পূর্ব বর্ধমান: কেউ টোটো চালক। কেউ সবজি বিক্রেতা। আবার কেউবা পরিচারিকা। এরা কেউই কিন্তু এই পেশার নন। সকলেই পরিচিত যাত্রা শিল্পী হিসাবে। কলকাতার নামী দামী দল থেকে স্থানীয় বিভিন্ন যাত্রাদলের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন তাঁরা। আজ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পেটের দায়ে বেছে নিয়েছেন এইসব কাজকে। পূর্ব বর্ধমান জেলার ঘটনা।
আরও পড়ুন: পেগাসাস ইস্যুতে অভিষেকের নেতৃত্বে সংসদে প্রতিবাদ তৃণমূল সাংসদদের
যাত্রা, বাংলার সুপ্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করে। কিন্তু সিনেমা আসার পর থেকে ক্রমশই তা কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। পিছোতে পিছোতে হারিয়ে যেতে বসেছে এই পেশা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে যাত্রা শিল্পের একের পর এক দলের কার্যালয়। সেখানে যে ছবি উঠে এল তা কিন্তু মোটেও সুখের নয়।
আরও পড়ুন: বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট জলপাইগুড়িতে, প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পঞ্চায়েতের
ফাল্গুন, চৈত্র, বৈশাখ, জৈষ্ঠ এই চারটি মাস যাত্রাদলগুলির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই চার মাসে যাত্রাদলগুলি বহু পালা করে থাকে বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে। বুকিং শুরু হয়ে যায় আরো অনেক আগে থেকে। কিন্তু করোনা আবহে বাতিল হয়ে গিয়েছে সব পালা। শ্রাবণ মাসেও বায়না নেই বর্ধমানের দলগুলির। গ্রামে-গঞ্জের বিভিন্ন সংস্থা, ক্লাব কর্তৃপক্ষকে ফেরত দিতে হচ্ছে যাত্রার জন্য নেওয়া বায়নার টাকা। বড় যাত্রাদলগুলি তবু কিছুটা পালা করতে পারলেও, ছোট দলগুলি ২০ টারও বেশি পালা করতে পারেনি চলতি বছরে। রোজগার না থাকায় প্রযোজকরাও এখন আর টাকা দিতে চাইছেন না কর্মীদের।
আরও পড়ুন: অলিম্পিক শুরু হতেই জাপানে বাড়ল করোনা সংক্রমণের হার
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যাত্রাপালার সঙ্গে যুক্ত দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা কর্মীদের। অনামী শিল্পী, মিউজিক-লাইট বয়, যাত্রাদলগুলির ম্যানেজারের অবস্থা শোচনীয়। যাত্রাদলগুলির সঙ্গে যুক্ত সাধারণ মানুষ থেকে কর্মচারী বেশিরভাগই গ্রাম থেকে আসেন কাজ করতে। গ্রামে ফিরে গেলেও অনেকেই অর্থকষ্টে ভুগছেন। যেন অন্ধকারে চলে গেছে যাত্রা শিল্প। এ থেকে আবারও আগের অবস্থা ফিরে পাবে কি না এই শিল্প তা জানে না কেউই।