পূর্ব বর্ধমান: তিনি বরাবরই স্পষ্ট বক্তা হিসেবে পরিচিত। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তাঁর ‘চড়াম চড়াম’ কিংবা ‘নকুলদানা’ মন্তব্যে আলোড়িত হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। এবার তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সী হত্যাকাণ্ডে মুখ খুললেন বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
বৃহস্পতিবার নিহত তৃণমূল নেতার বাড়িতে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘চঞ্চল বক্সীর খুনের ঘটনায় দলের যদি কেউ জড়িত থাকে তাঁকে গুলি করে মারা উচিত।‘ অনুব্রত আরও বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি, প্রকৃত দোষীদের ১৫ দিনের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায়, আমি ভয়ঙ্কর খেলা খেলে দেব।‘ পাশাপাশি, চঞ্চল বক্সীর খুনের ঘটনায় বিজেপির হাত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বীরভূমের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা। চঞ্চল বক্সী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এলাকায় জনপ্রিয় ও নির্বিবাদী মানুষ বলে পরিচিত ছিলেন চঞ্চল বক্সী। তাঁর এই অকাল মৃত্যু কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।‘ এই দুর্দিনে নিহত চঞ্চল বক্সীর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয় পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রামের তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সির। অভিযোগ, সেদিন দুপুরেদলীয় কর্মসূচির পর খাওয়া-দাওয়া সেরে বাইকে চড়ে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে দেবসালায় ফিরছিলেন চঞ্চল বক্সী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাবা আউসগ্রামের দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সিও।
আরও পড়ুন: খুনির শাস্তির দাবিতে পঞ্চায়েত বোর্ড ভাঙার হুশিয়ারি মৃতের বাবার
পুলিশ সূত্রে খবর, জঙ্গলের মাঝখানেই আনুমানিক দুপুর ৩ টে নাগাদ রাস্তা আটকে দাঁড়ায় পাঁচ জন আততায়ী। সেখানেই পরপর ৫ রাউন্ড গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হন চঞ্চল বক্সী। পিঠে বগলে ও পেটে তিনটে গুলি লাগে তাঁর। গেরাই অঞ্চলের গ্রামবাসীরা তাঁকে নিয়ে যায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকেরা। তবে আউশগ্রাম থানা না আসানসোল কমিশনারেট গোটা ঘটনার তদন্তভার কোন থানা গ্রহণ করবে তা নিয়ে চলতে থাকে টানাপোড়েন। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল বুধবার ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। তারপর গতকাল বুধবার আউসগ্রামে একটি প্রতিনিধি দল পাঠায় রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: পরা যাবে না জিন্স-টিশার্ট, কর্মীদের কড়া নির্দেশ জেলাশাসকের
দলীয় সূত্রে খবর, এলাকায় রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন চঞ্চল বক্সী। বিধানসভা নির্বাচনের সময় আউসগ্রামের যুব তৃণমূল সভাপতি হিসেবে তাঁর কাজে সন্তুষ্ট দল। এমন একজন যুব নেতার আকস্মিক মৃত্যুতে নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার অনুব্রত’র মন্তব্যে সেই ইঙ্গিত আরও স্পষ্ট হল বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল।