মুম্বই : কথা দিয়েছিলেন। পাশে থাকবেন। সঙ্গে থাকবেন। কিন্তু, মন্ত্রী হবেন না। দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের সেই কথা শুনতে চাইল না দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব। আসরে নামলেন খোদ অমিত শাহ। স্বয়ং, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডাকে দিয়ে অনুরোধ করানো হল। একনাথ শিণ্ডের মন্ত্রিসভায় থাকতে হবে তাঁকে। মুখ্যমন্ত্রী নয়, দেবেন্দ্রকে উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার অনুরোধ (পড়ুন নির্দেশ) দিল্লি নেতৃত্বের। অনুরোধ শেষ পর্যন্ত ফেলতে পারলেন না দেবেন্দ্র। আগের ঘোষণা ফিরিয়ে জানানো হল মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস।
গত কয়েক দিন ধরে মহারাষ্ট্রের নাটকের দিকে যাঁদের নজর ছিল, তাঁরা বলছেন বিষয়টা এত সহজ নয়। সমীকরণটা বেশ কঠিন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসলে ফড়ণবীসকে মুখ্যমন্ত্রী না হওয়ার জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বই নিষেধ করেছিল। কেন্দ্রীয় বিজেপির নীতি অনুযায়ীই একনাথ শিণ্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর মাধ্যমে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছেন মোদি-শাহরা। শিণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার অর্থ, ক্ষমতায় শিবসেনা, এটা দেখানো। বালা সাহেবের আবেগকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেষ্টা করবেন শিণ্ডে। আবার বিজেপির কেউ মুখ্যমন্ত্রী না হয়ে, একটা বার্তা দেওয়া-বিজেপি ক্ষমতা লোভী নয়। কর্নাটক, গোয়া, মধ্যপ্রদেশের মত রাজ্যে বিজেপি বিধায়ক কিনেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ‘আসল’ শিবসেনা শিণ্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করে সেই ক্ষততেও প্রলেপ লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন শাহ-নাড্ডারা।
ঠিক তখনই দলের অন্দরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফড়ণবীস। নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ ফড়ণবীসকে চটাতেও রাজি নন শাহরা। এই ফড়ণবীসের হাত ধরেই মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েছিল বিজেপি। কোনও ভাবে দেবেন্দ্র বিক্ষুব্ধ হয়ে গেলে মহারাষ্ট্রের সমীকরণ টালমাটাল হতে পারে। মোদির সর্বদা গুডবুকে থাকা দেবেন্দ্রকে তাই ‘কষ্ট’ দিতে চায়নি শীর্ষ নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রিত্ব না পেয়ে ফড়ণবীস অসন্তুষ্ট হচ্ছেন, এটা বুঝেই আসরে নামেন শাহ-নাড্ডারা। মুখ্যমন্ত্রী না হলেও উপমুখ্যমন্ত্রী হতে রাজি করান তাঁকে। তার পরই সন্ধে সাড়ে ৭টা। রাজভবনে একনাথ শিণ্ডের পর শপথ নিলেন ফড়ণবীস।
আরও পড়ুন: GST On “Horse Trading”: মুখ ফসকে কি সত্যিটাই বেরিয়ে এল? নির্মলার বক্তব্যে কটাক্ষ বিরোধীদের