skip to content
Sunday, June 16, 2024

skip to content
Homeবিনোদন'আনন্দ' প্রথমে বাংলায় করার কথা ভেবেছিলেন হৃষীকেশবাবু

‘আনন্দ’ প্রথমে বাংলায় করার কথা ভেবেছিলেন হৃষীকেশবাবু

Follow Us :

  • বর্ষীয়ান চলচ্চিত্র সাংবাদিক রঞ্জন দাশগুপ্তর সঙ্গে কথোপকথনের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে। বর্ষীয়ান এই সাংবাদিকে  এর হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল দীর্ঘ দিনের।পরিচালকের অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকার বিভিন্ন সময়ে ভারতের নানান পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। 

আজ বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি পরিচালক হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন। রাজেন তরফদার ‘গঙ্গা’ ছবিটি সম্পূর্ণ করার পর ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না কীভাবে ছবিটির সম্পাদনা করবেন। ছয়ের দশকের প্রথম দিকে সেই সময় ছুটি কাটাতে স্বনামধন্য বলিউডের বাঙালি পরিচালক হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় কলকাতায় এসেছিলেন। ‘গঙ্গা’ ছবিটির সম্পাদনার ব্যাপারে রাজেনবাবু হৃষীকেশবাবুর শরণাপন্ন হন। হৃষীকেশবাবু তখন মুম্বইয়ে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত একজন চিত্রপরিচালক। রাজেন তরফদার আর এক বাঙালি পরিচালক তপন সিনহাকে ‘গঙ্গা’ সম্পাদনার সমস্যার কথাটা জানিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন:‘উমা আসছে’,এবার মণ্ডপে বাজবে পুজোর গান

অবশেষে যৌথভাবে তাঁরা হৃষীকেশবাবুকে এই দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। হৃষীকেশবাবু সাগ্রহে সম্পাদনার দায়িত্ব নিয়ে শ্যুট করা তিনটি সম্পূর্ণ রিল বাতিল করে দেন। অক্লান্ত পরিশ্রম করে হৃষীকেশবাবু ছবিটিকে দাঁড় করিয়ে দেন। এই ছবির মাধ্যমে রাজেন তরফদার পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। কলকাতায় থাকাকালীন হৃষীকেশবাবু ভবানীপুরে হাজরা অঞ্চলে থাকতেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কৃতী ছাত্র ছিলেন। নিজের বাড়িতেই পদার্থবিদ্যা এবং গণিত শেখাতেন ছাত্রদের। এরপর পাঁচ এর দশকের প্রথম দিকে বিমল রায়,নব্যেন্দু ঘোষ এবং সলিল চৌধুরীর সঙ্গে মুম্বইয়ে পাড়ি দেন।

সেখানেই ছবি তৈরির হাতেখড়ি হয় হৃষীকেশের। প্রমথেশ বড়ুয়ার ‘মুক্তি’এবং ভি শান্তারামের ‘দুনিয়া না মানে’ দেখার পর তিনি মুগ্ধ হয়ে যান এবং মনস্থির করেন যে, তিনি ছবির জগতেই নিজের কেরিয়ার তৈরি করবেন। এরপর টানা সাত বছর তিনি পরিচালক বিমল রায়ের ছবির সম্পাদনার কাজ করেন। হৃষীকেশের প্রথম হিন্দি ছবি ‘মুসাফির’। যে ছবি তৈরি করতে বলিউডের দিলীপ কুমার এবং টলিউডের সুচিত্রা সেন বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।

তিনি আজীবন হিন্দি ছবি তৈরি করলেও বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। প্রতি পুজোয় তিনি নিয়ম করে কলকাতায় আসতেন। তপন সিনহা, রাজেন তরফদার ও তরুণ মজুমদার ছিলেন হৃষীকেশবাবুর অভিন্নহৃদয়ের বন্ধু। ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে যৌথভাবে ‘মুসাফির’ ছবির চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছিলেন হৃষীকেশবাবু। তপন সিনহা তাঁর ‘কাবুলিওয়ালা’,’নির্জন সৈকতে’ অন্যান্য বেশ কয়েকটি বাংলা ছবির সম্পাদনার ব্যাপারে বিশেষ পরামর্শ নিয়েছিলেন। প্রমথেশ বড়ুয়া ও সত্যজিৎ রায়ের কাজের প্রতিও ছিল তাঁর অগাধ প্রেম। যাঁদের কাজ দেখে ছবি-নির্মাণ পদ্ধতির অনেক কিছুই তিনি শিখেছিলেন। যা তিনি পরবর্তীকালে তার লেখাতেও স্বীকার করে গেছেন।

অনেকেই জানেন না যে হৃষীকেশবাবু তাঁর প্রথম ছবি ‘মুসাফির’ এ সেসময়ের জনপ্রিয় বাঙালি গায়ক শ্যামল মিত্রকে শুধু গান গাওয়ার সুযোগ করে দেননি, রূপোলি পর্দাতেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। সলিল চৌধুরীর তৈরি করা গানে শ্যামল মিত্রের একমাত্র হিন্দি গান ছিল এটি। এরপর সন্ধ্যা রায়, রবি ঘোষ, সুমিতা সান্যাল হৃষীকেশবাবুর হাত ধরে হিন্দি ছবিতে পা রাখেন। ‘গুড্ডি’ ছবিতে বাংলার সমিত ভঞ্জকে নায়ক হিসেবে দেখা গিয়েছিল হৃষীকেশবাবুর দৌলতে। এ ছাড়াও ‘বাবুর্চি’ ছবিতে তিনি নিয়েছিলেন বাংলার কালী ব্যানার্জিকে। পরিচালক মৃণাল সেন তাঁর জীবনীতে হৃষীকেশ মুখার্জির সঙ্গে সম্পর্কের কথা লিখে গেছেন। হৃষীকেশবাবু কলকাতায় আসলে মাধবী মুখার্জির সঙ্গে দেখা করতেন। দুজনেরই নেশা ছিল দাবা খেলা। দাবায় মশগুল হয়ে যেতেন তাঁরা। কলকাতায় আসলে প্রায়ই সত্যজিৎবাবু ও মৃণাল সেনের সঙ্গে ঋষিদার দেখা হতো। এমনকি তপন সিনহা কিংবা মৃণাল সেন মুম্বই গেলে তাঁর বাড়ি ‘অনুপমা’তেই থাকতেন। ১৯৬৮ সালে হৃষীকেশবাবু একটি ছবির চিত্রনাট্য তৈরি করেন। ছবিটির নাম দিয়েছিলেন ‘আনন্দ সংবাদ’। এটিই হতো হৃষীকেশবাবুর প্রথম বাংলা ছবি। ছবিতে তিনি দুজনের কথা ভেবে রেখেছিলেন। একজন বাংলার উত্তমকুমার অন্যজন বলিউডের রাজ কাপুর। এই বাংলা ছবির কাজ নিয়ে হৃষীকেশবাবু অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন। এমনকি উত্তম কুমার ও রাজ কাপুরের ছবি দিয়ে এই বাংলা ছবির পোস্টার ডিজাইন করাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ বাংলায় ছবিটি তৈরি করা যায়নি।

কারণ সে সময় রাজ কাপুর হঠাৎই খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে তাঁকে বাংলা ছবির পরিকল্পনা ত্যাগ করে চলে আসতে হয়েছিল হিন্দিতে। যে ছবির নাম দিয়েছিলেন ‘আনন্দ’। যা হিন্দি ছবির জগতে একটি কালজয়ী ছবি। হৃষীকেশবাবুর অসংখ্য হিট ছবির মধ্যে ‘আনন্দ’ অন্য এক মাত্রা পেয়েছিল। সর্বস্তরের মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিল এ ছবি। তার প্রতিটি ছবির মধ্যেই অদ্ভুত এক বাঙালি ঘরাণা ধরা পড়েছিল। কমেডি ছবির ক্ষেত্রেও  তিনি একজন সার্থক পরিচালক। উত্তমকুমার এবং রাজ কাপুরের জায়গায় ‘আনন্দ’ হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রাজেশ খান্না এবং অমিতাভ বচ্চন।

যে ছবির নাম ভারতীয় দর্শকরা কখনোই ভুলতে পারবে না। ভারতীয় ছবির ক্ষেত্রে ইতিহাস হয়ে থেকে যাবে। ১৯৬০ সালে ‘অনুরাধা’ ছবির প্রিমিয়ারে কলকাতায় এসেছিলেন হৃষীকেশবাবু। ছবির দুই প্রধান চরিত্রের অভিনেতা বলরাজ সাহানি ও লীলা নাইডুও এসেছিলেন তাঁর সঙ্গে। এই ছবিটি কলকাতায় যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছিল। বাংলার অভিনেতাদের ওপর এই পরিচালকের ছিল অগাধ বিশ্বাস। বিশেষত ছবি বিশ্বাস, উত্তম কুমার, পাহাড়ি সান্যাল, সুচিত্রা সেন, মাধবী মুখার্জি অনেক হিন্দি অভিনেতাদের থেকে বেশি উচ্চমানের বলে তিনি মনে করতেন।। তপন সিনহা-পত্নী অরুন্ধতী দেবীকে তিনি মনে করতেন আন্তর্জাতিক মাপের অভিনেত্রী। তিনি বেশ কিছু বাংলা ছবির হিন্দি রিমেক করেছিলেন বলিউড শিল্পীদের নিয়ে। যেমন ‘গল্প হলেও সত্যি’, ‘ছদ্দবেশী’ ও ‘আমি সে ও সখা’। হিন্দিতে এই ছবি গুলির নাম ছিল ‘বাবুর্চি’ ‘চুপকে চুপকে’ এবং ‘বেমিসাল’। কিন্তু পরিচালকের নিজের কথাতেই সেগুলি নাকি বাংলা ছবিগুলির মানের ধারেকাছে যায় না।
তিনি কলকাতায় আসলে গোলপার্কে গাঙ্গুরাম- এর মিষ্টির দোকানে একবার যেতেনই। বাংলা ছবির পাশাপাশি বাংলার মিষ্টিও ছিল তাঁর অত্যন্ত প্রিয়।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Torsa River Erosion | ফুঁসছে তোর্সা, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আলিপুরদুয়ার-ফালাকাটা
00:00
Video thumbnail
Babri Masjid | বদলাচ্ছে পাঠ্যসূচি, বাদ বাবরি মসজিদ, ইতিহাসের রঙ গেরুয়া?
00:00
Video thumbnail
Prosenjit Chatterjee | প্রসেনজিতকে অপদার্থ বললেন অনামিকা সাহা! তারপর কী হলো দেখুন
00:00
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | হাসপাতালে ভর্তি অভিষেক, অপারেশন হবে, কী হয়েছে?
00:00
Video thumbnail
water crisis | জলের জন্য হাহাকার,পানীয় জলের দাবি, দেখুন কীভাবে বিক্ষোভ চলছে
00:00
Video thumbnail
Ration Scam | আবার রেশন দুর্নীতি! এবার আটা, দেখুন ভিডিও
00:00
Video thumbnail
TMC | BJP | তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে 'হামলা', 'বোমাবাজি' অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে
01:52
Video thumbnail
Top News | কাশ্মীরের নিরাপত্তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অমিত শাহ
34:56
Video thumbnail
Kashmir | Amit Shah | কাশ্মীরের নিরাপত্তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক, উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে থাকবেন অমিত শাহ
04:56
Video thumbnail
Babri Masjid | বদলাচ্ছে পাঠ্যসূচি, বাদ বাবরি মসজিদ, ইতিহাসের রঙ গেরুয়া?
05:59