প্যানডেমিকের পরিবেশে ক্লাসরুম থেকে ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে পারি দেওয়াটা সহজ ছিল না তাঁদের অনেকের কাছে। তবে ছাত্রদের কথা ভেবে অসাধ্য সাধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এদিকে নিউ নর্মালে দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের সামনে থেকে, অনলাইনে ক্লাস নিতে গিয়ে চূড়ান্ত ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। হোমওয়ার্ক থেকে অ্যাসাইনমেন্ট চেক করা, সমস্ত কিছুই তো এখন অনলাইনে। বাড়ি থেকে কাজ করলেও বিশ্রামের সময়ে নিশ্চিত না করলে সমস্যা আরও বাড়বে। তাই অনলাইনে থাকার ফলে যে ক্লান্তি সৃষ্টি হচ্ছে (virtual fatigue), এটা কয়েকদিনের জন্য ঠিক আছে। কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে যাতে দীর্ঘস্থায়ী না হয়ে পড়ে। তাই এই পেশায় যাঁরা যুক্ত রয়েছেন, তাঁরা এই বিষয়গুলো মেনে চলুন। এমনিতেই অন্যান্য পেশার তুলনায় শিক্ষকতার ক্ষেত্রে এই ঘটনা একদম নতুন ও নজিরবিহীন।
সঠিক ‘হোম-অফিস’ পরিবেশ তৈরি করুন
টেবিলের উচ্চতা, স্ক্রিন থেকে আপনার দূরত্ব, সঠিক আলোর ব্যবস্থা নির্দিষ্ট করে নিন। এগুলিতে বার বার বদল হলে আপনার কাজ এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে সমস্যা হবে। পাশাপাশি অনলাইনে দীর্ঘক্ষণ বসতে সাহায্য করে এমন একটা চেয়ার বেছে নিন। এগুলি আপনার সুবিধেমতো গুছিয়ে নিলে কাজে সুবিধে হবে।
শুরু এবং শেষের সময়সীমা বেঁধে নিন
প্রত্যেক দিন ক্লাস শেষের পরে প্রয়োজনমতো বিশ্রাম নিন। ক্লান্ত চোখের আরামের প্রয়োজন। তাই ল্যাপটপ শুধুমাত্র ‘স্কোসড’ না-করে একেবারে ‘শাট ডাউন’ করে দিন। অতিরিক্ত কাজের চাপ অনেক অজানা বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই মন ও শরীরকে পর্যাপ্ত আরাম দিন। ক্লাসের শুরু এবং শেষের একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। সেই হিসেবে আপনার স্ক্রিন টাইমের সময়সীমা বেঁধ নিন।
বিনোদনের জন্য স্ক্রিনের সামনে সময় কাটানোর পরিবর্তে অন্য কিছু করুন
অবসর সময় ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বদলে গান শুনে, বই পড়ে কিংবা সামান্য কিছু শারীরিক কসরত করে সময় কাটান। এর ফলে দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের সামনে থাকার ফলে যে ক্লান্তি তৈরি হয়েছিল তার থেকে অনেকটাই আরাম পাবেন।
‘২০-২০-২০ রুল’ মেনে চলুন
অনলাইন থাকাকালীন প্রত্যেক ২০ মিনিট অন্তর স্ক্রিন ২০ ফিট দূরে ২০ সেকেন্ডের জন্য তাকিয়ে থাকুন। এটা আপনার চোখকে আরাম দেবে।
প্রতি ঘন্টায় একটু ‘স্ট্রেচ’ করে নিন
একটানা স্ক্রিনের সামনে থাকলে অনেক ক্ষেত্রে ঘাড়ে বা হাতে ব্যাথা হয়। তাই কাজের সময় প্রতি ঘন্টায় একবার করে ঘাড় এ পাশ থেকে ও পাশ করে নিন। হাতরে কবজি ও পা ঘুরিয়ে নিন। এবং সময় পেলে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান। এর ফলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে।
ভিডিও কলের পরিবর্তে কনফারেন্স কল করতে পারেন
টিম মিটিংয়ের সময়ে ভিডিও কলের বদলে কনফারেন্স কল করতে পারেন। এর ফলে স্ক্রিনের ক্ষতিকারক নীল রশ্মির থেকে কিছুক্ষণ দূরে থাকতে পারবেন।
কাজের জায়গা থেকে খাওয়ার জল দূরে রাখুন
কাজের জায়গা থেকে খাওয়ার জল দূরে রাখলে জল খেতে চেয়ার ছেড়ে উঠতে হবে। এর ফলে একটানা স্ক্রিন বা চেয়ারে বসার মাঝে কিছুটা হলেও রেহাই পাবেন।
প্রয়োজনে টাইমটেবিলে পরিবর্তন আনুন
অনলাইন ক্লাসের পরে আপনার বাদবাকি অনলাইন কাজের মাঝ ক্ষণিকের বিশ্রাম নিন। একটানা কাজ না করে, কীভাবে কাজের ফাঁকে বিরতি নেওয়া যায় সেই অনুযায়ী আপনার টাইমটেবিল নতুন করে গুছিয়ে নিন।
মেন্টাল হেলথের দিকে বিশেষ নজর দিন
একটানা এতক্ষণ স্ক্রিনের সামনে সময় কাটানোর ফলে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত হতে পারে। বিষয়টি তাই এড়িয়ে যাবেন না। প্রয়োজনে থেরাপিস্ট বা কাউন্সিলরের সাহায্য নিন।