কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে (Vladimir Putin) ক্ষমতাচ্যুত করার ডাক দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (US president Joe Biden)। ইউক্রেনে বিগত একমাস ধরে চলা রুশ আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে পুতিনকে ‘কসাই’ বলতেও কুণ্ঠা করেননি বাইডেন।
এর আগে রুশ প্রেসিডেন্টকে ‘যুদ্ধ অপরাধী’ও বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু, ইউক্রেনের সীমান্ত লাগোয়া পোল্যান্ডের ওয়ারশ শহরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পুতিনকে যে ভাবে তিনি উৎখাতের ডাক দিয়েছেন, মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশের কাছেও তা নজিরবিহীন বলেই মনে হয়েছে। বিড়ম্বনাও বেড়েছে আমেরিকার। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এর বাজে প্রভাব পড়বে বলেই তাঁরা মনে করছেন। তাই বাইডেন বিতর্ক ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি বিবৃতি দিতে হয়েছে মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে (Antony Blinken)।
বাইডেন বিতর্কের সূত্র ধরে মার্কিন বিদেশসচিব বলেন, ‘রাশিয়ার শাসন ক্ষমতা পরিবর্তনে আমেরিকার কোনও কৌশল নেই। অন্য কোনও দেশের ক্ষেত্রেও নয়।’ শনিবার পোল্যান্ডে রুশ প্রেসিডেন্টের নাম করেই বাইডেন বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন একজন কসাই, উনি ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যকে ‘মস্কোর শাসন ক্ষমতা পরিবর্তনের ডাক’ বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন Russia-Ukraine Conflict: পুতিনকে ‘কসাই’ বলে আক্রমণ বাইডেনের
কোনওরকম প্ররোচনা ছাড়া রাশিয়া যে ভাবে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়েছে, তা নিয়ে সমালোচনাও শোনা গিয়েছে বাইডেনের মুখে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিমত, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কোনও মানে হয় না। পুতিন হিংসার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন বলেও মন্তব্য করেন বাইডেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দানা বাঁধা বিতর্ককে লঘু করতে হোয়াইট হাউসের ব্যাখ্যা, রাশিয়ায় পুতিনের ক্ষমতা বা ক্ষমতা থেকে তাঁকে উৎখাত করা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও আলোচনা বাইডেন করেননি। যাবতীয় বিতর্ক উড়িয়ে হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বিশ্বের গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন বাইডেন। রুশ প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের কথা তিনি বলতে চাননি।’ সোজা কথায়, বাইডেনের মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের ওই আধিকারিকের ব্যাখ্যা, শনিবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যা বলতে চেয়েছেন, সহজ ভাবে বললে, পুতিনকে ইউক্রেন বা অন্য কারও বিরুদ্ধে আগ্রাসনের ক্ষমতা দেওয়া যাবে না।
বাইডেনের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে রুশ সরকার। ‘রাশিয়া কে শাসন করবে, তা মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপর নির্ভর করে না।’ ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসকে বলেন, ‘একজন রাষ্ট্রনেতার উচিত তাঁর মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করা। এই ধরনের ব্যক্তিগত অপমানসূচক মন্তব্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রকে সংকুচিত করে। এ বিষয়ে আমেরিকার সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’