skip to content
Sunday, June 16, 2024

skip to content
Homeফিচারবিরোধীদের এককাট্টা: পিকে মডেল কোন পথে?

বিরোধীদের এককাট্টা: পিকে মডেল কোন পথে?

Follow Us :

একের বিরুদ্ধে এক।  বিরোধী শক্তিগুলোকে এক মঞ্চে বাঁধতে পারলেই গোটা দেশে বিজেপিকে চাপের মুখে ফেলা সম্ভব। সম্ভব, সর্বভারতীয় স্তরে গেরুয়া শিবিরের বিকল্প হিসেবে কেন্দ্রে ক্ষমতা দখলও। সেই জোট বা মোর্চায় বামেরা থাকলেও কংগ্রেস নয়। কংগ্রেস তথা ইউপিএ’কে মধ্যমণি করে জাতীয় পর্যায়ে বিকল্প সরকার গঠনের অতীত অভিজ্ঞতা শুধুই ব্যর্থতার ইতিবৃত্ত। তাই তার পুনরাবৃত্তি নয়। এমনটা অকপটে কবুল করেছেন তিনি প্রশান্ত কিশোর। তাই জাতীয় ক্ষেত্রে বিরোধী জোটের স্বাভাবিক মিত্র হলেও নেতৃত্বের রাশ আঞ্চলিক দলগুলির হাতে থাকাই বাঞ্ছনীয় বলে মনে করছেন পিকে।

কিন্তু কী ভাবে, নীল নকশা তৈরি করেছেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর? কোনও আবেগ বা রাজনীতির প্যাঁচ পয়জার নয়। স্রেফ সংখ্যাতত্বের আধারে তৈরি সেই নীল নকশা নিয়ে  কি ময়দানে নেমেছেন প্রশান্ত?

গুজরাত হিংসার দগদগে ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে  নরেন্দ্র মোদিকে গান্ধীনগরের তখতে দ্বিতীয় দফায় বসিয়েছিলেন  ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। ইউপিএ দুইয়ের পর রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের একদা প্রচারক মোদিকে দিল্লির সিংহাসনে বসানোর নেপথ্য কারিগরও সেই বিহারী বাবু। বিহারের নীতিশ-লালুর ২০১৫ সালের মহাগঠবন্ধন অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াই এস আর রেড্ডি, পঞ্জাবের ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, তামিলনাডুর এম কে স্তালিন আর ‘বাংলার মেয়ে’ মমতাকে অভূতপূর্ব নির্বাচনী সাফল্য এনে দেওয়ার স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার এই বিহারিবাবুর  এবার রাজনীতির জাতীয় মঞ্চে। লক্ষ্য ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন। ঘটনাচক্রে গত মে মাসে বাংলায় তৃতীয় বার ক্ষমতায় বসার পর সর্বভারতীয় স্তরে নরেন্দ্র মোদির বিকল্প হিসেবে বিরোধীদের বাজি হয়ে উঠতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় মোদি, অমিত শাহদের জুটিকে নাকানি চোবানি খাওয়ানো তৃণমূল নেত্রী যে বিকল্প জোটের মধ্যমণি হবেন সেটাই প্রত্যাশিত।  সেই প্রত্যাশা পূরণেই ফের ময়দানে প্রশান্ত।

আরও পড়ুন:কোনও ফ্রন্টই বিজেপিকে রুখতে যথেষ্ট নয় : পিকে

শরদ পাওয়ার সহ বিরোধী শিবিরে নিজের মতো করে আলোচনা করেছেন প্রশান্ত (পিকে)। প্রশান্ত এরই মধ্যে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, অ-বিজেপি জোট কংগ্রেস নির্ভরতা মুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ সর্বভারতীয় বিজেপিকে লড়তে একমাত্র জাতীয় দলকে ঘিরে বিরোধী ঐক্যের গত দশ বছরের যে অনুশীলন তা পরিহার করাটাই প্রশান্ত মডেলের পূর্বশর্ত। অন্যভাবে বলা যায়,এই মুহূর্তে ভারতের এই সুপ্রাচীন জাতীয় দলটি শুধু নেতৃত্ব হীনতায় কাবু নয়, সাংগঠনিক ভাবেও দিশাহারা। গান্ধী-নেহরু পরিবারতন্ত্র নিয়ে বিদ্রোহ-বিক্ষোভ দানা বাধলেও দ্বিতীয় ইউপিএ আমলেও তার গ্রহণযোগ্যতা সেভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েনি। দীর্ঘ এক দশক ক্ষমতার বাইরে থাকা কংগ্রেসে এখন স্থায়ী সভাপতি পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে। ফলে এহেন সর্বভারতীয় দলের কাছে বিজেপির মতো শক্তির মোকাবিলা আগামী ২০২৪ সালেও সম্ভবপর নয়। এই সার সত্য উপলব্ধি করেই প্রশান্ত কিশোর আঞ্চলিক দলগুলির দিকে নজর দিয়েছেন।

এক্ষেত্রে ভারতের সংসদীয় ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধান কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের লক্ষ্যে গঠিত হলেও তাদের পারস্পরিক সংঘাত অনিবার্য। একদিকে অঙ্গ রাজ্যগুলির অসম বিকাশ, অন্যদিকে দিল্লির সরকারের কেন্দ্রাভিমুখীনতা। কংগ্রেস আমলেও দেশের আর্থিক ও প্রশাসনিক  ক্ষমতার কেন্দ্রিভবন ঘটেছিল। অঙ্গরাজ্যের সঙ্গে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার ভাগিদারী নিয়ে সংঘাতের সূচনা তখনই শুরু। সেই টানাপোড়েনের জেরে ইন্দিরা গান্ধীকে জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়েছিল। এছাড়া রাজ্যগুলির সঙ্গে সংঘাতের জেরে তাঁকে শায়েস্তা করতে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা জারি করার সংস্কৃতি কংগ্রেসের অবদান। বর্তমানে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার এই প্রশ্নে অনেক বেশি আগ্রাসী। শক্তিশালী কেন্দ্র গঠন করতে গিয়ে রাজ্যগুলির সংবিধান স্বীকৃত অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে দ্বিধা করছে না মোদির সরকার। আনুষ্ঠানিক ভাবে ৩৫৬ ধারা জারি না করেও বিরোধী শাসিত রাজ্য প্রশাসনকে পদে পদে হেনস্থা করতে উদ্যত বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার। স্বভাবতই, কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের মোড়কে বিজেপির সঙ্গে আঞ্চলিক দলগুলির বৈরিতা প্রায় সম্মুখ সমরে পর্যবসিত।

প্রতিপক্ষ যখন অভিন্ন, তখন রাজ্যে রাজ্যে বিরোধীদের বিভাজন মোটেই কাম্য নয়। বরং পথের কাঁটা। ক্ষমতায় টিকে থাকতে সেটাই মোদি-শাহের তুরুপের তাস। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে দরকার বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যস্তরে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামা। এছাড়া ভিন্ন কোনো পথ নেই। কিন্তু কংগ্রেসকে কেন্দ্র করে এই জোট গড়ার অতীত অভিজ্ঞতা মোটেই সুখের হয়নি। যদিও এটা ঠিক ক্রমক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেস, দেশের ১৯ রাজ্য ও পাঁচটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল মিলিয়ে প্রায় দুশো আসনে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবে। কারও সঙ্গে জোট গড়লেও ওই আসনগুলো শরিকদের ছাড়বে না কংগ্রেস। বিগত ফলাফলের ধারা বিচার করলে এই মুহূর্তে কংগ্রেসের পক্ষে বিজেপির সঙ্গে একক শক্তিতে পেরে ওঠা খুবই কঠিন।

প্রশান্ত কিশোরের টার্গেট তাই কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বাকি আঞ্চলিক দলগুলোকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসা। পেশাদার ভোট কুশলী, দুর্বল প্রতিপক্ষ কংগ্রেসকে বাইরে রেখে  রাজ্যে রাজ্যে বিজেপির ঘুম কেড়ে নেওয়া আঞ্চলিক দলগুলির ওপর আস্থা রেখেই ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, কেরল, কর্ণাটক, পঞ্জাব, হরিয়ানাসহ এগারোটি রাজ্যের কিছু আসন এবং পাঁচটি কেন্দ্রশাসিত এলাকা মিলিয়ে  প্রায় ২০০ টি আসন রয়েছে, যেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে বিজেপির বিরুদ্ধে। লোকসভার  আসন সংখ্যা ৫৩০।  অতএব কমবেশি আরও ৩৩০ আসন রয়ে গিয়েছে, যেখানে বিজেপি বা তার সহযোগী দলকে লড়তে হবে আঞ্চলিক দলের বিরুদ্ধে। এই জায়গাতেই মোদি-শাহের দুর্বলতা। ‘উইকেস্ট লিঙ্ক অফ ডি চেইন।’ শিকল ভাঙতে সেই দুর্বল জায়গাটায় বিরোধী ঐক্যের হাতুড়ি মারতে চাইছেন কি পিকে ?

প্রশান্ত অবশ্য এখনও নিজে এ বিষয়ে কিছু বলেননি। প্রকাশ্যে শুধু বলেছেন, কংগ্রেসকে নিয়ে বরাবরের মতো বিরোধী জোটের অঙ্ক, ২০২৪ সালেও কষতে চান না তিনি। এরই মধ্যে অবশ্য, শরদ পাওয়ার (এন সি পি), উদ্ধব ঠাকরে (শিব সেনা), তেজস্বী যাদব (আর জে ডি) কংগ্রেসকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব খারিজ করেছে। নিজের অবস্থানে অনড় পিকে।  কংগ্রেস পৃথক ভাবে লড়াই করলেও,বাকি আসনে বিজেপি বিরোধী প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে আঞ্চলিক দলের সাফল্যের হার অনেক বেশি।  সদ্য হওয়া বিধানসভা ভোটে বাংলা, তামিলনাড়ু র মতো রাজ্যে বিজেপি কুপোকাত। তৃণমূল, ছাড়াও কংগ্রেস, বাম বিজেপি বিরোধী শিবিরে ছিলো।  তামিলনাডুতে এই এডিএমকে’র জোটসঙ্গী হিসেবে ছিল বিজেপি। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ওই দুই রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে আঞ্চলিক যথাক্রমে তৃণমূল ও ডিএমকে  পদ্ম শিবিরকে  গো হারান হারাতে সক্ষম হয়েছে। আবার অসমে কংগ্রেস ফের বিজেপির কাছে পর্যুদস্ত। অর্থাৎ বিজেপির সঙ্গে মোকাবিলায় আঞ্চলিক দলের সাফল্যের হার অনেক ঊর্দ্ধে। অর্থাৎ তিনশতাধিক আসনে আঞ্চলিক দলগুলি যদি বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ রুখে তাদের অভিন্ন প্রার্থী দাঁড় করায় তাহলে মোদি-শাহ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেই লড়াইতে বিরোধী জোটের মধ্যমণি হিসেবে স্বাভাবিক পছন্দ মমতা। কেননা বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে তাঁর ট্র্যাক রেকর্ড অন্যদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সেই ভরসায় মমতাকে এগিয়ে রেখে থার্ড ফ্রন্ট নয়, আঞ্চলিক দলগুলির জোট প্রস্তুতি শুরু করেছেন পিকে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
ভারত আমার ভারতবর্ষ (Bharat Amar Bharat Barsho) | বাঙালি যখন ব্যবসায়ী - সুরেন রায়, কিরণ রায়
00:00
Video thumbnail
Good Morning Kolkata | দেখে নিন আজ সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি
00:00
Video thumbnail
Ration Scam | আবার রেশন দুর্নীতি! এবার আটা, দেখুন ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | ভোট পরবর্তী হিংসার পরে প্রশাসনিক ভবন দখলের অভিযোগ জানালেন শুভেন্দু অধিকারী!
02:18
Video thumbnail
Weather Update | পাহাড় ও সমতলে ভারী বৃষ্টি ফের জল বাড়ছে তিস্তায়
05:04
Video thumbnail
Kaustuv Ray | পিছিয়ে গেল রায়দানের তারিখ , বিচারব্যবস্থায় আস্থা আছে জানালেন কৌস্তুভ রায়
11:54:56
Video thumbnail
Narendra Modi | মোদির সঙ্গে রিল বানালেন মেলোনি, ভাইরাল ভিডিও দেখুন
10:06:52
Video thumbnail
Sharad Pawar | Narendra Modi | মোদিকে ধন্যবাদ শরদ পওয়ারের ! কী চলছে মহারাষ্ট্রে?
11:55:00
Video thumbnail
BJP | শুভেন্দুকে ছাড়াই প্রার্থী নির্বাচন বিজেপির?
11:40:17
Video thumbnail
Dooars | Weather Update | একটানা বৃষ্টিতে জলস্ফীতি ডুয়ার্সের একাধিক নদীতে
01:09