কলকাতা: মঙ্গলবার আদালতে (Calcutta Highcourt) নিজেই নিজের হয়ে সওয়াল করলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (West Bengal Board of Primary Education) প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। আদালতের কাছে মানিকের আর্জি, হয় আমাকে ছেড়ে দিন। নতুবা এমন কোনও নির্দেশ দিন, যাতে পরের দিন সকালে আমার আর ঘুম না ভাঙে। তাঁর অভিযোগ, অকারণে ইডি তাঁকে আটকে রেখে দিয়েছে। মানিক আরও বলেন, দেশে কোনও আইন নেই। এক অদ্ভুত পরিস্থিতি। আমি নিজে আইন কলেজের অধ্যক্ষ (Professor) ছিলাম। এখন আমি নিজেই আইন ভুলতে বসেছি।
এদিন আদালতে মানিক রাজ্যের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকাঠামোর দিক গুলি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার দায়িত্বে। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্তরের দায়িত্বে রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আমরা বিরুদ্ধে ইডি যে ১০০০ পাতার চার্জশিট দিয়েছে, তাতে নবম দশমের শিক্ষক এবং অশক্ষিক কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে। প্রাথমিক স্তরে অশিক্ষক কর্মীর কোনও সংস্থানই নেই। তাহলে আমি অভিযুক্ত হলাম কী করে।
আরও পড়ুন: Bratya Shashi PC | দল কারও দুর্নীতির দায় নেবে না, জানালেন ব্রাত্য-শশী
প্রাক্তন এই প্রাথমিক শিক্ষা কর্তা আরও বলেন, আমি যেদিন গ্রেফতার হই, সেদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা একটি চিঠি নিয়ে আসেন। সেই চিঠিতে কারোর সই ছিল না। উত্তর দিনাজপুরের এক চাকরিপ্রার্থীর নাম ছিল। সেটি লেখা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে। সেই চিঠির উপর ভিত্তিকরে আমাকে কী করে হেফাজতে নেওয়া হল, বুঝতে পারছি না। চন্দন মণ্ডল বা অন্যরা চাকরি দিয়ে থাকলে আমি কী করব। আদালতের কাছে তাঁর প্রশ্ন, দেশে কি গণতন্ত্র নেই? এটা কি পুলিশ রাষ্ট্র হয়ে গিয়েছে? মৌলিক অধিকার বলে কিছু নেই? যা চলছে, তা সিনেমাতে দেখা যায়। রোজ আসছি আর চলে যাচ্ছি। টাকা নয়ছয়ের আইনে আদালতকে সমস্ত ক্ষমতা দেওয়া আছে। আদালত বিষয়টি দেখুক। এ তো এক অদ্ভুত ফিলোসফি।
এদিন আদালতে হাজির করানোর পরেই মানিক বলেন, মাই লৰ্ড আমার কিছু বলার আছে। আমি রিলিফ চাই। তারপরেই তিনি শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘ একটি ভাষণই দিয়ে দেন। আদালত তাঁকে ২১ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এদিন আদালতে ঢোকার সময় মানিককে হাত উঁচিয়ে তিনি ঠিক আছেন সেটা বোঝায়।