বোলপুর: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ (Economist) অমর্ত্য সেন (Amartya Sen) এবং বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati) উপাচার্যের সংঘাত নিয়ে তোলপাড় বাংলার রাজনীতি। এই আবহে এবার নিরাপত্তা (Security) বাড়ানো হল অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের (Shantiniketan)বাড়ি ‘প্রতীচীতে’ (Pratichi)। বীরভূম জেলা শহরে এসে অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) বাড়িতে বসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন তাঁর নিরাপত্তা (Security) বাড়ানোর। বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এবার নিরাপত্তা (Security) বাড়ানো হয়েছে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাসভবনে। রবিবার সকাল থেকেই পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে বাসভবনটি।
জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বারবার ব্যক্তিগতভাবে অমর্ত্য সেনকে আক্রমণ করেছে বিশ্বভারতী (Visva-Bharati)। বিশ্বভারতী উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakrabarty) বলেছিলেন, ‘অমর্ত্য সেন (Amartya Sen) নোবেল লরিয়েটই নন। উনি জীবনে নোবেল প্রাইজই পাননি। কিন্তু উনি নিজে দাবি করেন নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন বলে।’ আবার কখনও অমর্ত্য সেন জমি দখল করে রেখেছেন বলেও দাবি করেন উপাচার্য। এভাবে অমর্ত্য সেনকে আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে বিশ্বভারতীর কাছে। তাই শারীরিকভাবে যাতে অমর্ত্য সেন আক্রান্ত না হয় তার জন্য আগেভাগেই নিরাপত্তা বাড়ানো হল।
উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনে ১৩৮ ডেসিমেল জমির উপর ‘প্রতীচী’ নামের বাসভবন তৈরি করেছিলেন অমর্ত্য সেনের ঠাকুরদা বিখ্যাত শিক্ষাবিদ ক্ষিতিমোহন সেন। এখন এই বাড়ির জমি নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিশ্বভারতীর দাবি, নিয়মানুযায়ী ১২৫ ডেসিমেল জমি লিজ দিয়ে সে সময় বিশ্বভারতীর কর্মী, আধিকারিকদের থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। খুব কম সময়ের জন্য হলেও ক্ষিতিমোহন সেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva-Bharati University) উপাচার্য ছিলেন। সেই হিসেবে তিনিও ওই জমির অধিকারী। কিন্তু এখন বিশ্বভারতী বলছে ১২৫ ডেসিমেলের জায়গায় যে ১৩৮ ডেসিমেল জমির উপর রয়েছে ‘প্রতীচী’ (Pratichi)। অতিরিক্ত সেই ১৩ ডেসিমেল জমি বেআইনিভাবে দখলে রেখেছেন অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। অবিলম্বে ওই জমি ফেরত দিতে হবে। এই মর্মে চিঠিও পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পালটা চিঠি দিলেন অমর্ত্য সেনের আইনজীবী।
অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) আইনজীবী জানান, শান্তিনিকেতনের বাড়ির জমি দখলের অভিযোগ পুরো ভিত্তিহীন। এর জন্য বিশ্বভারতীকেই ক্ষমা চাইতে হবে নোবলজয়ীর কাছে। এদিকে, জমি নিয়ে বিশ্বভারতীর (Visva-Bharat) সঙ্গে সংঘাতের আবহে শুক্রবারই পৈতৃক জমির মিউটেশন করতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। কিন্তু শনিবার সেই দাবি উড়িয়ে দেন নোবেলজয়ী (Noble Winner)। পাশাপাশি, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তীকে এদিন সরাসরি কটাক্ষ করেন তিনি বলেন, এ সমস্তর মধ্যে একটা খুব ভাববার বিষয় রয়েছে। দিল্লি সরকারের কাজ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নয়। উনি সম্ভবত সন্তুষ্ট। তাই এটা অসম্ভব নয় যে, উনি মনে করতে পারেন আমাকে দু’চার ঘা দিলে হয়ত দিল্লির কিছু উপকার হতে পারে। এই উপাচার্য কী করেন, সেটা আন্দাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।