কলকাতা: ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ (Cyclone Remal)। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ২৬ মে, রবিবার রাত ১১ টা থেকে ১ টার মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে রেমাল। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আবারও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়তে চলেছে সমগ্র সুন্দরবনবাসী। ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে সতর্কবার্তা জারী করা হয়েছে জেলা জুড়ে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবারও বিগত ২০০৯ সালের ২৫ মে আয়লার (Cyclone Aila) স্মৃতি ফিরতে চলেছে।
২০২০ সালের ২০ মে আম্ফান ও ২০২১ সালের ২৬ মে ইয়াস বিধ্বংসী রূপ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল দুই ২৪ পরগনার অন্তর্গত সুন্দরবন উপকূলবর্তী এলাকায় (Sundarban Coastal Area)। ২০০৯ সালে প্রায় ২৫ মে পশ্চিমবঙ্গ সহ বাংলাদেশ উপকূলে তীব্র গতিতে আছড়ে পড়েছিল ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ‘আয়লা’। বছরে বছরে হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় গুলির ধাক্কায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকে শুরু করে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটেছিল সমগ্র সুন্দরবন সহ এরাজ্যে। ‘রেমাল’ আসার খবরে সেই আতঙ্ক যেন আবারও আতঙ্ক গ্রাস করেছে উপকূলবাসীদের মনে।
মৌসুম ভবন সূত্রে খবর, বাংলাদেশেই ল্যান্ডফল হওয়ার সম্ভাবনা ঘূর্ণিঝড় রেমালের। বাংলাদেশের মংলার কাছাকাছি রবিবার মাঝরাতে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। মংলা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এর ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা প্রবল। ল্যান্ডফলের সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ১১০ থেকে ১২০, সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ৷ ‘রেমাল’-এর প্রভাবে রবি ও সোমবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার জেরে দুর্যোগ তৈরি হতে পারে। রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোথাও কোথাও দমকা হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটারে পৌঁছনোর সম্ভাবনা আছে। উত্তর ২৪ পরগনাতে ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার, কলকাতা ও পূর্ব মেদিনীপুরে ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
আরও পড়ুন: শক্তি বাড়াচ্ছে ‘রেমাল’, জারি লাল সতর্কতা
রেমাল যে সুন্দরবনের উপর তান্ডব চালাতে পারে সে কারণে ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। মৎস্যজীবিদের গভীর সমুদ্র থেকে দ্রুত ফিরে আসতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে ঘূর্ণিঝড় রেমাল নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধ, শুকনো খাবার, পানীয়জল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা টিমকে। প্রতিটা ব্লকে ১২টি করে জাতীয় মোকাবেলা দল প্রস্তুত রয়েছে। সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ এলাকায় বাড়তি নজর রয়েছে সেচ, বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য দফতরের। ৫০ হাজার পানীয় জলের প্যাকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকা থেকে ত্রাণ শিবিরে ইতিমধ্যেই কিছু মানুষকে সরানো হয়েছে।
দেখুন বিস্তারিত