কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ‘টিপ পরছোস কেন’? শনিবার ঠিক এই ভাবেই বাংলাদেশের ঢাকার (Bangladesh Bindi Incident) তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকা লতা সমাদ্দারকে হেনস্থা করে পুলিস। ওই শিক্ষিকা ঘটনার প্রতিবাদ (Bindi Controversy) করলে তাঁর উপরে নির্যাতনের অভিযোগও ওঠে। যে ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল বাংলাদেশ। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে শহরের রাস্তা জুড়ে চলছে প্রতিবাদ। কপালে টিপ পরে যে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন পুরুষেরাও।
কী হয়েছিল?
ঘটনাটির সূত্রপাত শনিবার সকালে। আর পাঁচটা দিনের মতোই বাংলাদেশের ঢাকার তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকা লতা সমাদ্দার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কলেজে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় এক পুলিসকর্মী তাঁকে জিজ্ঞেস করেন ‘টিপ পরছোস কেন’? এর পরেই ওই শিক্ষিকা প্রতিবাদ করতে গেলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন ওই পুলিসকর্মী। এই খানেই শেষ নয় ওই শিক্ষিকার অভিযোগ, তাঁর পায়ের পাতার উপর দিয়েই বাইক চালিয়ে চলে যায় ওই পুলিসকর্মীটি। এই বিষয়ে ঢাকার শের-ই-বাংলা নগর থানায় লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনার পরই উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠতে থাকে প্রতিবাদের ঝড়। একাংশের ধারণা ওই ব্যক্তি মুসলিম বলেই টিপের বিরোধিতা করেছেন।কারণ টিপ জিনিষটা ইসলামবিরোধী। গোটা ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকায় পথে নামেন মহিলারা।
এই ঘটনার আঁচ পৌঁছয় বাংলাদেশের সংসদেও। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও এই ধরনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা (Suborna Mustafa) বলেন, এখানে হিন্দু-মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ এমনকি সে বিবাহিত না বিধবা সেটা বিষয় নয়। টিপ পরতে না দেওয়া এক ধরনের ধর্মান্ধ ও নারীবিদ্বেষী মানুষের নোংরা মানসিকতার প্রতিফলন। এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও মহিলা পরিষদের অভিযোগ। সেই সঙ্গে দেশে অসহিষ্ণুতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।যে মন্ত্রণালয় এই বিষয়টি দেখা-শোনা করে তারা যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।
আরও পড়ুন- প্রথম পাকিস্তানি মহিলা আরুজ গ্র্যামি জিতলেন
এই ঘটনার প্রতিবাদে নেট দুনিয়ায় সরব হয়েছেন পুরুষরাও। একধিক পুরুষ নিজেদের টিপ পরার ছবি পোস্ট করেছেন প্রতিবাদ জানাতে। বাংলাদেশের টিপ বিতর্কের আঁচ পড়েছে ভারতেও। একাধিক ভারতীয় প্রতিবাদ জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
অন্যদিকে বাংলাদেশের পুলিসের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার জানিয়েছেন, টিপ বিতর্কের বিষয়টির তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই শিক্ষিকা অভিযুক্তর নাম জানাতে পারেননি। এমনকি তিনি বাইকের নম্বরটাও পুরো দিতে পারেননি। যে কারণে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে দেরি হচ্ছে। অভিযুক্ত পুলিসকে খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।