কলকাতা: বিশ্বভারতী (Vishwabharati) কর্তৃপক্ষ (Authority) এখনও উদ্যোগ না নেওয়ায় বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প পৌষ মেলা করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার৷ আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে ছয় দিন চলবে মেলা। শুক্রবার বোলপুর মহকুমা শাসকের দফতরে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে পৌষমেলাকে কেন্দ্র করে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত অব্যাহত থাকল।
পৌষ আসতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরই ঐতিহ্যের পৌষমেলা শুরু হয়ে যায় প্রতি বছর। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমের শান্তিনিকেতনের সেই মেলার আয়োজন এখন দড়ি টানাটানিতে দোলাচলে। বিকল্প পৌষমেলায় রাজ্য সরকারকে সহযোগিতা করছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।
আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: অনুব্রতর ফের জেল হেফাজত ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত
এদিন বোলপুর মহকুমা শাসকের দফতরের সভাকক্ষে বিকল্প পৌষমেলা নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র-মাঝারি ও কুটির শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। ছিলেন মহকুমাশাসক অয়ন নাথ, বোলপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ প্রমুখ৷ এছাড়াও ছিলেন বোলপুর পুরসভার কাউন্সিলরা, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের প্রতিনিধিরা, শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরা, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার৷ এই বছর শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের তত্ত্বাবধানে হবে বিকল্প মেলাটি। সহযোগিতা করবে বোলপুর পুরসভা, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ, কবিগুরু হস্তশিল্প মার্কেট ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।
প্রসঙ্গত, ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় ২৪ ডিসেম্বর অর্থাৎ আট পৌষ বাজি পোড়ানোর রেওয়াজ ছিল৷ পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্তের দায়ের করা একটি মামলার প্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করে৷ মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিং বলেন, বাজি পোড়ানোর জন্য যা অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন সেগুলি নেওয়া হবে।
২০১৯ সালে শেষ বার পূর্বপল্লীর মাঠে হয়েছিল মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য মেলার আয়োজন সম্ভব হয়নি৷ ২০২১ সালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে সকলেই আশা করেছিল কোভিড বিধি মেনে ছোট করে হলেও ঐতিহ্য বাঁচাতে মেলা করবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, সে বছর মেলা না করায় বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প মেলা করেছিল বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ ও বোলপুর পুরসভা।
এই বছরও পৌষমেলা হবে, নাকি হবে না, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোন বিবৃতি দেয়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে মেলা করার বিষটি পুনর্বিবেচনা করে দেখতে বলেছে।