সিডনি: নিজের অবর্তমানে সন্তানসন্ততি, পরিবারের ভবিষ্যতের ভাবনা স্বাভাবিক। পরবর্তী প্রজন্মের নিরাপত্তায় ‘ইনভেস্টমেন্ট’ করে মানুষ। কিন্তু নিজের শেষকৃত্য কীভাবে হবে তা অগ্রিম বলে যাওয়া এবং সেই অনুযায়ী অর্থ ব্যয় করা নিঃসন্দেহে অভিনব। ঠিক এই কাজটিই করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল (Ian Chappell)। ৭৯ বছর বয়সি অজি তাঁর শেষকৃত্য কীভাবে হবে তা ভেবে রেখেছেন। সেই ‘অনুষ্ঠান’ আয়োজন করতে অগ্রিম টাকাপয়সা দিয়ে রেখেছেন এক সংস্থাকে।
ক্যানসারে আক্রান্ত চ্যাপেলদের বড় ভাই। মারণ রোগ এখন যে পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে তাতে আরোগ্যের সম্ভাবনা নেই। সে কারণেই আগে থেকেই নিজের শেষকৃত্যের আয়োজন করে রাখলেন। কারও মৃত্যুতে সাধারণত যেভাবে শোকপালন হয় সেরকমটা একদমই চান না চ্যাপেল। তিনি নিজে যেভাবে উপভোগ করেছেন সেই আঙ্গিকেই তাঁকে স্মরণ করা হোক, এমনটাই চান। গম্ভীর মেজাজে নয়, বরং হাতে পানীয়ের গ্লাস নিয়ে ‘রিল্যাক্সড’ মুডে তাঁকে স্মরণ হবে। আর এই সমস্ত কিছু আয়োজনের দায়িত্ব তিনি ‘বেয়ার ক্রিমেশন’ নামে এক সংস্থাকে দিয়েছেন। তার জন্য অর্থ খরচের পালাও সেরে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ত্রিমুকুট জয়ের সাফল্য বিপদ ডেকেছে ম্যান সিটিতে! কী বললেন পেপ গুয়ার্দিওলা
সম্ভবত তিনিই প্রথম আন্তর্জাতিক স্তরের ক্রীড়াবিদ যিনি নিজের শেষকৃত্যের অগ্রিম আয়োজন করলেন। চ্যাপেল ওই সংস্থাকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি যে শেষকৃত্য এবং স্মরণসভা অনুষ্ঠান চান তা যেন তাঁর জীবনযাত্রার সঙ্গে মেলে। কিংবদন্তি ভারতীয় ফুটবলার চুনী গোস্বামীর দাদা মানিক গোস্বামীর শোকসভার ঘটনাও অনেকটা এরকম। ক্যালকাটা ক্লাবে হয়েছিল সেই শোকসভা এবং চিরাচরিত প্রথায় মোটেই হয়নি। আমন্ত্রিতরা পানীয়ের গ্লাস নিয়ে হালকা মুডে আড্ডা দিয়েছিলেন। চুনী গোস্বামী জানান, তাঁর দাদা জীবনটা এভাবেই দেখতেন, এভাবেই যাপন করতেন তাই তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর উপায় গম্ভীর বক্তৃতা নয়, এটাই।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জন্মেছিলেন ইয়ান চ্যাপেল। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলেন তিনি। ৭৫টি টেস্টে ৪২.৪২ গড়ে ৫৩৪৫ রান করেন। ১৯৭১ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত অস্টেলিয়ার অধিনায়কত্ব করেন তিনি। প্রধানত ব্যাটার হলেও লেগ স্পিন করতেন। টেস্ট কেরিয়ারে মোট ২০টি উইকেট আছে তাঁর।