গ্যাংটক: সিকিম (Sikkim) জেলার লোনাক হ্রদের জলের তোড়ে অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এবং ১০৪ জনেরও বেশি নিখোঁজ রয়েছে। খোঁজ মিলছে না বহু সেনা জওয়ানেরও। আচমকা হড়পা বাণের (Flash Flood) জেরে বাঁধের একাংশ ভেসে চলে যায়। যার জেরেই পাহাড় থেকে প্রায় ৫১ হাজার কিউসেক মতো জল নিচে সমতল ভূমিকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এই রাজ্যে আটকে থাকা পর্যটকদের উদ্ধারের কাজও চলছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই ফের সিকিমে বিপর্যয়ের (Sikkim Disaster) আশঙ্কা।
সময়ের সঙ্গে ধ্বংসের ছবি আরও ভয়াবহ হচ্ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা! আপাতত বিপদসীমার নীচ দিয়েই বইছে নদী। পাহাড় জুড়ে জল কিছুটা কমতেই বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে ধ্বংসলীলার ছবি। কাদায় বসে গিয়েছে দোকান, বাড়ি। কোথাও নদীতে অর্ধেক ডুবে গিয়েছে তিনতলা বাড়ি। ২৪ ঘণ্টা পরেও নামছে ধস, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক রাস্তা! এই পরিস্থিতিতে খরস্রোতা তিস্তায় নদীর উপরেই ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফ অর্থাৎ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এনডিআরএফ সেনাবাহিনীর দলগুলি তিস্তা নদীর অববাহিকায় এবং নিম্নধারার উত্তরবঙ্গের ঢালু মাটি এবং দ্রুত প্রবাহিত জলের মধ্য তল্লাশি চালাছে। তিস্তা জলে বাংলায় ভেসে এসেছে আরও ২২টি মৃতদেহ। এরমধ্যে জলপাইগুড়িতে ১৫ টি, কোচবিহারে ৩টি ও শিলিগুড়িতে ৪টি দেহ মিলেছে। বিপর্যয়ে নিখোঁজ শতাধিকের বেশি। আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। খোঁজ চলছে নিখোঁজ জওয়ানদেরও।
আরও পড়ুন: আদিবাসী নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ, পক্সো আইনে মামলা
বিপর্যয়ের জেরে লাচেন এবং লাচুং-এ প্রায় ৩ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যায় রাজ্যের ১৩টি সেতু ধ্বংস হয়েছে, শুধুমাত্র মাঙ্গান জেলাতেই আটটি সেতু ভেসে গিয়েছে। গ্যাংটকে তিনটি এবং নামচিতে দুটি সেতু ধ্বংস হয়েছে। সিকিমের মানগান জেলায় রয়েছে সাকো চো হ্রদ। এই হ্রদ ফেটে বিপর্যয় আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওই লেকের কাছাকাছি এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে প্রশাসনের তরফে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। গ্যাংটকের সিংটামের গোলিতার এলাকা, মানগন জেলার ডিকচু এলাকা, রংপো আইবিএম এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই মানুষজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী তরফে, খাদ্য, চিকিৎসা সহায়তা এবং উত্তর সিকিমে আটকে থাকা নাগরিক ও পর্যটকদের যোগাযোগ সহায়তা প্রদান করছে। আটকে পড়া আরও পর্যটকদের সরিয়ে নিতে হেলিকপ্টার পাঠানো হতে পারে। সেনাবাহিনীর তরফে চালু করা হয়েছে হেল্প লাইন। পূর্ব সিকিমের হেল্প লাইন নম্বর 87569-91895. উত্তর সিকিমের হেল্প লাইন নম্বর 87508-87741 । নিখোঁজ ২৩ জন সেনার সন্ধান পেতেও হেল্প লাইন চালু করা হয়েছে। নম্বর 75883-02011 প্রশানের তরফে সিংতাম, রংপো, দিকচু ও আদর্শগাঁও সহ বিভিন্ন জায়গায় ১৮টি ত্রাণশিবির খুলেছে।
আরও অন্য খবর পড়ুন