
ইম্ফল: বার্নাড মারাক৷ মেঘালয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে তাঁকে নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে জাতীয় সংবাদমাধ্যমে৷ গত শুক্রবার তাঁর ফার্ম হাউসে হানা দিয়ে ৬৪ জন পুরুষ ও মহিলাকে আটক করে মেঘালয় পুলিস৷ তাদের মধ্যে কয়েকজন কিশোর-কিশোরীও ছিল৷ ওই ফার্মহাউস থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ২১০ লিটার অ্যালকোহল, ৫০০ প্যাকেট নিরোধক৷ পুলিসের অভিযোগ, বার্নাডের ফার্মহাউসে মধুচক্রের আসর বসেছিল৷ যদিও পুলিসের অভিযানকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করে বার্নাড পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাবমূর্তিতে কালি ছেটাতে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা পুলিসকে কাজে লাগিয়েছেন৷ তিনি ভালোমতন জানেন, দক্ষিণ টুরা আসনে তিনি বিজেপির কাছে হারবেন৷’
ঘটনা হল, মেঘালয় সরকারের অন্যতম জোটশরিক হল বিজেপি৷ সেই দলের রাজ্য সহ সভাপতি হলেন বার্নাড মারাক৷ একই সঙ্গে তিনি টুরা জেলা পরিষদের সদস্য৷ ২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বার্নাড বহুবার থেকেছেন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে৷ একসময় গারোদের জন্য পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন৷ হাতে তুলে নিয়েছিলেন অস্ত্র৷
বার্নাড ছিলেন অছিক ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার কাউন্সিলের (এএনভিসি) সদস্য৷ অসম ও মেঘালয় ভেঙে গারোদের জন্য পৃথক রাজ্যের দাবিতে ওই সংগঠন সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে৷ কিন্তু ২০০৪ সালে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে এএনভিসির শান্তি চুক্তির পর সেই আন্দোলন অনেকটাই থিতু হয়ে যায়৷ পরবর্তীতে এএনভিসিতেও ভাঙন ধরে৷ তার দু’বছর পর ১৪-র লোকসভা ভোটের সময় বিজেপিতে যোগ দেন বার্নাড৷
রাজনীতিতে এলেও সে যাত্রা প্রথম দিকে খুব একটা মসৃণ ছিল না৷ ২০১৭ সালে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে বিফ পার্টি দিয়ে বিতর্কে জড়ান বার্নাড৷ সেই বছরই বিজেপি ছাড়েন তিনি৷ আবার ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের সময় ফের যোগ দেন বিজেপিতে৷ দলের এক নেতা জানিয়েছেন, দলীয় কর্মী হিসেবে বার্নাড দারুণ কাজ করেছেন৷ তাঁর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি গারোদের কাছে টানার কৌশল নেয়৷ সেই কাজে সাফল্য মিলেছে৷ ২০২১ সালের গারো হিলস অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের ভোটে জয়ী হন বার্নাড৷