কলকাতা: ভারতের চার পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরের মধ্যে ওড়়িশার পুরীর জগন্নাথ মন্দির (Jagannath Temple) অন্যতম। প্রতি বছর আষাঢ় মাসে বিশাল রথযাত্রার (Rath Yatra) আয়োজন করা হয়। এ বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথি শুরু হচ্ছে ১৯ জুন সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে। ২০ জুন রাত ১টা ৭ মিনিটে সমাপ্তি হবে এই বিশেষ তিথির। উদয় তিথি অনুযায়ী, ২০জুন, মঙ্গলবার জগন্নাথ- সুভদ্রা -বলরামের (Jagannath-Suvadra-Balaram) রথযাত্রা বের করা হবে। রওনা দেবেন মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে। এরপর আষাঢ় শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে তিনজনকেই নিজ নিজ স্থানে ফিরিয়ে আনা হবে।
কেন ভাই-বোনকে নিয়ে রথযাত্রা করেন জগন্নাথ দেব, তার পেছনে নানা কাহিনি প্রচলিত আছে। এই সম্পর্কিত একটি বিশ্বাস অনুসারে, জগন্নাথ রথযাত্রার সময় ভগবান জগন্নাথ রথে চড়ে গুন্ডিচায় তাঁর মাসির বাড়িতে যান। গুন্ডিচা মন্দিরকে ভগবান জগন্নাথের মাসির বাড়ি বলে মনে করা হয়। এখানে ভগবান জগন্নাথ তার বোন সুভদ্রা এবং ভাই বলরামের সঙ্গে যান এবং পুরো এক সপ্তাহ থাকেন। সেখানে তাঁদের স্বাগত জানিয়ে নানা পুজো-অর্চনা ও আচার আচরণ পালন করা হয়।
আরও পড়ুন:Dev | Rukmini Maitra | হাতে দূরবীন, নাকে নাকছাবি, প্রকাশ্যে সত্যবতীর ফার্স্ট লুক
প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, মাসির বাড়ি গিয়ে নানা সুখাদ্য খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন জগন্নাথ দেব। সেখানে তখন তাঁকে ওষুধ ও পথ্য দেওয়া হয়। সেই সব খেয়ে সুস্থ হয়ে এক সপ্তাহ পরে ফের রথে করে জগন্নাথ মন্দিরে ফিরে আসেন তাঁরা। গুণ্ডিচা মন্দির থেকে জগন্নাথ মন্দিরে ফেরার এই যাত্রা হল উল্টোরথ। উল্লেখ্য, মাসির বাড়ি অর্থাৎ গুণ্ডিচা মন্দিরে থাকার সময় ভগবান জগন্নাথের দর্শনকে বলা হয় আদপ-দর্শন। এই দিনগুলিতে জগন্নাথকে নারকেল, মালপোয়া, লাই, গাজামুগ মিষ্টান্ন ইত্যাদির মহাপ্রসাদ দেওয়া হয়।
হিন্দুধর্মে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার রথযাত্রার বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। জগন্নাথ, অর্থাত্ জগতের নাথ যিনি। জগন্নাথ দেবকে শ্রীবিষ্ণুর অবতার শ্রীকৃষ্ণের আর এক রূপ বলে মনে করা হয়। স্কন্দ পুরাণ, নারদ পুরাণ, পদ্মা পুরাণ ও ব্রহ্মা পুরাণে জগন্নাথের রথযাত্রার উল্লেখ আছে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, রথের দড়িতে টান দিলে জ্ঞানে বা অজ্ঞানে করা সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে যায়। এছাড়া রথের দড়িতে টান দিলে জীবনের সব দুঃখ কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। একশো যজ্ঞ করার সমান পূণ্য লাভ করা যায় রথের দড়িতে টান দিয়ে।