বসিরহাট: ভালোবাসার টানে প্রেমিকের বাড়ির সামনে ১৫ দিন ধরে প্রেমিকার ধরনা। প্রেমিকের ঘর দখল করল প্রেমিকা। যদিও বিয়ে মানতে নারাজ প্রেমিকের পরিবার। পলাতক প্রেমিক ও তাঁর বাবা। প্রেমিকার দাবি, তাঁর কাছ থেকে নগদ ১ লক্ষ টাকা ও ৫ ভরি সোনা নিয়েছেন প্রেমিক। ঘটনা বসিরহাটের রাজেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ নেওড়া গ্রামের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, পেশায় দর্জি বছর ২২ এর আলিফ মণ্ডলের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় কাটোয়ার বানমোড়া গ্রামের বছর ২৫-এর সাবিনা খাতুনের। তারপর দীর্ঘ ৬ মাস মেলামেশার পর দুজনের ঘনিষ্ঠতা আরও দৃঢ় হয়। পরিবারের অমতেই বসিরহাটে একটি জায়গায় সামাজিকভাবে বিয়ে করে দুজনে। তখন থেকেই বিপত্তির শুরু। আলিফের পরিবার সাবিনাকে মানতে নারাজ। বারবার বাড়িতে গেলেও সাবিনাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাঁর আরও অভিযোগ, এমনকী তাঁকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়। শেষে গত ১৫ দিন ধরে সাবিনা আলিফের বাড়ির সামনে রোদ, জল উপেক্ষা করে ঠায় বসে থাকেন। এই দেখে গ্রামের মানুষ একটি সালিশি সভা করলেও সেখানে কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। তাঁকে ঘরে নেওয়ার ভয়ে আলিফ ও তাঁর বাবা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এখনও পর্যন্ত তাঁরা কেউই বাড়ি ফেরেননি।
আরও পড়ুন: খড়গ্রাম কাণ্ডে আটক সিভিক ভলান্টিয়ার, গ্রেফতার আরও ১
সাবিনা গ্রামবাসীদের কাছে দাবি করেন, আলিফের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাঁকে মানতে চাইছে না শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকি ঘরে ঢুকতে দিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে তিনি আলিফের ঘর দখল করে নেন। এরপর তাঁর উপর চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। আলিফ পালিয়ে গেলেও সাবিনা স্বামীর ঘর ছাড়তে নারাজ। তাঁর অভিযোগ, শাশুড়ি মেরুদা বিবি তাঁর উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালাচ্ছেন। এমনকী খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর দাবি, তিনি দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সেই ভ্রুণও পরিকল্পনা করে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি তাঁকে নষ্ট করতে চাপ দিয়েছিলেন। এই খবর জানতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা।
সাবিনা যাতে দুবেলা খেতে পারেন, তার জন্য থালা-বাসন, চাল, ডাল ও রান্নার গ্যাস কিনে দেন গ্রামের লোকজন। তাদের বক্তব্য, আলিফ যখন বিয়ে করেই ফেলেছে,তাঁকে ঘরে তুলতে এত সমস্যা কেন। শান্তিপূর্ণভাবে স্বামী-স্ত্রী সংসার করুক। কিন্তু মেরুদা বিবি এই বিয়ে মানতে নারাজ। তিনি বলেন, আমার ছেলের থেকে সাবিনার বয়স বেশি। এর আগেও তাঁর একটি বিয়ে হয়েছিল। সাবিনার কোনও টাকা বা গয়না আলিফ নেয়নি। সে সব বানিয়ে বলছে। আমি এই বিয়ে কিছুতেই মেনে নেব না।