বাঁকুড়া: আরও একবার কাঠগড়ায় বাঁকুড়ার সমগ্র শিক্ষা মিশন। নিয়ম ভেঙে জেলার ৭৫ টি স্কুলের জন্য বরাদ্দ টাকা আটকে রাখার অভিযোগ উঠল। সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির অভিযোগ, তাদের বরাদ্দ টাকা না দিয়ে নিজেরাই টেন্ডার ডেকে ওই কাজ করছে বাঁকুড়া সমগ্র শিক্ষা মিশন। এই বেনিয়মের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সরব সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকরা।
অন্যদিকে কাটমানি খেতেই শাসক দলের এই চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন বিরোধীরা। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সামনে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা প্রশাসন। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে জেলা পরিষদ।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, সারা রাজ্যের সঙ্গে বাঁকুড়া জেলার মোট ৭৫ টি স্কুলকে চিহ্নিত করে সেগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য মোট ৪ কোটি ৫৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মঞ্জুর করেছে রাজ্য সমগ্র শিক্ষা মিশন। এই টাকা থেকে প্রতিটি স্কুলের ভবন মেরামত, গেট তৈরির মতো কাজের জন্য ৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা। পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে ২০২১ -২২ অর্থবর্ষের মধ্যেই ওই টাকা খরচ করে তার সার্টিফিকেট জমা করার কথা জানানো হয়।
শিক্ষকদের দাবি, ওই অর্ডারে জানানো হয় সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির নিজস্ব আকাউন্টে বরাদ্দ টাকা দিয়ে দিতে হবে। ব্লক ও সমগ্র শিক্ষা মিশনের নজরদারিতে ওই টাকা খরচ করে স্কুল তার প্রমাণপত্র জমা দেবে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষ শেষ হয়ে পেরিয়ে গেছে আরও দু’মাস। পুরুলিয়া-সহ রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতে এই টাকা সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিকে দিয়ে দিলেও বাঁকুড়া জেলার ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত স্কুলগুলিকে সেই টাকা দেয়নি বাঁকুড়া জেলা সমগ্র শিক্ষা মিশন।
স্কুলগুলির অভিযোগ, তাদের টাকা না দিয়ে জেলার সমগ্র শিক্ষা মিশন নিজেরাই টেন্ডার করে খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে স্কুলগুলির দাবি সমগ্র শিক্ষা মিশন কেন্দ্রীয় ভাবে টেন্ডার করলে বরাদ্দ টাকার এক চতুর্থাংশও খরচ না করে পুরো টাকা তুলে নেবে ঠিকাদাররা। অথচ এক্ষেত্রে এলাকার মানুষকে জবাবদিহি করতে হবে স্কুলগুলিকে।
অবিলম্বে স্কুলগুলির নিজস্ব আকাউন্টে বরাদ্দ টাকা দেওয়ার দাবিতে সমগ্র শিক্ষা মিশনের দ্বারস্থ হয়েছে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির কর্তৃপক্ষ। এদিন এই দাবিতেই বাঁকুড়া সমগ্র শিক্ষা দফতরের সামনে এই বিষয়ে বিক্ষোভ দেখায় প্রধান শিক্ষকরা। সমগ্র শিক্ষা মিশনের আধিকারিকরা বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এটেছে। বাঁকুড়া জেলা পরিষদ জানিয়েছে, এই বিষয়টির সঙ্গে জেলা পরিষদের কোনও সম্পর্ক না থাকলেও বরাদ্দ টাকা স্কুলগুলিকে না দিয়ে কেন আটকে রাখা হয়েছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্নীতিকে কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- Bagdah Extramarital Affair : স্বামীর ‘অভাব’ ভুলতে টোটোচালকের হাত ধরে ঘর ছাড়ল একই পরিবারের দুই বউ