কলকাতা: রাজ্য সরকার নির্দেশ দিয়েছে, ১১ অগাস্টের মধ্যে সর্বত্র পঞ্চায়েতের বোর্ড (Panchayat Board) গঠন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee) সম্প্রতি নবান্নে (Nabanna) বলে, সর্বত্র শান্তিপূর্ণভাবে পঞ্চায়েতের বোর্ড গড়তে হবে। অনেক জেলাতেই বোর্ড গঠনের তোড়জোড় তুঙ্গে। বুধবার থেকে বিভিন্ন জেলায় বোর্ড গঠন শুরু হচ্ছে। তার মধ্যেই বিরোধীদের অভিযোগ, বহু জায়গায় তাদের জয়ী সদস্যদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যেখানে বিরোধীদের বোর্ড গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে বিরোধী সদস্যদের অপহরণের ঘটনাও ঘটছে। মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং নদিয়ায় এমন কিছু অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও হয়েছে। এই আবহে বোর্ড গঠনের সময় বিরোধীদের পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার একগুচ্ছ নির্দেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট।
মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়ায় ৯, ১০ এবং ১১ অগাস্ট বেশ কিছু পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হওয়ার কথা। ওই তালিকায় রয়েছে, মুর্শিদাবাদের তিনকড়াইপুর বালুমতি এবং হেরামপুর পঞ্চায়েত। দুটি পঞ্চায়েতেই সিপিএম সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। তিনকড়াইপুর বালুমতি পঞ্চায়েতের ১৫ জন এবং হেরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ জন সিপিএম সদস্যকে যথাযথ পুলিশি নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। নদিয়ার রঘুনাথপুর হিজুলি এবং দেবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৯ জন নবনির্বাচিত বিজেপি সদস্যকে নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। একইভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির কাশিনগর পঞ্চায়েতের ৭ নবনির্বাচিত বিরোধী সদস্যকে পুলিশি নিরাপত্তা দিতে হবে বলে আদালতের নির্দেশ। ওই জেলারই মথুরাপুরেও ৯ বিরোধী সদস্যকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মথুরাপুরে চার বিরোধী সদস্যকে অপহরণের যে অভিযোগ উঠেছিল, হাইকোর্ট পুলিশকে দ্রুত তার তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন:শহরে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ নিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের
মথুরাপুরের ওই অপহরণ কাণ্ড নিয়ে গত কদিন ধরে তোলপাড় চলছে। গত সপ্তাহে বাইপাসের ধারে পঞ্চসায়রের একটি গেস্ট হাউস থেকে চার বিরোধী সদস্যকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের সুন্দরবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে একটি ভিডিয়ো বার্তা প্রচার করা হয়। সেখানে তাঁদের বলতে শোনা যায়, আমরা ভালো আছি, আমাদের কেউ অপহরণ করেনি। বোর্ড গঠন শেষ হলে বাড়ি ফিরব। ওই অপহরণ নিয়ে থানায় অভিযোগ জানান প্রবীণ সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। পরের দিন আবার ওই চার জনকে ছেড়েও দেওয়া হয়। বাড়ি ফিরে তাঁরা দাবি করেন, বন্দুক দেখিয়ে তাঁদের অপহরণ করা হয়েছিল। বন্দুকের মুখে জোর করে তাঁদের দিয়ে ভিডিয়ো বার্তায় ওই কথা বলানো হয়েছিল। এই অপহরণ কাণ্ড নিয়েও হাইকোর্টে মামলা হয়।