skip to content
Monday, June 17, 2024

skip to content
Homeআন্তর্জাতিকLenin: কলকাতার লেনিন, লেনিনের কলকাতা

Lenin: কলকাতার লেনিন, লেনিনের কলকাতা

Follow Us :

কলকাতা: কবি কি সত্যিই যিশুর দেখা পেয়েছিলেন? যখন তিনি লিখেছিলেন, ‘স্তব্ধ হয়ে সবাই দেখছে, / টালমাটাল পায়ে / রাস্তার এক পার থেকে অন্য পারে হেঁটে চলে যায় / সম্পূর্ণ উলঙ্গ এক শিশু !’ … এই শহরের ঠিক কোন অঙ্গে সেই নাবালক এঁকে দিয়েছিল তার পদচিহ্ন? পরের পংক্তিতেই কবি নীরেন চক্রবর্তীর তন্ময় নিবেদন, ‘খানিক আগেই বৃষ্টি হয়ে গেছে চৌরঙ্গিপাড়ায়।‘ ধরা যাক, সে অঞ্চল এই প্রবীণা শহরের ধর্মতলা মোড়, ধরা যাক, সে এক নিমগ্ন দুপুর ! কোনও ধাবমান যানের দিকে না তাকিয়ে তবে কী দেখছিল সেই সদ্য হাঁটতে শেখা মানবক? কে জানে ! তবে দীর্ঘদিন ধরেই কেমন যেন মনে হয়, ওই তন্ময় নগ্ন শিশুর চোখ ভরে ছিল সামনেই ঠায় রদ্দুরে দাঁড়িয়ে থাকা ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ (Vladimir Ilyich Ulyanov), আমাদের লেনিন(Lenin)!

তখন দেওয়ালে দেওয়ালে বিপ্লবের তত্ত্ব ! কী যেন ছিল ওই সময়ের জঠরে, একটা না-আসা সুখ, মন-খারাপ করা বিকেলে হঠাৎ কানে ভেসে আসা প্রেমিকার পদশব্দের মতো। মানচিত্রে যে ছাত্র-যৌবন লাল পেনসিল দিয়ে চিহ্নিত করে দিত বিশ্বের তৃতীয়াংশ, সমাজতন্ত্রের (Socialism) এলাকা, তার গলায় আপনিই গুনগুন করে উঠত সলিল-হেমন্তর গান (Songs of Salil and Hemanta) — ‘পথে এবার নামো সাথী / পথেই হবে পথ চেনা / জনস্রোতে নানান মতে / মনোরথেরও ঠিকানা, / হবে চেনা হবে জানা।‘ পথে সে নেমেছিল, প্রাণও তো দিয়েছে অকাতরে, গত শতকের শেষ-সত্তর দশকে মনেও হয়েছিল, একটা স্ফুলিঙ্গ থেকেও জ্বলতে পারে বিপ্লবের আগুন। সে আজ কত কত অতীতের গভীরে। তবু ধর্মতলায় নিবিষ্ট লেনিনের চোখ, অপলক।

তারও কতকাল আগে চলে গেছেন লেনিন। সে ১৯২৪ সালের ২১ জানুয়ারি। বিশ্বাস করেননি অনেকে, এত কাজ ফেলে রেখে ঘুমোতে পারেন লেনিন? বেরটোল্ট ব্রেখট (Bertolt Brecht) লিখলেন — লেনিন (Lenin) যেদিন মারা গেলেন, সামনে থাকা সৈন্যের না-কি বিশ্বাসই হয়নি, এমনই এক গল্পের কথা। সৈন্য বললেন, আমি মোটেই বিশ্বাস করিনি, বিশ্বাস করতে চাইনি। আমি ভেতরে গেলাম, তাঁর কানের কাছে মুখ নিয়ে চিৎকার করে বললাম, ‘ইলিচ, শোষকরা এগিয়ে আসছে !’ লেনিন উত্তর দিলেন না। তখন আমি বুঝলাম, তিনি মারা গিয়েছেন।    

লেনিন কী কলকাতাকে সবথেকে বেশি টেনেছিল?

লেনিন কী কলকাতাকে সবথেকে বেশি টেনেছিল? অবশ্য শুধু কলকাতা বলি কেন, বুদ্ধির গোড়া ধরে টান দিয়েছিল তো গোটা বিশ্বকেই ! সেই তত্ত্ব হল, সাম্রাজ্যবাদ (Imperialism) পুঁজিবাদের (Capitalism) সর্বোচ্চ পর্যায়। এ সেই থিওরি, যা বিংশ শতাব্দীকে চিনে নিতে আলো ধরেছিল। একটি গ্রন্থ, আকারে বিরাট বড়ও নয় তা, একটি মোমবাতি থেকে কোটি হাতে কোটি মোমবাতি জ্বেলে দিল, জেগে উঠেছিল রক্তিম চেতনা, কার আগে প্রাণ কে করিবে দান, তার লাগি কাড়াকাড়ি।

সোভিয়েত ইউনিয়ন (Soviet Union), তারপরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের(World War II)  রুধিরাক্ত পথ বেয়ে সমগ্র পূর্ব ইয়োরোপে (Europe) লাল পতাকা। চীন(China), কিউবা (Cuba), ভিয়েতনাম (Vietnam) … দুনিয়াটাকে বদলে দিল যেন! যারা পড়েছিল পায়ের নীচে, তারাই উঠে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করল — জাগতে রহো। রবীন্দ্রনাথ (Rabindra Nath Tagore) রাশিয়ায় গিয়ে মুখোমুখি হলেন সেই বিস্ময়ের, রাশিয়ার চিঠিতে লিখলেন, ‘রাশিয়ায় অবশেষে আসা গেল। যা দেখছি আশ্চর্য ঠেকছে। অন্য কোনো দেশের মতোই নয়। একেবারে মূলে প্রভেদ। আগাগোড়া সকল মানুষকেই এরা সমান করে জাগিয়ে তুলছে।‘ এর পরেই বাঙালি কবির সেই বিশ্বজনীন উপলব্ধি, ‘চিরকালই মানুষের সভ্যতায় এক দল অখ্যাত লোক থাকে, তাদেরই সংখ্যা বেশি, তাঁরাই বাহন ; তাদের মানুষ হবার সময় নেই ; দেশের সম্পদের উচ্ছিষ্টে তারা পালিত। সব-চেয়ে কম খেয়ে, কম পরে কম শিখে কি সকলের পরিচর্যা করে ; সকলের চেয়ে বেশি তাদের পরিশ্রম, সকলের চেয়ে বেশি তাদের অসম্মান। কথায় কথায় তারা উপোস করে, উপরওয়ালাদের লাথি-ঝাঁটা খেয়ে মরে — জীবনযাত্রার জন্য যত কিছু সুযোগ সুবিধে, সবকিছুর থেকেই তারা বঞ্চিত। তারা সভ্যতার পিলসুজ, মাথায় প্রদীপ নিয়ে খাড়া দাঁড়িয়ে থাকে — উপরের সবাই আলো পায়, তাদের গা দিয়ে তেল গড়িয়ে পড়ে।’  

এই সর্বহারাদের স্বপ্নের সমাজ গড়েছিলেন তিনি, আমাদের লেনিন। তবে অবিরত ঘূর্ণমান কালচক্রে নতুন সমাজও পুরনো হয়ে গেল, পুঁজিবাদের ক্রমশ নিজেকে পাল্টে নেওয়ার খেলা সে ধরতে পারেনি। তাই সে আজ পুরনো হয়ে গেছে, অস্ত যাওয়া সূর্যের ক্ষীণ ম্লান আভা সমাজবাদের আকাশময় — এক গভীর বিষণ্ণতায় মগ্ন। কলকাতাও কি ভুলল লেনিনকে? সে কি তিলোত্তমা হবার স্বপ্নে ভুলল তার সব-হারাদের? প্রশ্নটা সহজ, তবে উত্তরটা জানা নেই এখনও। ভালো লাগে এই উচ্ছল শহরে এই মাঘ মাসে এসেছেন চে গ্যেভারার কন্যা, তাঁকে দেখতে সহস্র মানুষের ভিড়। ভালো লাগে, ছাত্র-যৌবনের অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন, সাবধানে আঁধারে পথ হাঁটো সাথী, নিশি কেটে যাবে হবে ভোর ! প্রভাতের লাল সূর্যের আশায় কেউ কেউ এখনও জপছেন মন্ত্র, ওঁ জবাকুসুম সঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্ …। ভালো লাগে এখনও কেউ কেউ আবৃত্তি করতে চান সেই অকপট কবিতা — লেনিন ভূমিষ্ঠ রক্তে, ক্লীবতার কাছে নেই ঋণ, / বিপ্লব স্পন্দিত বুকে মনে হয় আমিই লেনিন।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Narendra Modi | Nitin Gadkari | মোদির বিকল্প কে ?নীতিন গড়করিকে চায় সঙ্ঘ ?
00:00
Video thumbnail
TMC | CPIM | রামধাক্কা ! ৪০ বছর দল করেছেন, এবার সিপিএম থেকে তৃণমূলে
00:00
Video thumbnail
WB BJP By Election | বাংলার চার উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী কারা? এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট
08:44:16
Video thumbnail
NEET UG 2024 | ৩০ লক্ষ দিলেই হাতে NEET-এর প্রশ্ন, বিরাট পর্দাফাঁস তদন্তে
08:03:06
Video thumbnail
EVM | Rahul Gandhi | EVM হ্যাকিং? FIR হতে চলেছে? দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
05:37:01
Video thumbnail
Lok Sabha Election 2024 | লোকসভা ভোটে EVM জালিয়াতি? কেন ট্য়ুইট রাহুলের?
08:17:35
Video thumbnail
Yusuf Pathan | ইউসুফ পাঠানকে নোটিস গুজরাতের, পুরসভার বিজেপির হারের বদলা?
06:37:21
Video thumbnail
Weather Update | কলকাতায় ধেয়ে আসছে বর্ষা, কত ঘণ্টার অপেক্ষা?
06:51:05
Video thumbnail
Maharashtra | NDA | মহারাষ্ট্রে আবার খেলা শুরু? NDA ছাড়বেন অজিত? টানটান মোড় মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে
08:08:26
Video thumbnail
Adhir Ranjan Chowdhury | তবে কি ইস্তফাই দিলেন অধীর? জানা গেল কীভাবে?
05:44:51