আর্জেন্তিনা–২ পোল্যান্ড–০
(অ্যালেক্সি ম্যাক অ্যালিস্টার, জুলিয়ান আলভারেজ)
মেক্সিকো–২ সৌদি আরব –১
(মার্টিন, চাভেজ) (সৈয়দ আল দাউসানি)
এবারের বিশ্ব কাপের সেরা ম্যাচ খেলল আর্জেন্তিনা। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া আর্জেন্তিনার কাছে ম্যাচটা ছিল প্রায় ফাইনাল। নক আউটে যেতে হলে জিততেই হত ম্যাচটাকে। সেই ব্যাপারটাকে মাথায় রেখে কিক অফ-এর সঙ্গে সঙ্গে পোল্যান্ড ডিফেন্সে ধুলো উড়িয়ে দিল লিওনেল স্কালোনির ছেলেরা। মাঠের যেখানে বল সেখানেই কোনও কোনও আর্জেন্তিনার প্লেয়ার। গোল চাই গোল। আর পোল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল গোল না খাওয়া। সেই লক্ষ্যে শুরু থেকেই চার ডিফেন্ডারের সামনে চার মিডফিল্ডারকে রেখে তারা আর্জেন্তিনাকে আটকাতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রবল ইচ্ছাশক্তি, দুরন্ত গতি এবং দুর্দান্ত স্কিলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত পাল্লা দিতে পারল না। হেরে গেল জোড়া গোলে। গ্রুপ সি-তে এক নম্বরই হল লিওনেল মেসিরা। ম্যাচ হেরেও গ্রুপে দু নম্বর হয়ে পোল্যান্ডও গেল নক আউটে। দুর্ভাগ্য মেক্সিকোর। শেচ ম্যাচে তারা সৌদি আরবকে হারাল ২-১ গোলে। পোল্যান্ডের মতো তাদের পয়েন্টও হল চার। কিন্তু গোল পার্থক্যে পোল্যান্ড গেল নক আউটে। প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্তিনা খেলবে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। আর পোল্যান্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী হবে ফ্রান্স।
তবে তার আগে আর্জেন্তিনা বুধসন্ধ্যায় বোঝাল কেন তাদেরকে উপেক্ষা করা যাবে না। প্রথম ম্যাচে সৌদির কাছে হারের পর মেক্সিকোর বিরুদ্ধেই মেসি এবং তাঁর সতীর্থরা নিজেদের স্বরূপ দেখিয়েছিলেন। তবে নিজেদের সেরাটা তারা রেখে দিয়েচিলেন পোল্যান্ডের জন্য। পোলিশ গোলকিপার উজসিয়েক স্কেজেনেস্কি খেলেন জুভেন্তাসে। শুধু অসংখ্য নিশ্চিত গোল বাঁচানোই নয়, তিনি লিওনেল মেসির পা থেকে বেরনো পেনাল্টিও বাঁচিয়েছেন। বিরতির একটু আগে দূর থেকে ভেসে আসা একটা বল লক্ষ্য করে হেড করতে উঠেছিলেন মেসি। বলটা ফিস্ট করতে গিয়েছিলেন পোলিশ গোলকিপার। কিন্তু তাঁর হাত বলে না লেগে মেসির মুখে লাগে। গোটা আর্জেন্তিনা টিম পেনাল্টির জন্য সোচ্চার হয়। কিন্তু মেসির উঁচু শট স্কেজেনেস্কি বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ডান হাত দিয়ে চাপড়ে বের করে দেন। তবে এর ফলে হতোদ্যম হওয়া তো দূরে থাক দ্বিগুণ উৎসাহে ঝাঁপিয়ে পড়ল আর্জেন্তিনা।
গোল এল বিরতির ঠিক পরেই। ৪৬ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের জোরালো শট নিলেন মিডফিল্ডার অ্যালেক্সি ম্যাক অ্যালিস্টার। তেইশ বছরের এই ছেলেটা খেলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ব্রাইটন অ্যান্ড হোভে। শটে এত জোর ছিল এবং আচমকা শটটা নেওয়ায় পোল্যান্ড গোলকিপার কিছু করতেই পারেননি। তবে একটা গোলে কি আর ক্ষুধা মেটে চ্যাম্পিয়ন হতে আসা টিমের। তাই ৬৭ মিনিটে আবার গোল খেল পোল্যান্ড। এবার বক্সের মধ্যে ঢুকে ডান পায়ের গড়ানে শটে গোল করলেন জুলিয়েন আলভারেজ। বাইশ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার খেলেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে। এর পরেও গোল করার সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্তিনা। লওতারা মার্টিনেজ সামনে শুধু গোলকিপারকে পেয়েও বলটা উড়িয়ে দিলেন বারের উপর দিয়ে। মেসি কেমন খেললেন? খুব খারাপ নয়। আবার মেসির মতো নয়। এই গতির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া এই ৩৫ বছর বয়সে তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তবে মেসি মাঠে থাকলে বিপক্ষ সব সময়েই চাপে থাকে। তাই তাঁকে দরকার। প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্তিনার সামনে অস্ট্রেলিয়া। মেসিদের পক্ষে খুব কঠিন হবে না। তাঁদের আসল লড়াই তার পর থেকে।