বোলপুর: জমি নিয়ে বিশ্বভারতী–অমর্ত্য টানাপোড়েন এখনও চলছে। এবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen)সমর্থনে ফেসবুক পোস্ট করায় এক ছাত্রকে শোকজ করা হয়েছে। স্নাতকোত্তরের ছাত্র তথা এসএফআই নেতা সোমনাথ সৌকে শোকজ করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ছাত্র হয়েও কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সরব? প্রশ্ন তুলে ওই ছাত্রনেতাকে কড়া চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ওই ছাত্রকে শৃঙ্খলাভঙ্গ নিয়ে কড়া বার্তাও দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ফের একবার প্রশ্নের মুখে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে (Visva Bharati Universit) স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র সৌমনাথ সৌ। তিনি বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআইজ-এর সঙ্গেও যুক্ত। অমর্ত্যের সমর্থনে লেখা পোস্ট করেছিলেন ফেসবুকে। তাতেই কর্তৃপক্ষের শোকজের চিঠি পৌঁছেছে তাঁর কাছে। ওই ছাত্র ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘সমষ্টি ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের দফতর থেকে দেওয়া তথ্য বলছে, ‘সমষ্টি এবং ভূমি সংস্কার আধিকারিকের দফতর থেকে দেওয়া তথ্য বলছে, ‘১.৩৮ একর জমির মালিক অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের পিতা আশুতোষ সেন। তাহলে শুধুই কি উপাচার্যের নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য টার্গেট করা হচ্ছে? যদি না হয়, তাহলে বিশ্বভারতী .১৩ একর জমির মালিকানার কাগজ প্রকাশ করুক এবং আদালতের হস্তক্ষেপে বিষয়টির নিষ্পত্তি হোক। নোংরামির একটা সীমা থাকা দরকার।’
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুরু থেকে দাবি করে আসছে, অমর্ত্য সেনের বাবাকে কখনওই ১.৩৮ একর জমি লিজ দেওয়া হয়নি। আর লিজ দেওয়া হয়েছিল ১.২৫ একর জমি। সেটার ভিত্তিতে ১৩ ডেসিম্যাল জমি ফেরত চাইছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। তার প্রেক্ষিতেই ফেসবুকে লিখেছিলেন পড়ুয়া সোমনাথ সৌ। তাঁকেই শোকজ নোটিস ধরিয়েছে বিশ্বভারতী। এমনকি শোকজ নোটিসের সঙ্গে সোমনাথের দু’টি ফেসবুক পোস্টের বয়ানও জুড়ে দিয়েছে বিশ্বভারতী। শোকজের চিঠিতে ওই ছাত্রকে শৃঙ্খলাভঙ্গ নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, আবার শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। যদিও এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাননি ওই ছাত্র।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরেই অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের জমি বিবাদ অব্যাহত রয়েছে। কর্তৃপক্ষ সেই জমি উদ্ধার করতে বদ্ধপরিকর বলে জানান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এই আবহে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূম জেলা সফরে এসে জমির নথি তাঁর হাতে তুলে দিয়ে বলেন তিনিই জমির প্রকৃত মালিক। পাশাপাশি, অমর্ত্য সেনকে জেড ক্যাটাগরি নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সেই মোতাবেক রবিবার সকাল থেকে নোবেলজয়ীর শান্তিনিকেতনের বাসভবন প্রতীচীকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়।