশে তাঁদের স্বাধীন অস্তিত্ব কোথায়? বাংলাতে একটা আসনও পাবে সিপিএম? ত্রিপুরাতে? উত্তরপ্রদেশ, উত্তরভারতের অন্য কোথাও? দক্ষিণে অন্ধ্র, তেলঙ্গানা, কর্নাটকে? জামানতও থাকবে না। উদয়নিধি-স্তালিনের কৃপায় দুটো আসন আর কেরালাতে কয়েকটা আসন, এই তো? সিপিআই-এর অবস্থা তারচেয়েও খারাপ। বামেদের স্বাধীন অস্তিত্ব না থাকায় তাদেরকে বিরোধীদের সম্মিলিত দুর্নীতি আর লাগামছাড়া চুরির দায়ও কাঁধে নিতে হচ্ছে। যার ফলে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসবে এমনটা তারাও মনেই করে না। তাঁদের আপাতত একমাত্র স্বপ্ন জোট ২৭৩ পার করে যাক, অন্তত বিজেপি একলা যেন সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়। অন্তত তাহলে আগামী পাঁচ বছর হাঁফ ছাড়ার সময় পাবেন, নিজেদের গুছোনোর সময় পাবেন। এটাই বিরোধীদের আপাতত লক্ষ্য। তবুও বিরোধীদের কিছু আসন তো বাড়বেই, সেদিকেও একটু নজর রাখা যাক। রাজস্থানে কংগ্রেস একটা থেকে দুটো আসন পেতে পারে, মধ্যপ্রদেশেও ছিন্দওয়াড়া ছাড়াও আর একটা, তেলঙ্গানাতে গোটা সাতেক পেতে পারে, কর্নাটকে ১০-১১টা, দিল্লিতে একটি কি দুটো, বিহারে অন্তত ১০টা, বাংলাতে ২-৩টে তো নিশ্চয়ই, সব মিলিয়ে বিরোধীদের আসন বাড়বে, কিন্তু তা সম্মিলিতভাবেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার ধারেকাছেও আসবে না। যারা আমরা মনে করি দেশ সংবিধানকে নিয়ে বাঁচুক, দেশের প্রত্যেক মানুষ নিজের নিজের মৌলিক অধিকার নিয়ে বাঁচুক, এক সাম্প্রদায়িক, ধর্মান্ধ দলের হাত থেকে দেশ মুক্তি পাক, তাদেরও এখন উঠতে বসতে বলতে শুনছি, বিজেপি যেন ওই ব্রুট মেজরিটি নিয়ে যেন না জেতে, তাদের অনেকের কাছেই অটল বিহারী বাজপেয়ীর মতো শরিক নির্ভর এক বিজেপির সরকার কাম্য। এই সবকিছুর জন্য মূল দায়ী ভারতের জাতীয় কংগ্রেস, যারা হয়ে উঠতেই পারত এই সময়ে সত্যিই নফরত কা বাজার মে মুহব্বত কি দুকান। তারা এই গোটা সময়ে দেখাল রাজনৈতিক দল হিসেবে এখন তারা কতটা নড়বড়ে, কতটা অপদার্থ।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Soumendu Adhikari | সৌমেন্দু অধিকারীর মিছিলে 'বোমা 'বর্ষণ, TMC-র বিরুদ্ধে বোমা মারার অভিযোগ BJP -র
03:05
Video thumbnail
Irfan Pathan | বহরমপুরে দাদার প্রচারে ভাই, ইউসুফ পাঠানের হয়ে প্রচারে ইরফান পাঠান
06:39
Video thumbnail
Yusuf Pathan | Irfan Pathan | ইউসুফ পাঠানের প্রচারে ভাই ইরফান পাঠান, দেখুন ভিডিও
00:17
Video thumbnail
TMC | তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার প্রচারে কৌশানি, প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা অভিনেত্রীর
02:33
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | রামপুরহাটে ভোটপ্রচারে অভিষেক, কী বললেন দেখুন ভিডিও
05:11
Video thumbnail
৪টেয় চারদিক | যিনি ১০০ দিনের টাকা দেননি, তাঁর গ্যারান্টি বীরভূমের মানুষ বিশ্বাস করবেন না: অভিষেকের
43:44
Video thumbnail
Sandeshkhali | 'মহিলাদের নিয়ে যায় বিজেপি নেতা অনুপ দাস', সন্দেশখালির আরেক ভিডিয়ো ভাইরাল
06:45
Video thumbnail
পলিট্রিক্সের গ্রিনরুম (পর্ব ৫) | Pranab Mukherjee | ‘যুধিষ্ঠির’ মুখোপাধ্যায়
59:11
Video thumbnail
Dilip Ghosh | 'দমবন্ধ করে দেব, ঘর থেকে বেরোতে দেব না', ফের বেলাগাম দিলীপ ঘোষ
06:58
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধের দামামা | 'শাসকদলকে নিশানা করে অনেক আলোচনা হচ্ছে', সন্দেশখালি ইস্যুতে TMCর পাশে কংগ্রেস
21:33