কলকাতা টিভি ওয়েবডেস্ক: আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে তালিবান। প্রায় দুদশক পর আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের অনেকটাই বদলে ফেলেছে বলে দাবি করে তাঁরা। শারিয়াতি আইন মেনেই মানবাধিকার ও নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হবে না বলেও জানায় তালিবান। কিন্তু নিজেদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে তালিবান যাই বলুক সেই দাবি মানতে রাজি নন আফগান আমজনতা।
গতকাল বুধবার তালিবানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে পথে নামেন আফগানরা। দেশের দুটি শহরে প্রতিবাদ প্রদর্শন করলেন। ক্ষমতা দখলের পর ইতিমধ্যেই আফগান নাগরিদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের একাধিক অভিযোগ উঠেছে তালিবানের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিল, আসাদাবাদে গুলি চালাল তালিবান
আন্তর্জাতিক কূটনৈতিকমহলের ধারনা, ক্ষমতায় এলেও আফগানিস্তানে এখনও একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মূখীন হতে হবে তালিবানকে। বিশেষ করে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই সঙ্গীন। তালিবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানে আর্থিক সহায়তা বন্ধ রাখার কথাও জানিয়েছে একাধিক বিদেশী রাষ্ট্র। সম্প্রতি আইএমএফ তথা ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের তরফেও আফগানিস্তানে আর্থির সহায়তা রদ করার ঘোষণা করা হয়েছে। এমন অবস্থায় আফগানিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতির পুনরুদ্ধারে তালিবানকে যথেষ্টই বেগ পেতে হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহালমহল।
অর্থনৈতিক অবস্থা ছাড়াও করোনা ভাইরাসেরর মোকাবিলা কিভাবে করবে তালিবান তা নিয়েও যথেষ্টই উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিকমহল। কারণ করোনা ভাইরাসের প্রভাবে গত বছর প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয় সেদেশে। আবার তৃতীয় ঢেউ যখন দরজায় কড়া নাড়ছে সেইসময় তালিবানের উত্থান। এই পরিস্থিতিতে কিভাবে মহামারীর মতো বড় চ্যালেঞ্জকে তারা প্রতিহত করেন তা দেখতে মুখিয়ে রয়েছে বিশ্ব।
আরও পড়ুন: তালিবান বাহিনীর আফগানিস্তান দখলের নেপথ্যে
যদিও কাবুলের অলিন্দে প্রবেশ করলেও রাজনৈতিকভাবে এখনও আরও বড়সর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে তালিবানকে। সেই সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জটি হল নর্দার্ন অ্য়ালায়েন্স। প্রাক্তণ প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি দেশ ছেড়ে পালালেও পালিয়ে যাননি প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লা সালেহ। তিনি ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের পাঞ্জশির প্রদেশ থেকে তালিবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছেন। তাঁরসঙ্গে হাত মিলিয়েছেন প্রাক্তন মুজাহিদিন বিদ্রোহী নেতা আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদও। আগামী দিনে সেই প্রতিরোধ বাহিনী আন্তর্জাতিক সমর্থন কতটা পায় সেটাই দেখার। সুতরাং কাবুলের মসনদে তালিবান বসলেও আগামীদিনে এই সমস্ত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলি বড় মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে তালিবানের সামনে।