skip to content
Friday, July 5, 2024

skip to content
HomeকলকাতাCalcutta Medical College: নার্সিংহোমে ভর্তির নাম করে হাসপাতালের কর্মীকে প্রতারণার অভিযোগ নির্মল...

Calcutta Medical College: নার্সিংহোমে ভর্তির নাম করে হাসপাতালের কর্মীকে প্রতারণার অভিযোগ নির্মল মাজী ঘনিষ্ঠ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

Follow Us :

কলকাতা: চোখে মুখে তখনও আতঙ্ক। ফুটফুটে শিশুটার হাসি ভুলিয়ে দিচ্ছে ডাক্তারবাবুর সেই হুমকি (Doctor’s Threat)। আসলে তিনি যে মেডিক্যালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের (Nirmal Maji) ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক। প্রভাব, খ্যাতি, যশ, ক্ষমতায় তাঁর ধারেকাছে নেই রাজু মহেশ। পেশায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (Calcutta  Medical College) গ্রুপ-ডি কর্মী রাজু। চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক। স্ত্রী পুতুল হাজরা মহেশও ট্রেনি হিসেবে কাজ করেন। অন্তঃসত্ত্বা পুতুলকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালের প্রভাবশালী ডাক্তারবাবু রাজেশ বিশ্বাসের কাছে। যার নাম-যশ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।

মনে হয়েছিল, ঠিকঠাকই হচ্ছে চিকিৎসা। পুতুলের তখন সন্তান প্রসবের সময় এসে গিয়েছে। আসল চেহারা প্রকাশ্যে আনলেন চিকিৎসক রাজেশ। পুতুলের খুঁটিনাটি পরীক্ষার পর জানিয়েছিলেন, অবস্থা ভালো নয়। কলকাতা মেডিক্যালে প্রসব করাতে হলে সমস্যা হতে পারে। প্রাণনাশের আশঙ্কার থাকতে পারে। উপায়ও বাতলে দিয়েছিলেন নির্মল মাজী ঘনিষ্ঠ এই চিকিৎসক। লেডি ডাফরিন ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে সন্তান প্রসবের ‘পথ’ দেখিয়েছিলেন রাজেশ।

স্বল্পশিক্ষিত রাজুকে লেডি ডাফরিন হাসপাতাল বেসরকারি বলে বুঝিয়েছিলেন রাজেশ। সেখানে অপারেশন করাতে যে বিপুল খরচ। ‘উপায় বাতলানো’র সঙ্গে সঙ্গে বিপুল খরচের চিন্তা রাজুর মাথায় চাপিয়েছিলনে এই অভিযুক্ত চিকিৎসক। যা শুনে মেডিক্যালের অস্থায়ী কর্মী রাজুর মাথায় বাজ পড়ার অবস্থা। তখন আবার সাহায্যের প্রস্তাবও দেন এই ‘দুমুখো’ চিকিৎসক। বলেন, নির্মল মাজীর সঙ্গে কথা বলবেন। যতটা কমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়, তা করছেন তিনি।

অভিযোগকারী রাজু মহেশ

আরও পড়ুন: IMA President Election: আইএমএ-র বিতর্কিত ভোটে জয়ী নির্মলই

কথা বলেন। রাজুর কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নেন রাজেশ। সময় আরও এগিয়ে আসে রাজুর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পুতুলের। লেডি ডাফরিনে ভর্তি করতে গিয়ে রাজু জানতে পারেন, এটি কোনও বেসরকারি হাসপাতাল নয়। সরকারি হাসপাতাল। এখানে সন্তান প্রসবের জন্য কোনও টাকা লাগে না। রাজুর সামনে স্পষ্ট হয়ে যায়, চিকিৎসকের মোড়কে থাকা রাজেশ বিশ্বাস আসলে একজন ‘প্রতারক’। নার্সিংহোমের মিথ্যে তত্ত্ব খাড়া করে ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সে। গত ১৯ মার্চের সেই স্মৃতি এখনও জ্বলজ্বল করছে রাজুর মনে।

গত বুধবার লেডি ডাফরিনে স্ত্রীকে ভর্তি করেছিলেন রাজু। হাসপাতালের চিকিৎসক মালবিকার কাছে সব শুনে বুঝেছিলেন, ১৯ তারিখ নার্সিংহোমের নাম করে রাজেশ বিশ্বাস কীভাবে ঠকিয়েছেন তাঁকে। তখনই মালবিকাকে রাজু বলেন, ‘আমি আর রাজেশ বিশ্বাসকে বিশ্বাস করি না। উনি একজন প্রতারক। আমার স্ত্রীর অপারেশন যেন উনি না করেন। সেদিন সন্ধেতেই রাজেশের মুখোমুখি হন রাজু। রাজুকে দেখেই বাঘনখ বেরিয়ে আসে রাজেশের। হুমকি দিতে শুরু করেন। কীভাবে চাকরি করবেন রাজু, তা দেখে নেবেন বলেও হুমকি দেন ওই চিকিৎসক। প্রাণনাশের হুমকিও দেন। আতঙ্কিত রাজু তার পরই মুচিপাড়া থানার অভিযোগ করেন ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এফআইআর দায়ের হয়েছে। কিন্তু বুধবার রাতের সেই হুমকি এখনও ভুলতে পারছেন না কলকাতা মেডিক্যালের গ্রুপ ডি-র এই কর্মী।

নির্মল মাজীর সঙ্গে অভিযুক্ত চিকিৎসক রাজেশ বিশ্বাস

হাসপাতালে নির্মল মাজীর প্রভাব সকলেই জানেন। চিকিৎসক রাজেশ বিশ্বাসের প্রভাবও জানা। চিকিৎসক রাজেশ বিশ্বাসের সঙ্গে একাধিক অনুষ্ঠানে হাস্যবদনে দেখা গিয়েছে নির্মলকে। নিজের প্রভাব-ক্ষমতা দেখিয়ে যে হুমকি-ধাপ্পাবাজি রাজেশ করেছেন, তা চোখমুখে আতঙ্ক এনেছে মাঝবয়সী রাজেশের। স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারবেন তো! বোলতার চাকে ঢিল মারার মতনই ভয়ে রয়েছেন রাজু। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন, প্রতারিত হয়েছেন, সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে টাকা দিতে হয়েছে। চাকরিতেও থাবা বসাবে না তো রাজেশ? এমনই সব আতঙ্ক নিয়ে দু’দিনের শিশুকন্যার চোখের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন কলকাতা মেডিক্যালের গ্রুপ ডি-র কর্মী রাজু।

RELATED ARTICLES

Most Popular