Saturday, July 5, 2025
HomeBig newsসংস্কৃতি চর্চা থেকে রাজনীতি, বামফ্রন্টের শেষ মহিকান
Buddhadeb Bhattacharjee Passes Away

সংস্কৃতি চর্চা থেকে রাজনীতি, বামফ্রন্টের শেষ মহিকান

রাজ্যের শিল্পায়নের স্বপ্ন দেখতেন তিনি

Follow Us :

কলকাতা: বঙ্গ রাজনীতিতে নক্ষত্রপতন। পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের দ্বিতীয় এবং শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জীবনাবসান (Buddhadeb Bhattacharjee Passes Away)। বাম জমানার শেষ সেনাপতি ছিলেন তিনি। বালিগঞ্জে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই প্রয়াত হয়েছেন তিনি। বুদ্ধদেবের মৃত্যুতে শেষ হল বাম রাজনীতির এক জমানার। দক্ষিণ কলকাতায় পাম অ্যাভিনিউয়ের দু’ কামরার ফ্ল্যাটে আড়ম্বরহীন জীবন কাটিয়েছেন শেষ দিন পর্যন্ত। শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি চলা ফেরা করতে পারতেন না। চোখে দেখতে পারতেন না। বাড়িতে থাকতেন। কিন্তু রাজনীতির বিষয় খুবই সচেতন ছিলেন। রোজ খবরের কাগজ পড়ে শোনাতে হত, এমনটাই জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যও। শুধু রাজনীতি নয়, সংস্কৃতির অঙ্গনেও ছিল তাঁর অবাধ যাতায়াত।

ছাত্রজীবন থেকেই শুরু সংস্কৃতি চর্চা। বই পড়ার পাশাপাশি তুলে নিয়েছেন কলম। তিনি স্বপ্ন দেখতেন রাজ্যের শিল্পায়নের। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। রাজ্যে শিল্পায়ন দ্রুত আনতে চেয়েছিলেন বুদ্ধদেব। কিন্তু সিঙ্গুরে এবং নন্দীগ্রামে জোর করে কৃষিজমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক জটিলতা পট পরিবর্তন ঘটেছিল। তার খেসারত দিতে হয়েছিল বামফ্রন্টকে। সেই সময় তাঁর সরকারের স্লোগান ছিল, ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’।

আরও পড়ুন: প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

১৯৪৪ সালের ১ মার্চ কলকাতায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharjee) জন্ম। আজীবন বামপন্থায় বিশ্বাসী এই মানুষটির রুচিবোধ নিয়ে এখনও চর্চা হয়। রাজনীতির পাশাপাশি সাহিত্যচর্চাতেও সমান আগ্রহ ছিল বুদ্ধবাবুর। উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর এলাকায় শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয় থেকে পাশ করে তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজে বাংলা অনার্স নিয়ে ভর্তি হন। রাজনীতি-সাহিত্যের পাশাপাশি খেলাধুলায় ভালোবাসতেন। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন বুদ্ধদেব। আলিমুদ্দিনের নীতিগত বেশ কিছু পরিবর্তন দরকার। শোনা গিয়েছিল, তিনি নাকি বলেছিলেন, চোরেদের মন্ত্রিসভায় থাকব না। কিন্তু তার কোনও সমর্থন কোনও তরফেই মেলেনি। বুদ্ধদেবের মন্ত্রিত্ব-ত্যাগ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল। সমালোচকরা বলেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের একাধিক সদিচ্ছা থাকলেও তাঁর নীতিতে বিস্তর ভুল ছিল। তারই খেসারত দিতে হয়েছে বামফ্রন্টকে। যার নির্যাস সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রামের মতো ঘটনা। সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো কারখানা গড়ার তাড়াহুড়ো এবং তা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক বৃহত্তর আন্দোলন। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্ব থেকেই বিতর্ক জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাড়া করতে শুরু করেছিল তাঁকে। কোথাও কোথাও প্রশাসনিক রাশ আলগা হওয়াও চোখে পড়ছিল। নিচুতলার কর্মী এবং সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় দলবদলের হিড়িক। ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য রাজনীতিতে বড় পটপরিবর্তন ঘটে। রাজ্যের ক্ষমতায় আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার।

১৯৬৬ সালে সিপিএমের প্রাথমিক সদস্যপদ নেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ১৯৭২ সালে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে বিধানসভা ভোটে প্রথমবার লড়াই। ১৯৯৬ সালের পর স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ১৯৯৯ সালে ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। জ্যোতি বসু অবসর নেওয়ার পর ২০০০ সালে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন বুদ্ধবাবু। ২০০০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১১ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব। বাংলায় ৩৪ বছরের বাম রাজত্বের শেষের ১০ বছরের মুখ্যমন্ত্রী তিনিই। প্রথমে কাশীপুর-বেলগাছিয়া কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৮৭ সালে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ান। ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন বুদ্ধবাবু। দীর্ঘ পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবন।

২০১১ সালে ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর কিছুদিন সক্রিয় ছিলেন রাজ্য–রাজনীতিতে এবং যেতেন পার্টি অফিসে। সেখানেই একদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তারপর থেকেই আসতে আসতে সরে যেতে শুরু করেন সক্রিয় রাজনীতি থেকে। পরে একেবারেই আর যখন পারলেন না তখন বাড়িতেই থাকতে শুরু করলেন। ২০২২ সালের বুদ্ধদেব পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান করে। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর নাম মনোনীত করলেও, তিনি এই সম্মান নিতে অস্বীকার করেন। পরনে সাদা ধবধবে ধুতি-পাঞ্জাবি, বাঁদিকে পাট করে আঁচড়ানো চুল, শব্দচয়নে সদা সতর্কতা, গলার স্বরের গাম্ভীর্য, স্পষ্ট উচ্চারণে বাংলায় কথা বলা — ১০টা বছরেই তাঁকে করে তুলেছিল ‘ব্র্যান্ড বুদ্ধ’। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি ব্র্যান্ড হয়েই থেকে গেলেন। বিতর্ক এসেছে, যেমনটা আসে রাজনীতির অনুসঙ্গে। তবে সেসব ঠেলে সরিয়ে তিনি আজীবন ‘বুদ্ধবাবু’ হয়েই থেকেছেন। কোনও বিরোধী রাজনীতিক তাঁকে ভাষার বাণে বিঁধতে গেলেও কখনও ‘বাবু’ ছাড়া সম্বোধন করেনি। এটাই বোধহয় ‘ব্র্যান্ড বুদ্ধ’র ক্যারিশমা।দক্ষিণ কলকাতায় পাম অ্যাভিনিউয়ের দু’ কামরার ফ্ল্যাটে আড়ম্বরহীন জীবন কাটিয়েছেন শেষ দিন পর্যন্ত।

দেখুন ভিডিও

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
বাংলা বলছে (Bangla Bolche) | ইউনিয়ন রুমে তালা
00:00
Video thumbnail
Benjamin Netanyahu | ইরানের মা/রে তছনছ ইজরায়েল, ভ/য়ে দেশ ছাড়ছে ইহুদিরা, দিশাহারা নেতানিয়াহু
00:00
Video thumbnail
Uttar Pradesh | যোগী রাজ্যে রক্ষকই ভক্ষক, স্কুল ছাত্রীকে ধ/র্ষ/ণ পুলিশের, তারপর কী হল?
00:00
Video thumbnail
Himachal Pradesh | হিমাচলে ভয়াবহ বন্যা, দেখুন ভয় ধরানো ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Mamata-Sukanta |হাওয়াই চটি কাণ্ডে সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি,কতটা বিপদে সুকান্ত?
00:00
Video thumbnail
Weather Update | ঘূর্ণাবর্তের তাণ্ডব, শুক্র থেকে রবি প্রবল বৃষ্টি, ভাসবে কোন কোন জেলা?
00:00
Video thumbnail
Kasba Law College | খুলছে সাউথ ক্যালকাটা ল'কলেজ, কী কী নির্দেশিকা?
01:56
Video thumbnail
Bihar Fake Voter | বিহারে ভুয়ো ভোটার কত? ভেরিফিকেশনে বাদ ২৫-৩০% ভোটার, এই ভিডিও দেখলে চমকে উঠবেন
07:06
Video thumbnail
Beyond Politics (বিয়ন্ড পলিটিক্স) | ভোটার তালিকা সংশোধন, গোলমালে বিহার এখন
08:27
Video thumbnail
Trinankur vs Sayan | ইউনিয়ন নিয়ে তৃণাঙ্কুর-সায়ন ধুন্ধুমার, দেখুন মৌপিয়ার সঙ্গে বাংলা বলছে
21:53

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39