কলকাতা: আধাসামরিক বাহিনীর দাবিতে অনড় রইলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রয়োজনে আগামী সপ্তাহ থেকে রাস্তায় নেমে আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট কী রায় দেয়, আপাতত তারই অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানালেন।
পুরভোটের নিরাপত্তা নিয়ে মঙ্গলবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে একটি রিপোর্ট দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, কমিশনের পাঠানো রিপোর্টে সন্তুষ্ট নন রাজ্যপাল। আবারও রিপোর্ট তলব করেছেন ধনখড়।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার পাঠানো রিপোর্ট উল্লেখ করে, কলকাতা পুরভোটে আপাতত কেন্দ্রীয় বাহিনীর দরকার নেই। কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ দিয়ে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট হবে। কোথায় কত পুলিশ মোতায়েন থাকবে তার বিশদও জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিটি বুথে ২ জন করে সশস্ত্র পুলিস থাকবে। থাকবে ফ্লাইং পুলিস স্কোয়াডও। ২৫ শতাংশ বুথে ভিডিয়োগ্রাফির কথাও জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের সাথে বিজেপির প্রতিনিধি দল দেখা করবার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন বিরোধী দলনেতা @SuvenduWB pic.twitter.com/haUt42vw9g
— BJP West Bengal (@BJP4Bengal) December 7, 2021
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, ‘রাজ্য পুলিস তৃণমূল কংগ্রেসের দলদাসে পরিণত হয়েছে। ফলে, রাজ্য পুলিস দিয়ে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট সম্ভব নয়।‘
ভোট পরবর্তী হিংসার উল্লেখ করে বলেন, ‘একুশের ভোট পরবর্তী হিংসা বিশ্ব নিন্দিত। কোরিয়াকেও হার মানাবে। শুধু কলকাতাতেই কয়েক হাজার বিজেপি কর্মী এখনও ঘরছাড়া। শাসকদলের হুমকিতে তিন প্রার্থীকে মনোনয়নও প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে। এই অবস্থায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ভোট করতে হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী দরকার। সেইসঙ্গে ভিভিপ্যাটও থাকতে হবে।‘ বঙ্গ বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার রাজভবনে গিয়ে ভিভিপ্যাটের দাবিও জানিয়ে এসেছে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রশ্নে রাজ্যপাল ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকেই বিপরীত মেরুতে। রাজ্যপাল পুরভোটে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কমিশনের উপর চাপ সৃষ্টি করলেও কমিশন কিন্তু অনড়ই। যে কারণ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির মনে হয়েছে, কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট। রাজ্যপালের কাছেও এ নিয়ে তারা নালিশ করেছে।
শুভেন্দু এদিন জানান, পুরভোট সংক্রান্ত মামলায় শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট কী রায় দেয়, তা তাঁরা দেখবেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়ার পক্ষে সওয়ালে আগরতলা মামলার সুপ্রিম রায়েরও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে দাবি আদায়ে পথে নেমে আন্দোলন করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের জবাবে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, আগরতলা পুরভোটে আমরা যখন কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিলাম, বিজেপি কেন তখন বিরোধিতা করেছিল? কুণালের কথায়, ‘রাজ্য বিধানসভা ভোট তো কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই হয়েছে। বিজেপি বরং রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে শান্তিবাহিনী এনে ভোট করাক।’
আরও পড়ুন-আপাতত কেন্দ্রীয় বাহিনীর দরকার নেই, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে জানাল কমিশন
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কেও একহাত নিয়েছেন কুণাল ঘোষ। বলেন, ‘উনি অশুভ শক্তির পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। জনবিচ্ছিন্ন নেতাদের হয়ে কথা বলছেন। পুরভোটে হারবে বলেই বিজেপি এসব অজুহাত দিচ্ছে।’
শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য বলেছেন, ‘তৃণমূলকে ফাঁকা মাঠে আমরা গোল দিতে দেব না। শাসকদলের কিছু নেতা কটাক্ষ করেছিলেন, বিজেপি সব আসনে প্রার্থী দিতে পারবে না। আমরা তা দিয়ে দেখিয়েছি। আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে ভোটের লড়াইও চলবে। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও প্রচার করব।‘