কলকাতা: পুজোর আগেই পুরোদমে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ আগামী ৮ সেপ্টেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের ব্লক ও বুথস্তরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক সভা ডাকা হয়েছে৷ তৃণমূল অন্দরের খবর, এই সভা থেকেই আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করার বার্তা দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনের পর ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এটাই দলের বৃহত্তম কর্মী সম্মেলন হতে চলেছে। জানা গিয়েছে, রাজ্যের পুর-এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বকে এই সম্মেলনে ডাকা হচ্ছে না। রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল ব্লক সভাপতিদের পাশাপাশি অন্তত ১৭ হাজার প্রতিনিধিকে এই সভায় আসতে বলা হয়েছে৷ একইসঙ্গে থাকতে বলা হয়েছে পঞ্চায়েত এলাকায় দলের যুব, মহিলা, ছাত্র, শ্রমিক সংগঠনের ব্লক নেতৃত্বকেও৷
ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস একাধিক সাংগঠনিক জেলার ব্লকস্তরে নেতৃত্বের রদবদল ঘটিয়েছে৷ বদল ঘটেছে শাখা সংগঠনেও৷ বাকি আছে হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাংগঠনিক রদবদল৷ শোনা যাচ্ছে পুজোর আগেই রাজ্যের সবক’টি সাংগঠনিক জেলায় নতুন কমিটি ঘোষণা হয়ে যাবে৷ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক জেলার নবগঠিত কমিটির সঙ্গে বেশ কয়েকদফা বৈঠকও সেরে ফেলেছেন৷ বিশদে বুঝিয়েছেন আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে দলের নেতা-কর্মীদের ঠিক কী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে৷ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণ রাখতে হবে৷ কোথাও কোনও হিংসার ঘটনা ঘটবে না৷ বিরোধীদের মনোনয়ন দাখিলে বাধা দেওয়া চলবে না৷
পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে অবাধ ও সুষ্ঠ৷ ‘দাদা’ ধরে দলের প্রার্থী হওয়া যে চলবে না, সে কথাও বুঝিয়েছেন অভিষেক৷ দলের একাধিক প্রবীণ নেতার ধারনা, নেতাজি ইন্ডোরে সেই বার্তাই দেবেন মমতা ও অভিষেক৷ এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, সেই বার্তাও দিতে পারেন দলনেত্রী ৷
পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কত শতাংশ মহিলা বা সংখ্যালঘু প্রার্থী দিতে হবে, তার পরামর্শও দিতে পারেন শীর্ষ দুই নেতা-নেত্রী৷ দলের একাধিক প্রথম সারির নেতাদের ধারনা, ৮ তারিখের বৈঠকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের প্রচারের অভিমুখ স্থির করে দিতে পারেন মমতা-অভিষেক৷ শাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের পঞ্চায়েতস্তরে তৃণমূল সরকার কী কী উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করেছে, তা অনেকেরই অজানা৷ বিরোধীদের মিথ্যা প্রচারে একাধিক প্রকল্প নিয়ে বিভ্রান্তিও দেখা দিয়েছে৷ পঞ্চায়েত প্রচারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েই তুলে ধরতে হবে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা গ্রামের মানুষ কতখানি পেয়েছেন, এই নির্দেশও নেত্রী দিতে পারেন৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় নেতা-কর্মীদের দিশা দেখাতেই পুজোর আগে বৃহত্তম এই কর্মীসভার আয়োজন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷