কলকাতা ও দিঘা: দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (SBSTC) ঠিকা শ্রমিকরা শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির(INTTUC) নেতৃত্বে দিঘা ডিপোয় আন্দোলন শুরু করেছেন। ১৮ তারিখ থেকে তাঁদের এই বিক্ষোভ চলছে। ফলে দিঘা ডিপো থেকে কোনও বাস বেরতে পারছে না, কোনও বাস ঢুকতেও পারছে না। দিঘা ডিপোর বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল বন্ধ। মঙ্গলবার সকালে যে সব বাস দীঘা ডিপোতে ঢুকেছে, তার চালক ও কন্ডাক্টরদের ডিপো থেকে বেরতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ওই বিক্ষোভের প্রভাব পড়েছে ডবলুবিটিসিতেও(WBTC)। ওই সংস্থার ঠিকা শ্রমিকরাও দীঘার আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন।
পুজোর মুখেই শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন আন্দোলনে নামায় অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, একটা সমস্যা হয়েছে দিঘা ডিপোতে। এমডিকে পাঠিয়েছি বিষয়টা দেখার জন্য এবং কথা বলার জন্য। ওদের কিছু দাবিদাওয়া, সমস্যা আছে। বিষয়গুলি দেখে সমস্যার সমাধানের বিষয়টি দেখা হবে। আইএনটিটিইউসি শাসকদলের শ্রমিক ইউনিয়ন। শ্রমিকদের কিছু দাবিদাওয়া সমস্যা থাকে সেগুলি তুলে ধরাই শ্রমিক ইউনিয়নের কাজ। অবশ্যই সমস্যা গুলি সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক ভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তবে এর মধ্যে শাসকদলের শ্রমিক ইউনিয়নের ও সরকারের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই। তিনি স্বীকার করে নেন, এটা ঠিক সামনেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা আসছে। এই পূজায় মানুষ ঘুরবে, আনন্দ করবে। তার জন্য পরিবহণ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক ও সচল রাখতে হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিছু সমস্যা আছে, সেগুলি খতিয়ে দেখে দ্রুত সমাধানের পথ খুঁজে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পালা বদলের পর মুখ্যমন্ত্রী(chief minister) সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এবার থেকে রাজ্যে অবরোধ, বিক্ষোভ, বনধ আর চলতে দেওয়া হবে না। এটা তৃণমূল সরকারের ঘোষিত নীতি হয়ে গিয়েছে। তারপরেও কী করে দিঘার ডিপোতে আইএনটিটিইউসির(INTTUC) নেতৃত্বে ঠিকা শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তাঁরা বাসে ঠিকমতো ডিউটি পাচ্ছেন না। এর প্রতিবাদেই তাঁরা পথে নেমেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, হলদিয়া-রামপুরহাট রুটের বাস সার্ভিস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আগামিকাল দুর্গাপুর-সহ একাধিক রুটে বাস সার্ভিস বন্ধ থাকবে বলে আন্দোলনকারীরা জানান। তাঁদের আরও অভিযোগ, এসবিএসটিসির একাধিক রুটে সরকারি বাস তুলে দিয়ে বেসরকারি বাস চালানোর চক্রান্ত চলছে। ঠিকা শ্রমিকরা প্রায় নয় বছর ধরে কাজ করছেন। তবু তাঁদের নিয়মিত কাজ দেওয়া হচ্ছে না। প্রতি মাসে মাত্রা ১০ থেকে ১২টি করে ডিউটি পাচ্ছেন তাঁরা। ফলে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে উঠছে। অফিসারদের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান না করলে পুজোর আগেই পরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা বিভিন্ন মহলের।