চলতি মাসের ১৩ তারিখ রথযাত্রা। রথে চড়ে মন্দির থেকে বের হন জগন্নাথ (Jagannath Dev), বলভদ্র ও সুভদ্রা। গন্তব্য গুণ্ডিচা মন্দির। যা তাঁদের মাসি বাড়ি হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর রথ উপলক্ষে এখানে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্রের দর্শনের জন্য প্রচুর সংখ্যক ভক্ত সমাগম হয় পুরীতে।আষাঢ় মাসের দশমীর দিনে গুন্ডিচা মন্দির থেকে পুরীর মন্দিরে রথযাত্রা (Ratha Yatra) শুরু হয়। এটি উল্টো রথ নামে পরিচিত। জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রার সঙ্গে বেশ কয়েকটি চমকপ্রদ তথ্য জড়িত।
প্রতি বছর বসন্ত পঞ্চমীর দিনে দশপল্লার জঙ্গল থেকে কাঠ একত্রিত করা শুরু হয়। ২০০-র বেশি সেবায়েত মিলে বলরাম, সুভদ্রা ও জগন্নাথের জন্য তিনটি পৃথক রথ নির্মাণ করেন। রথযাত্রার জন্য প্রতি বছর নতুন রথ তৈরি করা হয়। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকেই রথের নির্মাণ শুরু হয়ে যায়। পুরাণ মতে জগন্নাথ প্রথমবার যখন পূর্ণিমার দিনে স্নান করেন, তখন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার পর ১৪ দিন একান্তবাসে থাকেন তিনি। এ সময় তাঁর চিকিৎসা করা হয়। পঞ্চদশ দিনে সুস্থ হয়ে সর্বসমখে আসেন জগন্নাথ। এরপর রথযাত্রার দিনে তিনটি আলাদা রথে সওয়ার হয়ে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরাম। রথযাত্রায় জগন্নাথ, সুভদ্রা, বলরামের তিনটি রথের আলাদা নাম রয়েছে। জগন্নাথের রথটির নাম নন্দীঘোষ, বলরামের রথটির নাম তালধ্বজ, সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন।
জগন্নাথের নন্দীঘোষের উচ্চতা ৪৫.৬ ফুট, বলরামের তালধ্বজ ৪৫ ফুট উঁচু এবং সুভদ্রার দর্পদলনের উচ্চতা ৪৪.৬ ফুট। এই সমস্ত রথ নিম কাঠ দিয়ে তৈরি, একে দারু বলা হয়। প্রত্যেকটি রথের আলাদা রংও রয়েছে। বিষ্ণু অবতারের কথা মাথায় রেখেই জগন্নাথের রথের রং করা হয় লাল-হলুদ। এই দুই রং আসলে বিষ্ণুর পছন্দের রং। বলরামের রথের রং লাল-সবুজ। অন্যদিকে, সুভদ্রার রথের রং লাল ও কালো। তিনটি রথের চাকার সংখ্যাও আলাদা। জগন্নাথের রথের চাকার সংখ্যা ১৬, বলরামের রথের চাকার সংখ্যা ১৪, সুভদ্রার রথের চাকার সংখ্যা ১২। তিনটি রথে ঘোড়ার আলাদা আলাদা নাম। জগন্নাথের রথের চারটি ঘোড়ার নাম শঙ্খ, বলহাকা, শ্বেতা, হরিদশ্ব। বলরামের চারটি ঘোড়ার নাম তীব্র, ঘোড়া, দীর্ঘশর্মা, স্বরনাভ। সুভদ্রার চারটি ঘোড়ার নাম রুচিকা, মোচিকা, জিতা ও অপরাজিত। জগন্নাথের রথের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় সাদা রঙের ঘোড়া, বলরামের রথের কালো রঙের ঘোড়া। সুভদ্রার রথে লাল ঘোড়া।