কলকাতা: ক্ষমতার দম্ভে সাধুদের ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিলেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের এক মহারাজ। কাকদ্বীপে শুক্রবার সাধুসন্তদের এক পদযাত্রা হয়। পরে এক সভায় ৮ নম্বর লটের ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সোমনাথ মহারাজ বলেন, আমাদের ধমকে চমকে লাভ হবে না।
এদিন বাসন্তী ময়দান থেকে ৮ নম্বর লট পর্যন্ত পদযাত্রা করেন সাধুসন্তরা। প্রতিবাদ সভায় সোমনাথ মহারাজ বলেন, স্বামীজিরা সমাজ এবং মানবের কল্যাণে কাজ করেন। কোনও ধমকে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।
এদিনই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে উত্তর কলকাতায় বাগবাজারে মায়ের বাড়ি থেকে স্বামীজির ভিটে পর্যন্ত এক পদযাত্রা হয়। সেখানেও বহু সাধু পা মেলান। বিভিন্ন জেলাতেও সাধুসন্তরা তাঁদের মতো করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন। কোথাও পদযাত্রা, কোথাও সভা হয়।
আরও পড়ুন: রাজভবনের অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্তে স্থগিতাদেশ
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে এক নির্বাচনী সভায় মুখ্যমন্ত্রী ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, রামকৃষ্ণ মিশন, ইস্কনের নাম করে বলেন, এই সব প্রতিষ্ঠানের সাধুদের একাংশ রাজনীতি করছেন। সব সাধু সত হন না। আবার সব সাধু অসতও হন না। তিনি ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙা শাখার অধ্যক্ষ কার্তিক মহারাজের নাম উল্লেখ করে বলেন, তিনি ডাইরেক্ট রাজনীতি করছেন। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের এক সন্ন্যাসীর কথাও বলেন তিনি। পরে আরও একটি সভায় মমতা বলেন, আমি খবর না নিয়ে কিছু বলি না। সাহস থাকলে খোলাখুলি বিজেপি করুন। তাঁর অভিযোগ, ওই মহারাজ বেলডাঙায় একটি বুথে তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেননি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি এই সব প্রতিষ্ঠানকে ভালোবাসি। তাদের সঙ্গে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক। কিন্তু কিছু কিছু সাধু রাজনীতি করছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় সাধুসন্তদের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় এসে নির্বাচনী সভায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু সাধুদের ধমক দিচ্ছেন। এটা দেশের মানুষ মেনে নেবে না। রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, আমরা স্বামীজির আদর্শ মেনে চলি। আমরা রাজনীতি থেকে অনেক দূরে থাকি। এমনকী মিশনের সন্ন্যাসীরা ভোটও দেন না। তবে আমরা ভক্তদের এ ব্যাপারে কোনও পরামর্শ দিই না। রামকৃষ্ণ মিশন আধ্যাত্মিক এবং মানব সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। মানব সেবাই আমাদের একমাত্র কাজ।