ওয়াশিংটন: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) গত শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Russian President Vladimir Putin) সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা (India-Russia Bilateral Cooperation) সম্পর্কিত ওই আলোচনায় ইউক্রেন দ্বন্দ্বের (Ukraine Conflict) বিষয়টিও ওঠে। মোদি সেখানে পুতিনকে বলেছেন, আলোচনা এবং কূটনীতি (Dialogue and Diplomatic Talk) সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার একমাত্র পথ। ভারতের বার্তা হল, সমস্ত রকম হিংসার পথ বর্জন করে কূটনৈতিক পথ বেছে নেওয়া। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন প্রসঙ্গে ভারত যে পন্থা অবলম্বন করেছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপার্সন বেদান্ত প্যাটেল (State Department’s Principal Deputy Spokesperson Vedant Patel) এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদির কথাগুলি আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি এবং যখন তা পরিণত হবে, তখন আমরা ওই মন্তব্যকে স্বাগত জানাবো। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে অন্যান্য দেশগুলি তাদের সিদ্ধান্ত নেবে। যুদ্ধের প্রভাব কমানোর জন্য আমরা সহযোগীগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলব।” রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব এবং যুদ্ধে বিরতি দেওয়ার জন্য মোদির আহ্বান প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী বলছে, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্যাটেল এই কথা বলেছেন।
গত সেপ্টেম্বরে সমরকন্দে (Samarkand) আয়োজিত এসসিও সম্মেলন (SCO Summit)-এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছিলেন, বর্তমান যুগ যুদ্ধের নয় (Today’s era isn’t of war)। এর পাশাপাশি, তিনি খাদ্য (Food), জ্বালানি নিরাপত্তা (Fuel Security) এবং সার (Fertilizer) সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের উপার খোঁজার উপরেও জোর দিয়েছিলেন।
ভারত কি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারবে? এবিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী মনে করে? তার উত্তরে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র প্যাটেল বলেছেন, “যে কোনও দেশ, যারা শান্তি স্থাপনে এবং এই যুদ্ধে (রাশিয়া-ইউক্রেন) ইতি টানতে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই ইউক্রেনীয় অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড় অংশীদারিত্ব নিয়ে চলতে হবে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ফোনালাপের (Telephonic Conversation) কিছু ঘণ্টা পর মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট সূত্রে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। এখানে উল্লেখ্য, দুই দেশের রাষ্ট্রনেতা আলোচনায় ভারত-রাশিয়া পারস্পরিক সহযোগিতা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক উঠে আসে। তাতে শক্তি সহযোগিতা (Energy Cooperation), বাণিজ্য ও বিনিয়োগ (Trade and Investment), প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা (Defense and Security Cooperation)-র মতো বিষয়গুলিও স্থান পেয়েছে। জি-২০ (G-20)-তে ভারতের সভাপতিত্ব করা নিয়েও প্রেসিডেন্ট পুতিনকে অনেক কথা জানিয়েছেন মোদি। সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (Shanghai Cooperation Organisation)-এও ভারত নেতৃত্ব দেবে, সেখানেও রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ভারত। দুই দেশের রাষ্ট্রনেতা আগামী দিনেও নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলার বিষয়েও সহমত ব্যক্ত করেছেন।