দার্জিলিং: দার্জিলিং (Darjeeling) পাহাড়ে পর্যটনের জোয়ার। দার্জিলিং চিরকালই পর্যটকদের (Tourist) কাছে অত্যন্ত প্রিয় জায়গা। শৈলশহরে সারাবছরই পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। তবে পর্যটন মরশুম বলতে এপ্রিল থেকে মে মাস এবং নম্ভেবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত থাকে। এছাড়া বছরের অন্যান্য মাসগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে পর্যটকদের আনাগোনা হয়। মূলত কাঞ্চনজঙ্ঘা (Kangchenjunga), টয় ট্রেন (Darjeeling Himalayan Railway) ও চা বাগানের (Darjeeling Tea Garden) জন্য দার্জিলিং পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয় স্থান।
ক্রমাগত রাজনৈতিক অশান্তি ও চলতে থাকা বন্ধের জন্য একসময় পর্যটকেরা দার্জিলিংয়ে যাওয়া প্রায় বন্ধও করে দিয়েছিল। পাহাড়ে ঘোড়ার জন্য পর্যটকরা দার্জিলিঙয়ের পরিবর্তে বেছে নিয়েছিল সিকিমকে। কিন্তু সময় বদলেছে ধীরে ধীরে। শান্ত হয়েছে পাহাড়। শেষমেষ রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পাহাড়ে অশান্তি কমেছে এবং বনধ প্রায় উঠেই গিয়েছে। এতে খুশি পাহাড়ের সাধারণ মানুষ থেকে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকল প্রকারের ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: HS Exam 2023 | উচ্চ মাধ্যমিকে নেতাজিকে নিয়ে প্রবন্ধ রচনার প্রশ্নে তথ্য বিভ্রাট
পাহাড়ে টানে ফের পর্যটকেরা দার্জিলিংয় আসা শুরু করেছে। বহুদিন বাদে পাহাড় এতটাই শান্ত যে পাহাড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে এখন সিকিম নয়, দার্জিলিংই পর্যটকদের প্রথম পছন্দের জায়গা। এপ্রিল-মে বা নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস, এখন শুধু পর্যটন মৌসুম নয়। এখন সারা বছরই পর্যটকেরা ভরে থাকছে দার্জিলিং শহরে। এমন অবস্থা দার্জিলিংয়ের হোটেলগুলিতে সামনের অগাস্ট মাস পর্যন্ত
সমস্ত রুমগুলিই মোটামুটিভাবে বুক হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত গাড়িচালক থেকে শুরু করে হোটেল মালিক, প্রত্যেকে খুশি। বহুদিন বাদে পর্যটনের এমন জোয়ার আসাতে ব্যাবসায় ভালে লাভ হবে বলেই আসা তাঁদের। অনেকদিন বাদে অশান্তি ও বনধ ভুলে পাহাড় এখন সত্যিই হাসছে।
আগামী ১ মার্চ ২০২৩ থেকে ৩০শে জুন ২০২৪ পর্যন্ত দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে চারটি স্পেশাল জয়রাইড চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিটি জয়রাইডেই একটি অতিরিক্ত ফার্স্ট ক্লাস কোচ সংযোজন করা হবে। টয়ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি থেকে চললেও পর্যটকরা মূলত দার্জিলিং থেকে ঘুম হয়ে আবার দার্জিলিং ফেরা পর্যন্ত জয়রাইডগুলোই ইদানীং বেশি পছন্দ করছে । সেই কারণে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের যাত্রী-সংখ্যা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। কম যাত্রীর জন্য ১ মার্চ থেকে ১০ জুলাই নিউ জলপাইগুড়ি-দার্জিলিংয়ের মধ্যে একটি এসি স্পেশাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
করোনার পর থেকে টয়ট্রেনের মাধ্যমে রেলের রোজগারও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। টয়ট্রেনকে দেশী বিদেশি পর্যটকদের কাছে আরও জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে একে ঘিরে একের পর এক বিভিন্ন পরিকল্পনা সফল হওয়ায় ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা ধরে রাখতে আর কোন সংশয়ই থাকছে না রেল কর্তৃপক্ষের।