পুরুলিয়া: সরকারি হোম আনন্দমঠের আবাসিক নাবালিকাদের উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। শুক্রবার এই মামলায় হোমের সুপার আত্মসমর্পণ করলেন পুরুলিয়া জেলা আদালতে । শুক্রবার আনন্দমঠের হোমের সুপার সৌমিলী রায় জেলা আদালতের পক্সো স্পেশাল কোর্টে আত্মসমর্পণ করেন।
পুরুলিয়া শহরে টামনা থানার অন্তর্গত শিমুলিয়া গ্রামের কাছেই রয়েছে আনন্দমঠ জুভেনাইল হোম। যে হোমে প্রায় ৪৯ জন আবাসিক নাবালিকা রয়েছে । বিভিন্ন ঘটনায় জড়িয়ে পড়া নাবালিকাদের আদালতের নির্দেশে এই হোমে আশ্রয় দেওয়া হয়। মুক্তিও দেওয়া হয় আদালতের নির্দেশে।
ডিসেম্বর মাস ২০২০ সালে এই হোমের নাবালিকারা জেলা আদালতের বিচারকের কাছে নিজেদের করুণ কাহিনীর কথা জানায়। তাদের অভিযোগ, করেন, হোমের মধ্যে শিশির মাহাতো, আনন্দমঠ হোমের সুপার, আরও একজন অপরিচিত অভিযুক্ত (নাম তারা বলতে পারেনি) এই তিন জন অভিযুক্ত হোমের নাবালিকাদের উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করে।
এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক হোমে তদন্তে যান। ওই তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেন জেলা আদালতের প্রধান বিচারকের কাছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই জেলা আদালতের প্রধান বিচারক জেলার পুলিশ সুপারকে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন- Ghatal: বিচারককে ইট দিয়ে মারার চেষ্টা, ঘাটালে গ্রেফতার যুবক
জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে সদর মহিলা থানায় গত ২৫ জিসেম্বর ২০২০ সালে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় । তার ভিত্তিতেই মামলা শুরু হয়। সামাজিক সুরক্ষা দফতরের করণিক শিশির মাহাতো ও ওই হোমের সুপার সৌমিলী রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়ে। অভিযুক্ত হোমের সুপার সৌমিলি রায় প্রথমে কলকাতা উচ্চ আদালত এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন জানান।
সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি রাজ্যের ডিজির কাছে জানতে চান, কেন অভিযুক্ত হোমের সুপারকে গ্রেফতার করা হয়নি? পুলিসে বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে হলফনামা দিয়ে জানাতে বলেন। এই মামলায় অভিযুক্ত হোমের সুপার সৌমিলী রায় শুক্রবার জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক পস্কো স্পেশাল কোর্টে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক অভিযুক্তের ২০ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।