ইস্তানবুল: তুরস্ক-সিরিয়াকে (Turkey-Syria Earthquake) মাটিতে ধসিয়ে দিয়ে যাওয়া ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। প্রতি ঘণ্টায় ঊর্ধ্বমুখী এই সংখ্যা। তার মধ্যে হাড়হিম করা ঠান্ডা, বরফ, বৃষ্টির প্রতিকূলতা কাটিয়ে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিদেশি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। যার মধ্যে রয়েছে ভারতীয় দলও (Indian Resque Team)। এত চোখের জল, হাহাকারের মধ্যেও এই ভূমিকম্প কেড়ে নিয়েছে ২২০০ বছরের ইতিহাস। তুরস্কের গাজিয়ানতেপ দুর্গ (Gaziantep Castle) হল পৃথিবী বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র (Tourist Spot) ও ঐতিহাসিক স্থান (Historical Place)। যেখানে এতদিন চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল রোম সাম্রাজ্যকালের (Roman-era) প্রাচীন দুর্গ। এই দুর্গের প্রায় অর্ধেকটাই ভূমিকম্পে ভেঙে গিয়েছে।
মহাবিপর্যয়ের এই দুঃসময়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোগান ভূমিকম্প বিধ্বস্ত ১০টি প্রদেশে তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা (State of Emergency) জারি করেছেন। প্রসঙ্গত, এই জরুরি অবস্থা শেষ হবে ১৪ মে। তার কয়েকদিন পরেই দেশে সাধারণ নির্বাচন। যে ভোটে এর্দোগান ২০ বছর পদে থাকার লড়াইয়ে অংশ নেবেন। তুরস্কে শেষবার জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল ২০১৬ সালে। ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর জারি করা জরুরি অবস্থা প্রায় ২ বছর ছিল।
আরও পড়ুন: Turkey-Syria earthquake: ভাইকে বাঁচাতে ধ্বংসস্তূপের নীচে ১৭ ঘণ্টা, বিশ্বময় ভিডিয়ো ভাইরাল
গাজিয়ানতেপ দুর্গের নাম আগে ছিল আইনতাব। ১৯২০ সালে ফরাসি বাহিনীকে প্রতিরোধের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিকে স্মরণে রেখে গাজি অর্থাৎ যোদ্ধা শব্দটিকে যোগ করে গাজিয়ানতেপ নামকরণ হয়। গাজিয়ানতেপ পর্বতের শীর্ষে এই দুর্গটি নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রথম চোটের ভূমিকম্পের দুর্গের যথেষ্ট ক্ষতি হয়। কিন্তু, একের পর এক আফটার শকে পুরোপুরি ধসে পড়ে প্রাচীন এই দুর্গের বিরাট অংশ।
রোমান আমলে দ্বিতীয়-তৃতীয় শতাব্দীতে ওয়াচ টাওয়ার হিসেবে এই দুর্গের নির্মাণ। তারপর বছরের পর বছর ধরে এই দুর্গ আড়েবহরে বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫২৭-৫৬৫ খ্রিস্টাব্দে বাইজেনটাইন সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ানের (Byzantine Emperor Justinian) আমলে এই দুর্গ আরও বড় হয়ে বর্তমানের রূপ নেয়। পরে তুরস্ক সরকার এটিকে মিউজিয়ামে রূপান্তরিত করে। যা দেখতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক আসতেন।