একে ওমিক্রন, অন্যদিকে লকডাউনের আতঙ্ক।পরিস্থিতিতে দিশেহারা টেলিপাড়া। টালিগঞ্জে এর প্রায় কয়েকহাজার শিল্পী, কলাকুশলী জড়িয়ে আছেন এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে।দীর্ঘদিন বাদে আবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছিলো সবকিছু।সিরিয়াল এর শুটিং আবারও নিজের ছন্দে ফিরে আসছিলো। ঠিক এর মধ্যেই আবার তৃতীয় ঢেউ এর ধাক্কা। আগামী দিনে আবার কিভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে সেই আতঙ্কেই ভুগছেন সকলে।বেশিরভাগ সিরিয়াল এর শুটিং ইউনিট জানাচ্ছে যে হাতে মাত্র কয়েকদিনের ব্যাঙ্কিং রয়েছে। এর মধ্যেই বিধিনিষেধ এর গেরো। ফলে পরিস্থিতি রীতিমতো আশংকাজনক। একদিকে মারাত্মক আতঙ্ক কখন কে কিভাবে সংক্রমিত হন এবং ১৪ দিনের নিভৃতবাসে চলে যাবেন। সেই সময়ে শুটিং কি ভাবে হবে কেউ জানে না. অন্যদিকে আতঙ্ক যে আবার লকডাউন ফিরে আসছে না তো? সেক্ষেত্রে কতদিনের ব্যাঙ্কিং করে রাখা উচিত? এই ব্যাঙ্কিং এর জন্য অতিরিক্ত শুটিং তাই বা কখন, কিভাবে হবে? দিনের কাজটা তুলতেই দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে বিকেল হলেই বাড়ি ফেরার তাড়া।এর মধ্যেই রয়েছে নিত্যদিন বারংবার জীবাণুনাশক দেওয়ার ঝকমারি। কেউ কারোর কাছে আসতেই ভয় পাচ্ছে।
একটি জনপ্রিয় সিরিয়ালের এক কুশলী জানালেন যে ফেডারেশন বা আর্টিস্ট ফোরাম থেকে নির্দিষ্টভাবে কিছু অভয়বাণী আসার প্রয়োজন। এই ভয়াবহ আতঙ্ক নিয়ে কাজ করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।অন্য একটি সিরিয়াল এর এক কেন্দ্রীয় চরিত্র জানালেন যে স্টুডিওতে ঢুকতেই ভয় লাগছে. আলাদা ঘরে সারাক্ষন মাস্ক পরে বসে থাকতে হচ্ছে। কাগজের কাপ এ চা খেতে হচ্ছে। বাড়ি থেকে আনা দুপুরের খাবার খাচ্ছি কাগজের থালায়। ঘন্টায় ঘন্টায় স্যানিটাইজার দিয়ে হাত মুখ ধোয়া, টয়লেট যাবার কোনো প্রশ্নই নেই. সেই রাতের বেলায় বাড়ি গিয়ে টয়লেট করা. এভাবে কতদিন সুস্থভাবে কাজ করতে পারবো জানি না. এর পরে যদি ব্যাঙ্কিং এর জন্য অতিরিক্ত সময় শুটিং এ থাকতে হয় তবে করোনা না হোক, অন্য রোগ নিশ্চিত।
এই সমস্যার সমাধান কারোর কাছেই নেই। আরও ভয়ঙ্কর বিপদ হবে যদি অনির্দিষ্টকালের জন্য শুটিং বন্ধ হয়ে যায়। একটা সিনেমার শুটিং পেছনো সম্ভব, কিন্তু সিরিয়াল এর শুটিং এর ছেদ পড়লে পুরো সিস্টেমটাই ঘেটে যায়।রুপোলি পর্দার পেছনের মানুষগুলোর এই অন্ধকার দিনগুলো কবে যে আবার আলোয় ঝলমলিয়ে উঠবে তা কেবল সময়ই জানে।