নয়াদিল্লি: মেডিক্যাল দুর্নীতি মামলায় পরবর্তী শুনানি সোমবার, আপাতত সিবিআই তদন্ত নয়
মেডিক্যালে ভর্তি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) সমস্ত বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) । বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Gangopadhyay) একক বেঞ্চ এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের (Justice Saumen Sen) ডিভিশন বেঞ্চ যা যা নির্দেশ দিয়েছিল, সবের উপরই স্থগিতাদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালতের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি। এর ফলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া সিবিআই তদন্তের নির্দেশও সোমবার পর্যন্ত কার্যকর করা যাবে না। রাজ্য সরকার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের বিরুদ্ধে মামলা বা এসএলপি করার আবেদন জানিয়েছে শনিবার। সুপ্রিম কোর্ট তাও মঞ্জুর করেছে। রাজ্য সরকার এবং মূল মামলাকারীকে নোটিস দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
মেডিক্যালে ভর্তির ক্ষেত্রে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দেখিয়ে সংরক্ষিত আসনে অনেক জেনারেল ক্যাটাগরির পড়ুয়া ভর্তি হন বলে অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে মামলা হয়। সেই মামলাতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay) সিবিআই তদন্তের (CBI Investigation) নির্দেশ দেন এবং এফআইআর করতে বলেন সিবিআইকে। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। ওই বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের উপর মৌখিক স্থগিতাদেশ দেয়। পরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের এজিকে লিখিত নির্দেশ দেখাতে বললে তিনি তা দেখাতে পারেননি বুধবার। বৃহস্পতিবার ডিভিশন বেঞ্চ লিখিত স্থগিতাদেশ দেয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ওই নির্দেশ অবৈধ।
আরও পড়ুন:বিহারে আচমকা জেলাশাসকদের রদবদল, জল্পনা বাড়ালেন নীতিশ
পরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে বসে বিচারপতি সেনের (Justice Saumen Sen) বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে বলেন, তিনি কোনও একটি রাজনৈতিক দলের স্বার্থ দেখছেন। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) আর এক বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে নিজের চেম্বারে ডেকে বিচারপতি যে সব কথা বলেছিলেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সে সবেরও উল্লেখ করেন। তাঁর সঙ্গে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তেরও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে বলেন, আপনি কার পদলেহন করে আবারও এজি হয়েছেন, আমি জানি। পাল্টা এজি অভিযোগ করেন, আপনাকে বিজেপি ভোটের টিকিট দিতে চেয়েছেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রেখে ২৪ এবং ২৫ জানুয়ারি মেডিক্যালে ভর্তি মামলার যাবতীয় ঘটনাবলি তাঁর রায়ে উল্লেখ করেন। সেই রায় হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বিচারপতি সেনের ইম্পিচমেন্ট হবে না কেন, সেই প্রশ্নও তোলেন।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) দুই বিচারপতির এই নজিরবিহীন সংঘাত নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে। পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয়। শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় শুনানি শুরু হয়। বেঞ্চে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূ়ড়, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সূর্য কান্ত। তিনি অবশ্য এদিন ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন। রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন কপিল সিব্বল এবং অভিষেক মনু সিংভি। কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা ডিভিশন বেঞ্চের আবেদনের ভিত্তিতে বক্তব্য জানাতে চায়। আদালত তাতে অনুমোদন দিয়েছে।
আরও অন্য খবর দেখুন