কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধপরিস্থিতি ঘিরে ইউরোপে উত্তেজনা তুঙ্গে (War situation between Ukraine and Russia)। এর মধ্যেই রবিবার ন্যাটোর (NATO) প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘রাশিয়া আক্রমণ করলেও ইউক্রেনে কমব্যাট ফোর্স পাঠানোর কোনও পরিকল্পনা ন্যাটো-র নেই। ব্রিটেনের এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে ন্যাটো প্রধান বলেন, ‘ইউক্রেন ন্যাটো-র সদস্যভুক্ত দেশ নয়। সেই কারণে রাশিয়া আক্রমণ করলেও ন্যাটোর কোনও সৈন্য ইউক্রেনে পাঠানো সম্ভব নয়। তবে, আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী হল ইউক্রেন। তা বিবেচনা করে ইউক্রেনকে তারা সমর্থন করবে।’
বিগত কিছু দিন ধরেই ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চরম উত্তেজনা চলেছে। যার আঁচ পড়েছে গোটা ইউরোপে। আমেরিকা পর্যন্ত মিত্র দেশ ইউক্রেনের ভবিষ্যত্ নিয়ে চিন্তিত। যে কোনও সময় রাশিয়া ইউক্রেনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ ন্যাটোর জোটভুক্ত জোটগুলি রাশিয়াকে সংযত হতে বলে সতর্কও করেছে। কিন্তু, তার পরেও উত্তেজনার আঁচ এতটুকু কমেনি। ইউক্রেন সীমান্তে এক লক্ষের উপর সেনা মোতায়েন করে রেখেছে রাশিয়া। ভ্লাদিমির পুতিনের ভাবগতিক ভালো না ঠেকায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে ইউক্রেনে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে। ২৫ জানুয়ারি পেন্টাগনের তরফে সেনা পাঠানোর খবর নিশ্চিতও করা হয়। যুদ্ধ বাধার আশঙ্কায় মার্কিন নাগরিকদের ইউক্রেন থেকে ফিরে আসতেও বলা হয়েছে। ইউক্রেনের মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদেরও দেশে ফিরতে বলা হয়। তবে, রবিবার ন্যাটো প্রধান ঘোষণার পর, নতুন করে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Ukraine: ইউক্রেন নিয়ে শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করবেন ম্যাক্রোঁ
কী কারণে ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার বিবাদ?
ইউক্রেন একসময় সোভিয়েত ইউনিয়ানের অংশ ছিল। কিন্তু সোভিয়েত ছাড়ার পর ইউক্রেনে দু’টি রাজনৈতিক ধারা স্পষ্ট হয়। সেখানে এক অংশের মানুষ চায় পশ্চিম ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে এবং নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য ন্যাটো সামরিক জোটের সদস্য হতে। অপর অংশ রুশ প্রভাব বলয়ে থাকার পক্ষপাতী, কারণ ইউক্রেনের জনসংখ্যার বিরাট অংশ রুশ ভাষাভাষী, তারা জাতিগত ভাবেও রুশ। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক যোগাযোগ।
এর পর ২০১৪ সালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নে সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করতে এগিয়ে এলে, রুশ প্রধান পুতিন তাঁকে বাধা দিলে, সেই চুক্তি ভঙ্গ হয়। তার পরেই জনরোষের মুখে পড়ে প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে দেশ ছাড়তে হয়। এখন যারা কুরশিতে তারা ইউরোপ ইউনিয়ান পন্থী। তাই ২০১৪-র পর থেকেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েছে।