নয়াদিল্লি: মুদ্রাস্ফীতি ও জিএসটি বিরুদ্ধে সংসদের বাইরে ৫০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে ধর্নায় বসেন বিরোধীরা। টানা দু’সপ্তাহ বিরোধী বিক্ষোভের পর সংসদে মূল্যবৃদ্ধি আলোচনা হল সোমবার। লোকসভায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আশ্বাস দিয়ে জানালেন, ভারতে আর্থিক মন্দার কোনও সম্ভাবনা নেই। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগের জবাবে দেশের অর্থমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, আর্থিক দেনায় ডুবে যাওয়া কিংবা জাতীয় অর্থনীতি থমকে যাবে এমন কোনও সম্ভাবনাও এই মুহূর্তে নেই।
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করে বিরোধীদের প্রধান অভিযোগ ছিল, জিনিসপত্রের চড়া দাম। লোকসভায় বিরোধী দলের সাংসদেরা দুধ, লস্যি, মুড়ি, চাল, ডালে জিএসটি চাপানো হয়েছে বলে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। সোমবার সংসদে মূল্যবৃদ্ধি আলোচনা হয় দুই পক্ষের। নির্মলা আরও তাঁর দাবি, প্যাকেটবন্দি খাদ্যেই জিএসটি চাপানো হয়েছে। সব রাজ্য তাতে সায় দিয়েছে। আর জ্বালানি থেকে আদায় করা শুল্ক উন্নয়নের কাজেই খরচ করা হচ্ছে।
সোমবার বিরোধী বিক্ষোভে বেলা দুটো পর্যন্ত মুলতবি হয়ে যায় লোকসভা। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করতে সরকার প্রস্তুত। সোমবার লোকসভা এবং মঙ্গলবার রাজ্যসভায় আলোচনা হবে। এরপর সোমবার দুপুরে লোকসভা বসলে চার সাংসদের সাসপেনশন প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। অধ্যক্ষ ওম বিড়লা বলেন, ‘সাংসদরা যেন সভায় নিয়মকানুন মেনে চলেন।’ সভার ভিতর কোনও রকম প্ল্যাকার্ড নিয়ে ঢুকতেও নিষেধ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘গৃহস্থের পকেট কাটছে সরকার’, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সংসদে কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেসের একসুর
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘গত আট বছরে দেশের অর্থনৈতিক ধাঁচা একেবারে বেহাল হয় পড়েছে। এর কারণ সরকারের ভুল আর্থিক নীতি। মোদি সরকার দেশের সাধারণ মানুষের পকেট কেটে কোষাগার ভরতি করেছে। আর তাতেই বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়েছে সরকার। আর গৃহস্থের বাজেট ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদি সরকারকে নিশানা করে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের বক্তব্য, ‘রান্নার গ্যাসের আকাশছোঁয়া দাম গৃহস্থের মাসের খরচে প্রভাব ফেলেছে। সরকার সাধারণ মানুষকে কাঁচা, রান্না না করা খাবার খেতে বাধ্য করছে।’
আরও পড়ুন: দিল্লিতে নাইজেরিয়ানের শরীরে মাঙ্কিপক্স, ভারতে আক্রান্ত ৫
সরকারের হয়ে উত্তর দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। ভারতের সঙ্গে তিনি প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভুটানের আর্থিক নীতি এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার তুলনা টেনেছেন। নিশিকান্ত দুবে বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলিতে মূল্যবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী। সাধারণ মানুষেরা চাকরি হারাচ্ছেন। আর ভারতের গরিব সাধারণ মানুষ দু’বেলা খাবার নিখরচায় পাচ্ছেন।’ এ জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ধন্যবাদ-যোগ্য বলে মনে করেন নিশিকান্ত দুবে।