নয়াদিল্লি : দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ঠিক জন্মদিনের আগের দিন । ঘটনার আকস্মিকতায় গোটা দেশের চোখ ছলছল করছিল । চপার দুর্ঘটনায় (Coonoor Chopper Crash) প্রয়াত হন জেনারেল বিপিন রাওয়াত (Gen Bipin Rawat), তাঁর স্ত্রী । আরও ১২ জন । আর সেই দুঃখের দিনে নিজের জন্মদিনের আড়ম্বর বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছিলেন । দলীয় কর্মী থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে অনুরোধ রেখেছিলেন, যেন কোনও ভাবেই সোনিয়াকে জন্মদিনের (Sonia Gandhi Birthday Wish) শুভেচ্ছা জানিয়ে কোনও কিছুর আয়োজন করা না হয় । সে দিন সভানেত্রীর সেই অনুরোধ-নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন কংগ্রেসের প্রতিটি কর্মী-সমর্থক । সোনিয়া গান্ধির প্রতিটি শুভানুধ্যায়ী সেই দিনটা প্রকাশ্যে পালন করা থেকে বিরতই ছিলেন ।
আজ, বুধবার ছিল সংসদের শীতকালীন অধিবেশেনের শেষ দিন । যদিও আরও একটা দিন অধিবেশন চলার কথা ছিল । কিন্তু, এ দিনই দাড়ি টেনে দেওয়া হয় অধিবেশনের । কাল ২৩ ডিসেম্বর । দিন দুয়েক বাদেই বড়দিন । তার পরই বর্ষ শেষের দিন গোনা শুরু । তার পর নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর প্রতীক্ষা । মোদ্দা কথা, শীতে মুড়ে থাকা দিল্লি আজ থেকেই ছুটির আমেজে ডুব দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে । দলের নেতারাও ফিরে যাবেন যে যার রাজ্যে । খুব একটা চাপ এই মুহূর্তে রাজধানীতে নেই । রাজনীতির কাণ্ডারিরা বছরের শেষ কটা দিন একটু অবসরেই দিন কাটাবেন । সব দিক থেকে আজই অধিকাংশের সঙ্গে দেখা হওয়ার শেষ দিন । এই বছরের মতো শেষ । আবার আগামী বছর ।
যেমন, বঙ্গের কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর কথাই ধরা যাক । সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে কাল-পরশুর মধ্যেই রাজ্যে ফিরে আসার কথা তাঁর । ভিন রাজ্যের নেতাদের ক্ষেত্রেও ওই একই কথা । কেরল-কর্নাটকের মতো রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের অধিকাংশই ফিরে যাবেন নিজ নিজ রাজ্যে । সেই হিসেবে আজই অধীরদের শেষ বারের মতো (বলা ভাল এই বছরে) সভানেত্রীর সঙ্গে দেখা । তাই নেত্রীর জন্মদিনের শুভেচ্ছাটা জানাতে ভুললেন না ।
কোনও আড়ম্বর নয় । সংসদ ভবনের সিড়ি দিয়ে নীচে নামলেন । সভানেত্রী তখন সবাইকে বিদায় জানিয়ে গাড়িতে উঠবেন । গাড়ি এসে দাঁড়াল সোনিয়ার কাছে । ঠিক গাড়িতে উঠতে যাবেন । তখনই এগিয়ে এলেন অধীর-সহ অন্য কংগ্রেস নেতারা । দেরিতে হলেও সোনিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন । সভানেত্রীও ধন্যবাদ জানালেন ।
স্মিত হাসিতে গাড়িতে উঠলেন সোনিয়া । পিছু ফিরলেন অধীররাও । ৭৫ বছরের সোনিয়া রওনা দিলেন ১০ নম্বর জনপথের দিকে ।