বোলপুর: ফের বিস্ফোরক বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিশ্বভারতীর শিক্ষাকর্মীসহ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও সরব উপাচার্য। এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিশ্বভারতী আজ পশ্চিমবঙ্গ ভারতী বা বোলপুর ভারতী হয়ে গিয়েছে। উপাসনাগৃহের সামনের রাস্তা রাজ্য সরকার নিয়ে নেওয়ায় ঐতিহ্যবাহী ভবন ও ভাস্কর্যের ক্ষতি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷
দেশের ইতিহাসে প্রথম একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে৷ উত্তরাখণ্ডের রামগড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বাড়ি ছিল। সেই বাড়ির আশপাশে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় স্যাটেলাইট ক্যাম্পাস তৈরির জন্য বিশ্বভারতীকে ৪৬ একর জমি দিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। নৈনিতাল থেকে ৩২ কিলোমিটার উপরে এই ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে। বিশ্বভারতীর আবেদন মতো ১৫০ কোটি টাকাও বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক।
সেই প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, ভারতে প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছে৷ আমি ও কেন্দ্রীয় সরকার নাকি বিশ্বভারতীকে এখান থেকে নিয়ে চলে যাচ্ছি৷ অনেকে বলছেন, এবার নাকি বদলি করে দেওয়া হবে! এটা কি সম্ভব? আমি জানতাম বিশ্বভারতীর শিক্ষকরা বুদ্ধিমান। কিন্তু, যেসব শিক্ষক এই ধরনের কথা বলেন তাঁদের কী বলব! এরপরই তিনি হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, যদি সুযোগ থাকত, এই ধরনের শিক্ষকরা যাতে এখানে পড়াতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা আমি করতে পারতাম৷ কিন্তু সেই সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: Visva Bharati : অনলাইন বৈঠকে উপাচার্যকে অশ্লীল গালাগাল, অস্বস্তিতে বিশ্বভারতী
গত ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনয় ভবনের শারীরশিক্ষার মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎবাবু বলেন, সবার মধ্যে একটা আশঙ্কা দেখছি, এবার কলকাতার বদলে রামগড়ে বদলি করা হবে৷ কিন্তু, এখানকার শিক্ষকদেরই কি এটা উচিত নয় যে রামগড়ে গিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় করব৷ আমরা সেখানে না গেলে তো সেটা উত্তরাখণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাবে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে না৷ যেমন এখানে বিশ্বভারতী পশ্চিমবঙ্গ ভারতী বা বোলপুর ভারতী হয়ে গিয়েছে। আমি রামগড় ক্যাম্পাসকে উত্তরাখণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে দেব না।
এছাড়াও, উপাসনাগৃহের সামনের রাস্তা নিয়েও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। রাজ্যকে পরোক্ষে একহাত নিয়ে বলেন, বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী ভবনগুলি সংস্কার করা হচ্ছে৷ কিন্তু, ওই রাস্তা দেখলেন তো আমাদের থেকে কীভাবে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে ভারী যান চলাচল করছে৷ এতে পুরনো ভবন, ভাস্কর্যের ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুরাতত্ত্ববিদরা৷ আমরা কত প্রতিবাদ করেও রাস্তা নিয়ে কিছু করতে পারিনি, বলেন তিনি।
বিশ্বভারতীর প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, কেবল সমালোচনা করলে হয় না। উনি সর্বময় কর্তা, উনি করুন। তিনি কী করছেন, সেটা জানবার খুব ইচ্ছে! তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, বিশ্বভারতীর উপাচার্য একটা পাগল। আমি অনুরোধ করব উপাচার্যকে চিকিৎসা করানোর জন্য।